২০২৩ বিশ্বকাপ থেকেই দেখছি একটা ন্যারেটিভ খুব বিক্রি হচ্ছে, আফগানিস্তান আর বাংলাদেশ এর মধ্যে একটা দেশ উন্নতি করতে চায় বলে একটা দল জিতছে, আরেকটা দল উন্নতি করতে চাইনা বলে জিতছেনা। খুব ইন্টারেস্টিং ন্যারেটিভ, জানি এটা বদলানো যাবেনা, তবু কয়েকটা জিনিস বলে রাখি।
অজয় জাদেজা বলুন বা ডোয়াইন ব্রাভো, এরা অনেকটা করে কৃতিত্ব পেলেও আসল কাজ কিন্তু করেছে জোনাথন ট্রট এবং তার পার্মানেন্ট সাপোর্ট স্টাফের দল, এই আফগানিস্তান দল এর বহু ক্রিকেটার এমন ছিল যারা খুব কাঁচা অবস্থায় জাতীয় দলে এসে খেলা ভালো করে শিখেছে এই কোচিং স্টাফ এর তত্বাবধানে এসে।
আফগানিস্তান এর ডোমেস্টিক বা ফার্স্ট ক্লাস স্ট্রাকচারের অবস্থা কিন্তু একদম ভালো না, ওখানে কাদের শাসনব্যবস্থা সবাই জানে, খেলোয়াড় ওঠে লোকাল টুর্নামেন্ট বা কাবুল প্রিমিয়ার লিগ থেকে, যেখান থেকে ঘষা মাজা করে সমস্ত কোচরা আছেন তারা প্লেয়ার তৈরি করেন।
আফগানিস্তানের ক্রিকেটের জন্য জরুরি ট্যালেন্ট আছে, আর আছে প্যাশন, জেতার আর শেখার উদগ্র ইচ্ছে আর খিদে, রাশিদ খান এই বেঞ্চমার্ক টা সেট করেছেন আর এটা দেখে এগিয়ে আসছে বহু তরুণ আফগানি কমিটমেন্ট আর সেলফ বিলিফ নিয়ে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কিন্তু তৃণমূল স্তরে ভালো কাজ করেছে, হাই পারফরম্যান্স সেন্টার আর এজ গ্রূপ ক্রিকেটে ইনভেস্টমেন্ট এর জন্য এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পেস অ্যাটাক সোনায় বাঁধানো, অনেক বছর পর দু’টো রিস্ট স্পিনার ও পেয়েছে, সমস্যা হচ্ছে এদের ও ডোমেস্টিক ক্রিকেটের অবস্থা একদম ভালো না, আর কিছুতেই এরা কোচিংয়ের জায়গাটা ঠিক করতে পারছেনা, মূলত ব্যাটিংয়ে।
এজ গ্রুপ ক্রিকেট থেকে তরুণ ক্রিকেটার আসছে, কিন্তু এদের আসল পোটেনশিয়াল মূল মঞ্চে প্রেসারের মুখে দেখা যাচ্ছেনা, কোথাও গিয়ে স্কিল গ্যাপ রয়ে যাচ্ছে, স্কিল এর ওপর ভরসা না থাকলে আস্তে আস্তে কনফিডেন্স আর সেলফ বিলিফ ও তলার দিকে যাবে, যেটাকে আমরা চোকিং বলি, সঠিক সময় কি করতে হবে এটা বুঝে না পাওয়া, ওয়াসিম জাফর বাংলাদেশ ক্রিকেটে কাজ করেছেন, উনিও এটাই বলেছেন।
রাজনীতি তোলাটা হাস্যকর, রাজনীতি নেই এমন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এশিয়াতে নেই, আজগর স্টানিকজাই (বর্তমানে আজগর আফগান) বহুবছর আফগানিস্তান ক্রিকেটে লবি করেছেন, এখন রশিদ খানের বন্ধু বলে জাজাই খেলছে, এগুলোর বাইরেও শুধুমাত্র ক্রিকেটীয় মেরিটে একটা আলোচনা হয়, সেটা সাধারণত ন্যারেটিভ থেকে বারবার হারিয়ে যায়।
মজার ব্যাপার হলো এখন কার আফগানিস্তান হলো লবি করা, ডোমেস্টিক ক্রিকেট না খেলা আফগানিস্তান, যখন এরা পুরো শক্তিতে খেলবে, তখন আশা করি উন্নতির আলোচনা জিনিসটাই আর প্রসঙ্গে উঠবেনা।