সাগরিকায় ব্যাট হাতে যেন রানের ঢেউ তুলছেন অমিত হাসান। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যার পাড়ে বেড়ে ওঠা অমিত যেন উত্তাল সমুদ্রের স্রোত, নিমিষেই ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রতিপক্ষকে।
২৩ বছর বয়সী অমিত ২০১৯ থেকেই আছেন সিলেট বিভাগের দলে। চলতি জাতীয় ক্রিকেট লিগের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সে। ১১ ইনিংসে রান করেছেন ৭১৪, গড়টা প্রায় ৮০ ছুঁইছুঁই। অধিনায়ক হিসেবেও দ্যুতি ছড়াচ্ছেন তিনি। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিলেটকে জিতিয়ে ফেলেছে জাতীয় ক্রিকেট লিগও।
নিয়ম রক্ষার ম্যাচে তাই গত শনিবার বন্দর নগরী চট্টগ্রামে রাজশাহীর বিপক্ষে খেলতে নামে অমিতের সিলেট। মাত্র ২২৬ রানে গুটিয়ে ফেলে রাজশাহীকে। দিনের শেষভাগে দুই উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে সিলেট। পিনাক ঘোষকে নিয়ে গড়েন ৮৮ রানের জুটি। টেস্ট মেজাজে খেলা পিনাকের বিপরীতে বেশ সাবলীল ব্যাটিংই করেন অমিত।
পুরো ম্যাচে টাইমিং, প্রপার ফুটওর্য়াক আর শট সিলেকশনের প্রায় নির্ভুলই ছিলেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত ২৭ রানের মাথায় শফিকুলের গুড লেন্থের আউটসুইংটা বুঝে উঠতে পারেননি তিনি। ব্যাটার কানায় লেগে উইকেটকিপার আর প্রথম স্লিপের ফাঁক দিয়ে চলে যায় বলটি। এরপরে আর ভুল করেননি তিনি,তুলে নেন আরেকটি অর্ধশতক।
যদিও ইনিংসটা বড় করতে পারেননি তিনি, লাঞ্চ ব্রেকের আগে লাস্ট ওভারের প্রথম বলটাতেই উইকেট বিলিয়ে আসলেন তিনি। আসাদুজ্জামান পায়েলের শর্ট লেন্থের স্লোয়ার বলটা পুলই হয়ত করতে চেয়েছিলেন, টাইমিং না হওয়ায় ক্যাচ আউট হয়েই সাজঘরে ফিরে যেতে হয় তাকে।
কিন্তু রাজিন সালেহ, হাবিবুল বাশারদের সান্নিধ্যে যে নিজেকে লম্বা রেসের ঘোড়া হিসাবেই তৈরি করছেন তিনি তা সকালের সেশনসটা দেখলেই বোঝা যাবে। নতুন বলে একদমই অবিচল, অটল খুটিঁর মত দাঁড়িয়ে একপ্রান্ত থেকে রান করে গেছেন তিনি। ঠিক তার আইডল মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকের রহিমেরই প্রতিচ্ছবিই যেন ভেসে উঠে তার মধ্যে।
অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে অভিজ্ঞতা না থাকলেও জাতীয় দলের রাডারে যে তিনি আছেন তা বেশ ভালোই বোঝা যায়। ব্যাটের মোহনায় নিজেকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করান সেটিই এখন দেখার বিষয়, তবে আপাতত দৃষ্টিতে আগামী দিনের তারকা হবার পথেই আছেন তিনি তা নি:সন্দেহে বলাই যায়। ৩৫টা প্রথম শ্রেনির ম্যাচে ৫০ এর উপরে গড়ে ২৭০০ এরমত রানের পরিসংখ্যান অন্তত সেই ইঙ্গিতই দেয়।