আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন চলছে ব্যস্ত সূচি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর পর থেকে বেড়েছে টেস্ট ম্যাচ। আগের চেয়ে ওয়ানডে ম্যাচ না খুব বেশি না বাড়লেও বেড়েছে টি-টুয়েন্টি ম্যাচের সংখ্যা। এর সাথে তাল মিলিয়ে মাসের পর মাস ক্রিকেট খেলা দেশগুলোর দ্বি-পক্ষীয় সিরিজ তো চলছেই। ক্রিকেট খেলার সাথে মানসিক ব্য্যাপারটাও তো জড়িত।
এ কারণে অনেক নামী ক্রিকেটাররাও এই ব্যস্ত সূচির সাথে তাল মেলাতে পারছেন না। ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনাল জেতানো বেন স্টোকস তো বলেই দিয়েছেন, তিনি আর ওয়ানডে খেলবেন না। এই কিছুদিন আগেই তিনি নিলেন ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর।
নিউজিল্যান্ডের পেস বোলিং ইউনিটের অন্যতম ট্রেন্ট বোল্ট আবার কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেই নিয়েছেন অব্যাহতি। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন থেকে তার দেখা মিলবে কম। এ ছাড়া ভারতের তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা চালিয়ে যাচ্ছেন বেঁছে বেঁছে ম্যাচ খেলে।
নিচের টায়ারের দলের বিপক্ষে তাদের দেখা মিলে কম। ক্রিকেটের এমন ব্যস্তসূচিতে টানা খেলার কারণে ইনজুরিতে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই ক্যারিয়ার দীর্ঘ করতে অনেক ক্রিকেটার এখন একটা ফরম্যাট থেকে অবসর নিচ্ছেন, কেউ কেউ তিন ফরম্যাট চালিয়ে যাচ্ছেন অনিয়মিত ভাবে। ক্রিকেট বোর্ড এগুলো সাদরে গ্রহণও করছে।
এমন পরিস্থিতিতে উল্টো পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। ইনজুরি সংক্রান্ত সমস্যা ব্যতীত বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহীন শাহ আফ্রিদির মতো ক্রিকেটাররা নিয়মিতই তিন ফরম্যাট খেলেন। তবে সম্প্রতি দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ইনজুরি এড়ানোর উদ্দেশ্যে এক ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়া উচিত কিনা তা নিয়ে সরাসরি বাবর আজমকে প্রশ্ন করেছেন পাকিস্তানের এক সাংবাদিক।
তিনি বলেন, ‘আপনি, রিজওয়ান, শাহীন আফ্রিদি পাকিস্তানের গর্ব। তবে আপনি কি মনে করেন, টানা খেলার চাপে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স ড্রপ করে? যেমন আমরা শ্রীলঙ্কার সাথে শেষ টেস্টটা এ কারণেই বোধহয় হেরেছি। তো সিনিয়র ক্রিকেটার কোনো এক ফরম্যাটে অবসর নিলে আরো ভাল হবে কিনা?’
সাংবাদিকের এমন প্রশ্ন যে ভালভাবে নেননি বাবর আজম তা তার উত্তরেই পরে স্পষ্ট হয়ে যায়। বেশ কড়াভাবেই তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের যেরকম ফিটনেস আছে, তাতে কোনো ফরম্যাট ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছি না। আর আপনার কি মনে হয়, আমি বুড়ো হয়ে গিয়েছি? বা আমরা বুড়ো হয়ে গিয়েছি? ’
মানে, তিনটা ফরম্যাটই চালিয়ে যেতে চান বাবর। শীর্ষ পর্যায়ে কোনো ধরণের ক্রিকেট খেলতেই তাঁর ফিটনেসজনিত কোনো সমস্যা নেই। কোনো ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ারও ইচ্ছা নেই।
বাবর আজমের এমন উত্তর অবশ্য তার বর্তমান ফর্মের মতোই হয়েছে। কারণ বাবর আজমের ক্রিকেট ক্যারিয়ার গ্রাফ যেভাবে পারফরম্যান্সের সাথে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে, তাতে অনবদ্য, অসাধারণ বিশেষণগুলোও ক্ষুদ্র হয়ে যায়। ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে র্যাংকিংয়ে এই মুহুর্তে আছেন সেরা তিনে।
সাদা বলের ক্রিকেটে আছেন এক নম্বরে। আর লাল বলের ক্রিকেটে তার চেয়ে শুধু এগিয়ে আছেন জো রুট, মার্নাস লাবুশেন। তিন ফরম্যাটেই এত ধারাবাহিক এই ব্যাটার তাই নির্দিষ্ট কোনো ফরম্যাট থেকে অবসর নেবেনই বা কেন? তার তো শুধু এখন এগিয়ে যাওয়ার পালা।