ভারতের বিপক্ষে বাবর বরাবরই ব্যর্থ

৩৫৭ রানের বিশাল লক্ষ্য। এশিয়া কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ। দুই পরাশক্তি মুখোমুখি। রিজার্ড ডে-এর খেলা। এমন ম্যাচে বিরাট কোহলি খেলেছেন আবার দূর্দান্ত এক ইনিংস। ১২২ রানে অপরাজিত থেকেছেন ‘কিং কোহলি’। তবে এদিনও ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি বাবর আজম।

ধীরগতিতে ইনিংস শুরু করেছিলেন বাবর। তিনি বাইশ গজে সেট হওয়ার চেষ্টা করেছেন। খেলেছেন ২৪টি বল। রান করেছেন মাত্র ১০। হার্দিক পান্ডিয়ার দূর্দান্ত এক বলে বোল্ড আউট হয়ে ফিরেছেন বাবর আজম। দলকে ফেলে রেখে যান ভীষণ চাপের মুখে। দল পড়ে যায় বিপাকে।

কারণ লক্ষ্যটা যে আকাশচুম্বী। পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এমন এক ম্যাচে বাবারের কাছ থেকে দারুণ কিছুই ছিল প্রত্যাশিত। তবে এবারও বাবর হতাশ করেছেন পাকিস্তানি সমর্থকদের। মর্যাদার ম্যাচে তিনি রয়ে গেলেন পর্দার আড়ালে।

তবে এটা অবশ্য নতুন নয়। বরাবরই ভারতের বিপক্ষে দারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে বাবর আজম। দলকে একটা শক্ত অবস্থানে কখনোই নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। বড় কোন টুর্নামেন্ট ছাড়া এই দুই দল এখন আর নিয়মিত মুখোমুখি হয় না। সুতরাং টুর্নামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতেই বাবর খাবি খান ভারতের বিপক্ষে। পৃথিবীর সমস্ত চাপ শোষণ করতে পারলেও, ভারতের চাপে নুইয়ে পড়েন সম্রাট বাবর।

এখন অবধি ভারতের বিপক্ষে সাতটি ম্যাচ খেলতে নেমেছেন বাবর। যার মধ্যে দুইটি আবার এবারের এশিয়া কাপেই। একটিতে ব্যাট হাতে নামার সুযোগ হয়নি বাবরের। আরেকটিতে করেছেন ২৪ বলে ১০। এছাড়া বাকি পাঁচ ইনিংস মিলিয়ে ভারতের বিপক্ষে বাবরের মোট রান ১৬৮।

মাত্র ২৮ তার গড়। অথচ বাবরের ওয়ানডে গড় প্রায় ৫৯। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে খেলতে নামলেই যেন নিজের ছায়ায় রুপান্তরিত হন বাবার আজম। ভারতের বিপক্ষে বাবরের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৪৮ রান। ২০১৯ বিশ্বকাপে ম্যানচেস্টারে সেদিনও বৃষ্টির বাগড়া এসেছিল। ম্যাচটি হারতে হয়েছিল পাকিস্তানকে, তাও আবার বিশাল ব্যবধানে।

শুধু যে ওয়ানডেতেই এমন চিত্রের অবতারণা ঘটিয়েছেন বাবর, তা কিন্তু নয়। টি-টোয়েন্টিতেও ভারতের সামনে বড্ড অসহায় হয়ে পড়েন পাকিস্তানের অধিনায়ক। তবে ওয়ানডের তুলনায় সেখানটায় বেশ এগিয়েই রয়েছেন বাবর। ৩০ গড়ে চার ইনিংসে করেছেন ৯২ রান। একটি ম্যাচে ৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই ম্যাচটা পাকিস্তান জিতে নিয়েছিল ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। সেবারের টুর্নামেন্টটা বাজেই কেটেছিল ভারতের। প্রথম পর্ব থেকে বাদ হয়ে যায় ভারত। কিন্তু তাতে অবশ্য বাবরের পরিসংখ্যানে পরিবর্তন আসে না।

বাবরের যখন ভারতের বিপক্ষে এমন করুণ দশা, তখন কিন্তু বিরাট কোহলির ক্ষেত্রে ঘটে উল্টো ঘটনা। ১৫ ইনিংসে পাকিস্তানের বিপক্ষে বিরাটের গড় ৫৫.১৬। ৩টি সেঞ্চুরি ছাড়াও ২টি অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন বিরাট। ওয়ানডেতে তিনি প্রতিবেশিদের বিপক্ষে করেছেন ৬৬২ রান।

টি-টোয়েন্টিতেও সেই ধারা বজায় রাখতে পেরেছেন বিরাট কোহলি। সেখানে ৮১.৩৩ গড়ে ৪৮৮ রান রয়েছে বিরাটের নামের পাশে। দশ ইনিংসের ৫টিতেই হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন ভারতের এই ডানহাতি ব্যাটার। এখানেই আসলে ম্যাচের ফলাফলের পার্থক্য়ের সৃষ্টি হয়।

বাবর যখন চুপসে যান ভারতকে পেলে। তখন বিরাট যেন হয়ে ওঠেন আরও বিধ্বংসী। বাবরের ভারতভীতি থেকে বেড়িয়ে আসা প্রয়োজন। নিজেদের পক্ষে ফলাফল নিয়ে আসতে দলের তারকা খেলোয়াড়দেরই তো বাড়তি দায়িত্ব নিতে হয়। বিরাট বরাবরই সেই দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ আর পরিসংখ্যানের পার্থক্য গড়ে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link