কুয়াশা, নাকি ধোঁয়াশা!
নাম, যাই হোক, সে কেবল সাধারণ জনজীবনেই নয়; প্রভাব ফেলেছে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপেও। তার প্রভাবে আজ বদলে যাচ্ছে টুর্নামেন্টের সময়সূচি। আর বদলে যাওয়া এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সমীকরণ মাথায় নিয়ে মাঠে নামবে চারটি দল।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে আগামীকাল দিনের প্রথম ম্যাচে বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে মাঠে নামবে জেমকন খুলনা, আর দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের প্রতিপক্ষ ফরচুন বরিশাল। ঘন কুয়াশার কারণে টুর্নামেন্টের সূচিতে আনা হয়েছে পরিবর্তন। পরিবর্তিত সূচি অনুযায়ী দিনের প্রথম ম্যাচ শুরু হবে দুপুর সাড়ে বারোটায় মিনিটে এবং দ্বিতীয় ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় মিনিটে।
বেক্সিমকো ঢাকা এবং জেমকন খুলনার ম্যাচটি দুটি দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। টুর্নামেন্টে ৭ ম্যাচে ৩ হার ও ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জেমকন খুলনা। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল খেলবে এলিমেনিটরে। এলিমেনিটরে হারলেও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলে ফাইনাল যাওয়ার সুযোগ থাকবে শীর্ষ দুই দলের। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচটা তাই জেমকন খুলনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শেষ ম্যাচে হেরে গেলে অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের শীর্ষ দুইয়ে থাকা।
বেক্সিমকো ঢাকা রয়েছে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে। টুর্নামেন্টে ছয় ম্যাচে তিন জয়ের সাথে হেরেছেও তিন ম্যাচ। প্লে-অফ নিশ্চিত করতে এখনো দুটো ম্যাচ পাবে ঢাকা। দুই ম্যাচে এক টি জয় পেলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হবে বেক্সিমকো ঢাকার। কিন্তু জেমকন খুলনার বিপক্ষে জয় পেলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুইয়ে থাকার লড়াইয়ে থাকতে পারবে তারা। তখন গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে জয় পেলেই শীর্ষ দুই নিশ্চিত হবে মুশফিকুর রহিমের দলের।
জেমকন খুলনা ও বেক্সিমকো ঢাকার লড়াইয়ে নজর থাকবে অনেকের উপর। ব্যাট হাতে ছন্দে রয়েছেন ঢাকার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলী। মুশফিকুর রহিম ছয় ম্যাচে ৫২.৭৫ গড়ে ২১১ রান সংগ্রহ করে টুর্নামেন্টের শীর্ষ রান সংগ্রহকারীর তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন এবং ইয়াসির আলী রয়েছেন ৭ম স্থানে। ইয়াসিরের ব্যাট থেকে ৫ ম্যাচে ৪৩.৭৫ গড়ে এসেছে ১৭৫ রান।
এছাড়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক আকবর আলীকেও দলের বিপর্যয়ে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলতে দেখা গেছে, নজর থাকবে তার উপরও। বল হাতে নিয়মিত ভালো করা মুক্তার আলীর সাথে চোখ থাকবে তরুণ শফিকুল ইসলাম ও রুবেল হোসেনের দিকেও। ছয় ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে ঢাকার পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী মুক্তার আলী। শফিকুল ইসলামের ঝুলিতে চার ম্যাচে আট উইকেট এবং রুবেল হোসেন নিয়েছেন ছয় ম্যাচে আট উইকেট।
জেমকন খুলনার হয়ে ব্যাট হাতে এখনো জাকির হাসান ছাড়া হাফ সেঞ্চুরি করতে পারেনি কেউ। ছোট ছোট ইনিংস দিয়েই খুলানাকে টেনেছে ব্যাটসম্যানরা। টুর্নামেন্টে সাত ম্যাচে ১৫১ রান করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে ফ্রন্ট লাইটে থাকবেন জেমকন খুলনার এক্স ফ্যাক্টর হয়ে ওঠা শুভাগত হোম। টুর্নামেন্টে আগের ম্যাচ গুলোতে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও সাকিব আল হাসানের উপর নজর থাকবে সবার। দীর্ঘ দিন পর মাঠে ফেরা মাশরাফি বিন মর্তুজার উপরও সবার চোখ থাকবে।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচ গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ না হলেও টুর্নামেন্টে টিকে থাকার লড়াইয়ে মাঠে নামবে ফরচুন বরিশাল। ছয় ম্যাচ পাঁচ জয় নিয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে গেছে চট্টগ্রামের। নেট রানরেট ভালো থাকার কারনে পাঁচ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুইয়ে থাকাও প্রায় নিশ্চিত লিটন-সৌম্যদের। কিন্তু ছয় ম্যাচে মাত্র দুই জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের নিচে রয়েছে ফরচুন বরিশাল। সাত ম্যাচে সমান জয় নিয়ে তাদের উপরে রয়েছে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। ফরচুন বরিশালের প্লে-অফ খেলতে বাকি দুই ম্যাচে জয়ের কোন বিকল্প নেই। দুই ম্যাচে এক জয় পেলেও প্লে-অফে খেলতে পারবে, সেক্ষেত্রে তাকিয়ে থাকতে হবে রাজশাহীর বড় পরাজয়ের দিকে।
চট্টগ্রাম ও বরিশালের লড়াইয়ে চোখ থাকবে লিটন দাস, তামিম ইকবাল ও গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ হোসেন ইমনের উপর। টুর্নামেন্টে ৬ ম্যাচে ৬২.৭৫ গড়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করেছে লিটন দাস। তামিমের সংগ্রহ ছয় ম্যাচে ২৪০ রান ও সমান সংখ্যাক ম্যাচে ইমনের সংগ্রহ ২০৪ রান। এছাড়া টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী দুজন মুস্তাফিজুর রহমান ও গত ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা কামরুল ইসলাম রাব্বির উপর নজর থাকবে সবার। শীর্ষে থাকা মুস্তাফিজের সংগ্রহ ছয় ম্যাচে ১৫ উইকেট এবং সমান ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কামরুল ইসলাম রাব্বি।