সৌরভ নেত্রাভালকার, পাকিস্তানের ভারতীয় হন্তারক

প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, সুপার ওভার এবং সেই সাথে ইতিহাস গড়ার প্রত্যাশা – সবমিলিয়ে সৌরভ নেত্রাভালকার যখন বোলিংয়ে প্রান্তে গিয়েছিলেন তখন তাঁর মাথায় ছিল আকাশসম চাপ। কিন্তু সব চাপকে এক্সপ্রেস গতিতে উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তান বধ করলেন তিনি। স্নায়ুক্ষয়ী একটা ওভার শেষে নিজ হাতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট উপন্যাসে যোগ করলেন উজ্জ্বলতম অধ্যায়।

কেবল সুপার ওভারেই নয়, এর আগে মূল ম্যাচেও পাকিস্তানকে নাকানিচুবানি খাইয়েছেন তিনি এই পেসার। চার ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ১৮ রান খরচ করেছেন তিনি। বিনিময়ে তুলে নিয়েছেন দুই দুইটি উইকেট। টি-টোয়েন্টি খেলা পুরোটাই মোমেন্টাম নির্ভর, সেখানেই বাজিমাত করেছেন তিনি। দলকে রেখেছিলেন চালকের আসনে।

টসে জিতে বরাবরের মতই আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আমেরিকান অধিনায়ক, সেই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা প্রমাণে এই বাঁ-হাতির লেগেছিল মাত্র দুই বল। দুর্ধর্ষ একটা আউটসুইংয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেট তুলে নেন তিনি। পাওয়ার প্লের বাকিটা সময় তাঁকে কোন জবাবই দিতে পারেনি পাক ব্যাটাররা।

পুরোটা সময় নিয়ন্ত্রিত লাইন লেন্থে বল করে গিয়েছেন নেত্রাভালকার। বাবর আজমের মত ব্যাটারও খাবি খেয়েছেন তাঁর বিপক্ষে। পরিসংখ্যানেই ফুটে উঠেছে এমন দাপুটে পারফরম্যান্সের চিত্র। সীমানা দড়িতে মাত্র দু’জন ফিল্ডার রেখে তিন ওভার বল করেছেন তিনি অথচ রান দিয়েছেন স্রেফ আটটি, ডট বল করেছেন ১২টি, বাউন্ডারি হজম করতে হয়নি একটিও!

মুম্বাইয়ে জন্ম নেয়া এই ক্রিকেটার ভাগ্য বদলাতে এসেছিলেন মার্কিন মুল্লুকে। এরপর ক্লাব ক্রিকেট, মেজর লিগ পেরিয়ে খেলছেন দেশটির জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন। শুধু খেলছেন বললে ভুল হবে, রীতিমতো রাজ করছেন তিনি; বনে গিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী।  বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখা গিয়েছিল তাঁর কাছ থেকে।

পাকিস্তানের হারানোর পর বিশ্বকাপকে ঘিরে প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। বাড়তি প্রত্যাশা পূরণে এখন বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হবে সবাইকে, বিশেষ করে নেত্রাভালকারের মত পারফরমারদের হয়ে উঠতে হবে আরো ধারাবাহিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link