বার্সেলোনার হয়ে মেসি যতটা উজ্জ্বল আর্জেন্টিনার হয়ে নাকি ততটা নন! নামের পাশের এই অপবাদটা ঘুচিয়ে ফেলতে এবার মরিয়া লিওনেল মেসি। জাতীয় দলের হয়ে নিজের শেষ কোপা আমেরিকাতে এখনো পর্যন্ত দলকে একাই টানছেন মেসি। চিলির বিপক্ষে আগের ম্যাচে ফ্রি-কিক থেকে দারুণ গোল করে দলকে জেতাতে না পারলেও আজকে তাঁর ক্রস থেকে হেড করেই দলকে জিতিয়েছেন গুইডো রদ্রিগেজ।
কোপা আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে সফল এই দুই দলের লড়াইয়ে তাই উরুগুয়ের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচে অ্যাসিস্টের মধ্য দিয়েই ১৩ অ্যাসিস্ট নিয়ে কোপা ইতিহাসের সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টদাতা হলেন লিওনেল মেসি।
আগের ম্যাচে থেকে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে আলবিসেলেস্তেরা। গঞ্জালো মন্টিয়েল, কোয়ার্তা, পারেদেসের জায়গায় একাদশে সুযোগ পান নাহুয়েল মলিনা, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো এবং গুইডো রদ্রিগেজ। এবারের কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডে সৃজনশীলতার অভাব থাকায় কিছুটা নিচে নেমে খেলছেন মেসি। নিজের নতুন ভূমিকাতেও দারুণ সফল বিশ্বসেরা এই তারকা।
ম্যাচের শুরু থেকেই ছোট ছোট পাসে আক্রমণ করে উরুগুয়ে রক্ষণভাগের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে আকাশি-সাদারা। দশ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো আর্জেন্টিনা কিন্তু বক্সের বাইরে থেকে নেয়া মেসির শটটি দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক মুসলেরা।
ৎফিরতি বলে শট নিতে পারেননি লাউতারো মার্টিনেজ। তবে ১৩ মিনিটে আর ঠেকানো যায়নি, বাঁ প্রান্তে পাওয়া কর্নার থেকে বল পেয়ে অনবদ্য এক ক্রস করেন মেসি। সেই ক্রসেই হেড করে দলকে এগিয়ে নেন গুইডো রদ্রিগেজ। জাতীয় দলের হয়ে এটিই তার প্রথম গোল।
পুরো ম্যাচে আরো বেশ কিছু ভালো আক্রমণ করে আর্জেন্টিনা। প্রতিটি আক্রমণের পুরোধা ছিলেন মেসি। বারবার প্রান্ত বদল করেছেন, প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের নিজের দিকে টেনে লাওতারোকে ফ্রি স্পেস দিয়েছেন, ড্রিবলিং করেছেন; সব মিলিয়ে আজকের ম্যাচ ছিল মেসিময়।
লাওতারো মার্টিনেজ বেশ কিছু সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে আরো বড় ব্যবধানেই জিততে পারতো আর্জেন্টিনা। বিশেষ করে ম্যাচের শেষের দিকে দারুণ কিছু সু্যোগ পেয়েছিল, কিন্তু ফরোয়ার্ডদের খামখেয়ালিপনায় ম্যাচের ব্যবধান বাড়ানো সম্ভব হয়নি। তবে, ইতিবাচক ব্যাপার হল চলতি কোপা আমেরিকায় প্রথম ম্যাচ জিতলো আর্জেন্টিনা – নিজেদের অপরাজিত থাকার রেকর্ডটাও ১৫ তম ম্যাচে টেনে নিয়ে যেতে পারাটাও কম কৃতিত্ব নয়।
তবে উরুগুয়েও ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু ডিফেন্সে ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো আজকে দারুণ খেলেছেন, একাই নস্যাৎ করে দিয়েছেন কাভানি-সুয়ারেজদের আক্রমণ। বল পজেশনে উরুগুয়ে এগিয়ে থাকলেও গোলমুখে শট নিতে পারেনি একবারও।
অন্যদিকে আর্জেন্টিনার নয়টি শটের ছয়টিই ছিল গোলপোস্টে। ২৭ মিনিটে অবশ্য কাভানি ডি বক্সে পড়ে গেলে পেনাল্টির দাবি জানায় উরুগুয়ে, কিন্তু তাতে পাত্তা দেননি রেফারি। ৬৯ মিনিটে ভিনার বাড়ানো বলে পা লাগাতে পারেননি কাভানি কিংবা সুয়ারেজ কেউই।
দিনের অন্য ম্যাচে কুইয়াবাতে বলিভিয়ার বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে ম্যাচ জিতেছে চিলি। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন মিডফিল্ডার বেন বেরেটন। এ জয়ের ফলে দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে বি গ্রুপে চিলির সাথে যৌথভাবে শীর্ষে উঠে এলো আর্জেন্টিনা। আগামী সোমবার প্যারাগুয়ের মুখোমুখি হবেন মেসিরা।