ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ মানেই ভিন্ন ধরণের এক মাইন্ড গেম। তাইতো ভারতের পেস বোলিং সেনসেশন জাসপ্রিত বুমরাহ এই ম্যাচকে সামনে রেখে এঁকেছিলেন নীল নকশা, আর ২২ গজে পেয়েছেন তাঁর প্রতিফলন। সাজঘরে ফিরিয়েছেন পাকিস্তানের দুই তারকা ব্যাটার বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ানকে।
পাঁচ বছর আগে ক্যারিবীয় অঞ্চলে ধ্বংসযজ্ঞ চালনার সময়, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেস কিংবদন্তী কার্টলি অ্যামব্রোস ভারতীয় বোলারদের বেশ প্রশংসা করেছিলেন। বুমরাহ সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে, ‘সে (জাসপ্রিত বুমরাহ) আমাদের একজন হতে পারতো। সে এতটাই সম্পূর্ণ যে, সে যে কোনো যুগে খেলতে পারত।’
পাঁচ বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে বুমরাহর বোলিংয়ের ধার যেন বেড়ে যায় কয়েকগুন। বুমরাহ এই ম্যাচ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি আমার সামনে যে সমস্যাটি থাকে সেটি সমাধানের চেষ্টা করি। জানি এটি খুবই গতানুগতিক জবাব। তবে আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী নয়, বরং এই ধরণের উইকেটে বিকল্প সমাধান বের করছিলাম।’
নিউ ইয়র্কের উন্মুক্ত বাতাসে আঙুলের শৈল্পিক কৌশলে বুমরাহর করা বলে আলতো খোঁচা দেন পাকিস্তান দলপতি বাবর আজম। যদিও বাবরের সেই খোঁচায় ছিল রক্ষণাত্মক সুর। তবে বল সোজা চলে যায় স্লিপ অঞ্চলের দাঁড়িয়ে থাকা সুরিয়াকুমার যাদবের দিকে। এই দৃশ্যের পুরোটাই বুমরাহর সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতার বাস্তব রূপ।
পঞ্চম ওভারের যে বলে বাবর আজমকে আউট করা হয়েছিল, সেই বলটির উৎপত্তিস্থল মূলত তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে। একই ভাবে বাবর এই বলটিকেও খোঁচা দিয়েছিলেন। সেই সময় থার্ড ম্যান অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে গেলেও এবার তা পৌঁছে যায় সুরিয়াকুমারের তালুতে।
বুমরাহর স্ট্রেইট বোলিং সম্পর্কে বেশ আলোচনা রয়েছে। ডেনিস লিলি কিংবা ম্যালকম মার্শালের মত অন্যান্য বোলার থেকে পাওয়া লেগ কাটারের মতই শক্তিশালী তাঁর এই স্ট্রেইটনার। লিলি কিংবা মার্শালের বিপরীতে বুমরাহ শুধুই একজন স্ট্রেইটনার, যার বল ব্যাটার থেকে খুব বেশি দূরে সরে যায় না। আর এই বৈশিষ্ট্যই তাঁর বলকে আরও ভয়ংকর করে তোলে। কেননা বল ছাড়ার সময় তাঁর হাত বাম দিক থেকে সরে আসে, যা মূলত লেগ কাটারের কাজ করে দেয়।
তারপর ১৫ তম ওভারে প্রথম বলেই তুলে নেন মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেট। যদিও এই উইকেট বীজ গত বছর আহমেদাবাদেই রোপিত হয়েছিল। যেখানে রিজওয়ান একই পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছিলেন। আর এবারও বুমরাহর বল সরাসরি আঘাত করে রিজওয়ানের ষ্ট্যাম্পে।
পিচ, পরিস্থিতির চাপ কিংবা কন্ডিশন কোনোটাই নয়, বুমরাহর উর্বর চিন্তা শক্তির কাছেই পরাজিত হয়েছে পাকিস্তান। বলতেই হয়, নীল নকশা বাস্তবায়নে শতভাগ সফল জাসপ্রিত বুমরাহ।