মুনিম ঝড় অব্যাহত

চোটের কারণে এখনো মাঠে নামা হয়নি লিটন দাসের। এই ওপেনারের পরিবর্তে শুরু থেকেই আবাহনীর একাদশে সুযোগ পেয়েছেন মুনিম শাহরিয়ার। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে না পেরে একাদশ থেকে বাদ পড়েছিলেন তিনি। তবে এক ম্যাচ পর ফিরেই দ্বিতীয় বার পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন দুই হাতে।

গতকাল ম্যাচ জয়ী ৯২ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস খেলার পর আজও ৪০ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলেছেন এই ওপেনার। আর শেষের দিকে ৪২ বলে ৬৫ রান করেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এই দুই জনের ঝড়ো ইনিংসে ভর করেই শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৪৯ রানের বড় ব্যববধানে হারিয়েছে আবাহনী।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের নবম রাউন্ডের বাকি দুই ম্যাচের একটিতে জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স আর বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে মোহামেডান ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের ম্যাচটি। নবম রাউন্ড শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে প্রাইম ব্যাংক এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আবাহনী।

নবম রাউন্ডের শেষ তিন ম্যাচেও দাপট দেখিয়েছেন বোলাররা। বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন মেহেদী হাসান রানা, মহিউদ্দীন তারেক ও আরাফাত সানি। বোলারদের দাপটের দিনে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন নাঈম শেখ, মুশফিকুর রহিম, ইমরুল কায়েস ও নাসির হোসেন।

তবে বড় জয় পেলেও টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা আবাহনীর শুরুটা ভালো হয়েছিল না। দলীয় ২৭ রানে ফিরে যান নাঈম শেখ। এর পর দ্বিতীয় উইকেটে মুনিম ও শান্তর ৮৮ রানের জুটিতে বড় রানের ভিত পায় আবাহনী। তিনটি ছয় ও নয়টি চারের সাহায্যে ৪০ বলে ৭৪ রান করে মুনিম ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি।

মুনিম ফিরে যাওয়ার পর রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান মুশফিকুর রহিম। তবে ১১৫ রানে ৩ উইকেট হারালেও রানের চাকা থেমে থাকেনি আবাহনীর। দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নেন শান্ত ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৬২ রান যোগ করেন দুজন।

মোসাদ্দেক ১৫ বলে ২৬ রান করে আউট হয়ে গেলেও ৪২ বলে ৬৫ রান করে অপরাজিত থাকেন শান্ত। ১৮.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান সংগ্রহ করার পর বৃষ্টি আসলে আর ব্যাট করতে নামেনি আবাহনী। বৃষ্টি আইনে শেখ জামালের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ ওভারে ১৪৭ রান।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মেহেদী হাসান রানার বোলিং তোপে শুরুটা মাত্র ৪৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে শেখ জামাল। শেষ পর্যন্ত আর ঘুঁড়ে দাঁড়াতে না পেরে ১৩ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৯৮ রান সংগ্রহ করে শেখ জামাল।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৩ বলে ২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ এনামুল এছাড়া নুরুল হাসান সোহান করেন ২২ রান। আবাহনীর পক্ষে মেহেদী হাসান রানা তিনটি ও আরাফাত সানি দুটি উইকেট শিকার করেন।

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে দিনের আরেক ম্যাচে পারটেক্সকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ। বৃষ্টি আইনে পারটেক্সের দেওয়া ৮ ওভারে ৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৫.৩ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌছে যায় গাজী গ্রুপ। ১৩ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন মেহেদী হাসান।

এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১০৯ রান সংগ্রহ করে পারটেক্স। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন হাসানুজ্জামান ও জয়রাজের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান। গাজী গ্রুপের পক্ষে তিনটি উইকেট শিকার করেন মহিউদ্দীন তারেক।

পরিত্যক্ত হওয়া মোহামেডান ও ব্রাদার্সের ম্যাচে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান সংগ্রহ করেছিল মোহামেডান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন আব্দুল মজিদ। এছাড়া মাহমুদুল হাসান করেন ২৮ রান ও ইরফান শুকুরের ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান। ব্রাদার্সের পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন আলাউদ্দিন বাবু এবং রাহাতুল ফেরদৌস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

  • মোহামেডান-ব্রাদার্স

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ১৪৩/৯ (ওভার: ২০; মজিদ- ৩৫, মাহমুদুল- ২৮, শুকুর- ১৯, শুভাগত- ১৫) (বাবু- ৪-০-২৭-২, রাহাতুল- ৪-০-২৯-২)

ফলাফল: বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত।

  • আবাহনী-শেখ জামাল

আবাহনী লিমিটেড: ১৮১/৪ (ওভার: ১৮.২; মুনিম- ৭৪, শান্ত- ৬৫*, মোসাদ্দেক- ২৬) (এবাদত- ৩-০-২০-১)

শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব: ৯৮/৮ (ওভার: ১৩; সোহান- ২২, এনামুল- ২৯*) (রানা- ৩-০-১৬-৩)

ফলাফল: আবাহনী লিমিটেড ৪৯ রানে জয়ী।

  • পারটেক্স-গাজী গ্রুপ

পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব: ১০৯/৭ (ওভার: ২০; হাসানুজ্জামান- ২৬, জয়রাজ- ২৪) (তারেক- ৩-০-৩৬-৩)

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৪৭/১ (ওভার: ৫.৩; মেহেদী- ৩৩, সৌম্য- ১১*) (মঈন- ১.৩-০-২০-১)

ফলাফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৯ রানে জয়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link