ভিলা পার্কের অপূর্ণ রুপকথা, ‘হারার আগেই হেরে যেতে নেই’

তিন মিনিটের মধ্যে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের জালে দু'খানা গোল। যে বিশ্বাস লড়াই করবার রসদ জুগিয়েছিল, সেই বিশ্বাসই ইতিহাস রচনার পথটাও উন্মুক্ত করে দিল। 

বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্ক বহুদূর। অ্যাস্টন ভিলা নিজেদের উপর বিশ্বাস রেখেছিল। গোটা ভিলা পার্ক বিশ্বাস করেছিল মাঠের সেই ১১ জনের উপর। লুইস এনরিকের অধীনস্ত এক স্ট্রাইকিং ফোর্সের বিপক্ষে দুই গোলের ব্যবধান চার হয়ে যাওয়ার পরও, অ্যাস্টন ভিলা নিজেদের উপর বিশ্বাসটুকু রেখেছিল।

মাত্র মিনিট ২০ এর মধ্যেই পালটে যায় পুরো চিত্র। গগনবিদারী চিৎকারে যেন কেঁপে উঠেছিল গোটা ইংল্যান্ড। ইতিহাস রচনার ঠিক দ্বারপ্রান্তে ছিল ঘরের ক্লাবটি। কিন্তু অভাগা মার্কো অ্যাসেনসিও জিয়ানলুইজি ডোন্নারুমাকে পরাস্ত করতে পারলেন না। অন্তিম লগ্নে সৃষ্টি হওয়া ইতিহাসের নায়ক তিনি বনে যেতে পারতেন। তবে হল না সেসব।

প্রায় ১৭ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মঞ্চে নিজেদের খুঁজে পেয়েছিল অ্যাস্টন ভিলা। উনাই এমেরির অধীনে চমকে ভরা একটা মৌসুম কাটিয়েছে তারা ইউরোপীয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে। ওই ভিলা পার্কের কানায় কানায় পূর্ণ দর্শকদের বিশ্বাস করিয়েছে অ্যাস্টন ভিলাও পারে।

প্যারিস সেইন্ট জার্মেইকে ৩-২ গোল ব্যবধানে হারিয়েছে ভিলা পার্কের সেনানিরা। সেই পিএসজিরও তো নেই ইউরোপীয়ান কাপ জয়ের ইতিহাস। তবে অ্যাস্টন ভিলার ঠিকই আছে। আর সেই পার্থক্যই যেন তারা তুলে ধরতে চাইলেন কোয়ার্টার ফাইনালের মঞ্চে।

প্রথম লেগের দুই গোলের ব্যবধান কমিয়ে জয়ের অন্বেষণ করাই ছিল মার্কাস রাশফোর্ডদের কাজ। তাইতো পিএসজির রক্ষণের টুঁটি শুরুতেই চেপে ধরেন জন ম্যাকগিনরা। কিন্তু পিএসজির শ্বাসরুদ্ধকর সেই চাপ ঠেলে দুই দফা এগিয়ে যায়। ব্যবধান বেড়ে তখন চার গোল। তবুও নিরাশ হয়নি ভিলা পার্ক, হতাশ হয়নি উনাই এমেরির শীষ্যরা। বরং তারা বিশ্বাস রেখেছিল।

৩৪ মিনিটের মাথায় এক গোল শোধ দিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল। এসেই যেন মুহুর্মুহু আক্রমণ সামলাতেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে পিএসজি। তিন মিনিটের মধ্যে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের জালে দু’খানা গোল। যে বিশ্বাস লড়াই করবার রসদ জুগিয়েছিল, সেই বিশ্বাসই ইতিহাস রচনার পথটাও উন্মুক্ত করে দিল।

কিন্তু ভাগ্য বিধাতা ততটাও সুপ্রসন্ন হবেন কেন! অ্যাস্টন ভিলা পরিপূর্ণ সম্মানের সাথে মাঠ ছেড়েছে। তারা ইউরোপের তাবড় তাবড় সব শক্তিদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছে। মাথা উঁচু তারা চাইলেই রাখতে পারে। পরের বারও তো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আসতে হবে। সবাইকে দেখাতে হবে সেই ১৯৮২ আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের ঝলক।

Share via
Copy link