বাবরের ফেরা, পাকিস্তানের পতন

কুলদ্বীপ যাদবের বলটা লাইন মিস করে হয়ে গেল ফুলটস। তাতে পয়েন্ট দিয়ে বাবর আজম হাঁকিয়ে নিলেন বাউন্ডারি। আর এর মধ্য দিয়েই তিনি পৌঁছে গেলেন হাফ সেঞ্চুরির মাইল ফলকে। এটাই যে ভারতের বিপক্ষে বাবরের সর্বোচ্চ রান। তবে সেটা আর দীর্ঘায়িত হয়নি।

ভারত-পাকিস্তানের মোলাকাত এখন স্রেফ টুর্নামেন্টেই হয়। তাইতো ২০১৭ সালে প্রথমবার ভারতের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাবর আজম। সেবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দু’দফা বাবর খেলেছন ভারতের বোলারদের বিপক্ষে। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে বাবর ফিরেছিলেন ৮ রানে। চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে অবশ্য বাবর খেলেছিলেন ৪৬ রানের ইনিংস।

এরপর সর্বোচ্চ ৪৮ রান তিনি করতে পেরেছিলেন ভারতের বিপক্ষে। সেটা ২০১৯ বিশ্বকাপে। ওই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ছাড়া আর কোন ম্যাচই জিততে পারেনি পাকিস্তান। এবারের এশিয়া কাপে তো ব্যাট হাতেই নামা হয়নি বাবর আজমের।

ভারতের বিপক্ষে বাবর অধিকাংশ সময় থাকেন নিষ্প্রভ। ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বাবর আজম নিশ্চিতভাবেই ফিরে আসতে ছিলেন মরিয়া। তাছাড়া বিশ্বকাপ শুরুর আগেও বাবরের ফর্ম নিয়ে ছিল দারুণ দুশ্চিন্তা। সুতরাং বাবরের রানে ফেরার একটা স্পৃহা তো ছিলই। দুই আর দুই মিলে চার হয়েছে আহমেদাবাদে।

বাবর তাই ৭ চারে সাজালেন নিজের ইনিংস। ছয় ওয়ানডে ম্যাচের পর বাবরের ব্যাট থেকে এসেছে ৫০ রান। বাবর খানিক স্বস্তিই হয়ত খুঁজে নিতে চাইবেন এই ইনিংসের মধ্য দিয়ে। যদিও মোহাম্মদ সিরাজের অফ স্ট্যাম্প বরাবর করা বলে পরাস্ত হতে হয়েছে। পপিং ক্রিজে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে নিজেকে বোল্ড হতেই দেখলেন বাবর আজম।

বাবর আজম একটা লেট কাট খেলতে চাইলেন। সেট একজন ব্যাটারের এমন দৃষ্টিকটু আউট হওয়াটা পাকিস্তানের জন্যে বিপাকের বটে। তবে বাবর অন্তত এবারের বিশ্বকাপে নিজের সেই কিকস্টার্ট পেয়ে গেলেন। চির-প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতে বিপক্ষে একটা বাবর সুলভ ইনিংসই খেললেন তিনি। বিশ্বকাপে বিশ্বের সেরা ব্যাটার চেনা ছন্দে ফিরবেন সেটাই বরং এখন প্রত্যাশিত।

তবে একটা আক্ষেপ অন্তত রেখেই গেলেন বাবর আজম। তিনি যখন ক্রিজে আসেন তখন পাকিস্তানের বোর্ডে ছিল ৪১ রান। সেখান থেকে ইমাম-উল হককে সঙ্গী করে ৭১ রান অবধি গেলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। ইমাম ব্যক্তিগত ৩৬ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরলে বড় রানের দায়িত্ব এসে পড়ে বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের উপর। দু’জনে সেই দায়িত্বটা নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকলেন দারুণভাবে।

৮২ রানের সেই জুটি ভাঙে বাবরের প্রস্থানে। শট নির্বাচনে ভুল না করলে হয়ত এই জুটি আরও খানিকটা লম্বা হতে পারত। তাতে পাকিস্তান একটা সুবিধাজনক অবস্থানে যেতে পারত। তাছাড়া ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানটা শতক অবধি পৌঁছাতে পারত। তবে তেমন কিছুই আর হয়নি।

আর বাবরের বিদায়ের পর আসা-যাওয়ার মিছিলে শামিল হন পাকিস্তানের বাকি ব্যাটাররা। বিশ্বকাপের সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ ম্যাচে আরও খানিকটা দূর অন্তত যেতে চেয়েছিলেন বাবর আজম। কিন্তু তিনি পারেননি। তবে অন্তত ভারত ভীতি কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন পাকিস্তানি অধিনায়ক সেটা বলাই যায়।

৫৮ বলে খেলা ৫০ রানের এই ইনিংসটি ভারতের বিপক্ষে বাবরের ব্যাটিং গড়কে একটু ভদ্রস্থই করতে পারল। দিনটাকে বাবর মনে রাখতে চাইলেও, ব্যাটিংয়ে দিনটা মনে রাখবে না পাকিস্তান। ২০০ রান তুলতেই ঘাম ছুটে গেছে তাঁদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link