বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের খেলা মাঠে গড়ানোর পর থেকেই বিতর্ক আর সমালোচনা পিছু নিয়ছে ভারতের। টসের সময় ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা জানালেন, তারা টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষ বোলার রবীচন্দন অশ্বিনকে একাদশের বাইরে রেখেছেন। টিম কম্বিনেশনের দোহাই দিয়ে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি ভারতের সমর্থক থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটাররাও।
এমনকি কখনোই এসব বিষয়ে মুখ না খোলা শচীন টেন্ডুলকারও নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন অশ্বিনকে একাদশের বাইরে থাকা নিয়ে। ফাইনালে ভারত ২০৯ রানে অজিদের কাছে নাস্তানাবুদ হবার পর সেই বিতর্ক যেন আরো উসকে গেছে।
টেস্ট ক্রিকেটে বিশ্বের সেরা বোলারকে একাদশের বাইরে রাখায় অধিনায়ক রোহিত ও কোচ রাহুল দ্রাবিড়কেই ভারতের ফাইনাল হারের জন্য কাঠগড়ায় দাড় করাচ্ছেন সবাই।
এত এত আলোচনা যাকে নিয়ে সেই অশ্বিন এতদিন মুখ বন্ধই রেখেছিলেন। তবে ফাইনাল শেষের বেশ কিছুদিন পর এবার মুখ খুললেন বিশ্বসেরা এই বোলার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অশ্বিন খোলামেলা কথা বলেন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নিয়ে।
অশ্বিন বলেন, ‘অবশ্যই ফাইনালে আমি খেলতে চেয়েছিলাম। ফাইনালে ওঠার ক্ষেত্রেও আমার ভূমিকা আছে। এমনকি এর আগের ফাইনালেও আমি চার উইকেট নিয়েছিলাম এবং ভালো বোলিং করেছিলাম।’
সরাসরি কিছু না বললেও অশ্বিনও একপ্রকার অসন্তোষ দেখালেন টিম ম্যানেজমেন্টের এমন সিদ্ধান্তে। বিদেশের মাটিতে নিজের দারুণ রেকর্ডের কথাও মনে করিয়ে দেন এই অফস্পিনার।
অশ্বিন বলেন, ‘২০১৮-১৯ এর পর থেকে বিদেশের মাটিতে আমার বোলিং দারুণ হচ্ছে। আমি ভারতকে ম্যাচ জেতারেও সক্ষম হচ্ছি। শেষবার যখন আমরা ইংল্যান্ডে তখন আমরা ২-২ এ টেস্ট সিরিজ ড্র করেছিলাম। এরপর থেকেই হয়তো কোচ ও অধিনায়ক ভেবেছে ইংল্যান্ডে চার পেসার ও এক স্পিনার নিয়ে খেলাটাই ভালো। ফাইনালের আগে তারা হয়তো এটাই ভেবেছে।’
স্পিনারদের নিয়ে নিজেদের মনোভাব পরিবর্তনের দিকেও জোর দিতে বললেন অশ্বিন, ‘স্পিনারদের খেলানোর সমস্যাটা হলো চতুর্থ ইনিংস। চতুর্থ ইনিংস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দায়িত্বটা হলো চতুর্থ ইনিংসের জন্য যথেষ্ট রান করা যেন স্পিনাররা নিজেদের খেলাটা দেখাতে পারে। এটা পুরোপুরি মানসিকতার বিষয়।’
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার আগে ভারতের সবশেষ সিরিজেও সিরিজসেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন অশ্বিন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাটিতে ২৫ উইকেট নিয়েই একাহাতেই ভারতকে সিরিজ জিতিয়েছিলেন অশ্বিন।
ফাইনালে অশ্বিনের একাদশের বাইরে থাকার কারণে সাবেক ক্রিকেটাররা যেভাবে অশ্বিনের পক্ষে কথা বলেছেন সে জন্য কৃতজ্ঞ অশ্বিন।
তিনি বলেন,‘আমার বয়স ৩৬ হয়ে গেছে এবং সত্যি কথা বলতে এই বয়সে আমাকে কি খুশি করবে সেসব বিষয় পরিবর্তন হয়। যতবারই আমি সাবেক কোনো ক্রিকেটারের কাছ থেকে কোনো বার্তা পাই তখন আমার দারুণ লাগে এবং আমি সাথে সাথেই তার উত্তর দেই।’
অশ্বিন আরো বলেন, ‘আমার ভালো লেগেছে কারণ তারা মনে করেছে আমি খেলার জন্য যোগ্য ছিলাম। কিন্তু আসল কথা হলো আমি খেলার সুযোগও পাইনি আবার শিরোপাও জিততে পারিনি। ম্যাচের ৪৮ ঘন্টা আগেই আমি জানতাম আমি খেলব না। তাই আমার উদ্দেশ্য ছিলো কিভাবে আমি আমি খেলোয়াড়দের সাহায্য করতে পারি এবং দলকে শিরোপা জিততে সাহায্য করতে পারি কারণ এখানে আমারও ভূমিকা ছিল।’