আলি রাজার স্ট্যাম্পের ভিতরের লেন্থ বল, খ্যাপাটে আজিজুল হাকিম তামিম বল পাঠালেন বোলারের মাথার উপর দিয়ে সীমানার বাইরে। ক্রস ব্যাটে মিড উইকেটের উপর দিয়ে নয়, ব্যাক ফুটে দাঁড়িয়ে সোজা ব্যাটে, স্ট্রেইট বাউন্ডারিতে। এমন ঘটনাই বাংলাদেশের ক্রিকেটে বিরল।
আলি রাজা পাকিস্তান অনূর্ধ্ব ১৯ দলের সেরা বোলার। দুই বল আগেই রাজার ফ্রি হিট ব্যাটে বলে করতে পারেন নি তামিম, পয়েন্টে দাঁড়ানো ফিল্ডারও কথা শুনিয়ে দিলেন কয়েকটা। ছক্কা হাকিয়েই তামিম ফিল্ডারকে হাতের ইশারায় জানালেন, বলের আসল অবস্থান ওই গ্যালারির বাইরেই হওয়া উচিত।
এতটুকুতেও যেন সন্তুষ্ট হতে পারলেন না তরুণ তামিম। পরের বলে যেই ক্যারিয়াবিয়ান ধাচের ফ্ল্যামিংগো শটে স্কোয়ার লেগ থেকে ছক্কা হাকিয়েছেন, সেই শটের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন সিনিয়র তামিম।
আলি রাজার মুক্তি মেলে নি পরের ওভারেও। চুড়ান্ত ঔদ্ধত্য দেখিয়ে বোলারকে আছড়ে ফেলেছেন মিড উইকেট সীমানা পার করে গ্যালারিতে। তামিমের এমন ধুন্দুমার ব্যাটিংয়েই পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সেমি ফাইনালে ১৬৭ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের সহজ জয় নিশ্চিত হয় টাইগারদের।
১১৬ রান ডিফেন্ড করতে নেমে পাকিস্তানের ফাস্ট বোলাররা শুরুতেই চেপে ধরেছিলো বাংলাদেশি ব্যাটারদের। আজিজুল হাকিম যখন উইকেটে আসেন, তখন ৬.১ ওভারে দলীয় রান মাত্র ২০। এক ওভার ব্যবধানেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে শুরু হয় আজিজুল তামিমের কাউন্টার এ্যাটাক।
শেষ পর্যন্ত দলকে জিতিয়ে যখন মাঠ ছাড়েন তিনি, তখন নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে অপরাজিত ৬১ রান। মাত্র ৪২ বলের ইনিংসে ৩ টি ছয়ের পাশাপাশি রয়েছে, ৭ টি চারের মার। স্ট্রাইক রেট ১৪৫.২৩!
আজিজুল হাকিম তামিম বড় শট খেলতে জানেন, চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটাতে জানেন। গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোতেই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিলো। কিন্তু গলার কাটা হয়েছিলো স্ট্রাইক রোটেশন ও ডট বলের সংখ্যা। ফলে প্রভাব পড়ছিলো স্ট্রাইক রেটে। পাকিস্তানের বিপক্ষের ইনিংস দিয়ে তামিম জানান দিলেন, চাইলে স্ট্রাইক রেটকেও বাড়িয়ে নিতে পারেন তিনি।
যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। বাংলাদেশ কি পারবে আরো একটা এশিয়া কাপের শিরোপা জয়লাভ করতে? উত্তর হয়ত তামিমের ব্যাটেই জানা যাবে।