নর্দান গ্যালারির দুই তালা থেকে লাফিয়ে নিচে নামলেন এক দর্শক। তারপর প্রায় ১০ ফিট উচ্চতার বেড়া টপকে একেবারে মাঠে ঢুকে পড়লেন। হুমড়ি খেয়ে পড়লেন মুস্তাফিজুর রহমানের সামনে। কোভিডের কারণে বায়োবাবলের ম্যাচে দর্শকের এমন উপস্থিতিই এখন এই ম্যাচের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। এছাড়া মাঠের ক্রিকেটে দেখা মিলেছে আবারো সেই পুরনো চিত্র ও বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের হতাশাগ্রস্থ চেহারা।
আজকেও টস জিতে ব্যাট করতে নেমে টপ অর্ডারের অসহায় আত্মসমর্পন। আজও ব্যার্থ দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও সাইফ হাসান। রানের খাতা খোলার আগেই সাইফ হাসানকে ফেরান শাহীন শাহ আফ্রিদি। তবে আজও দলকে টেনে তুলতে চেয়েছিলেন আফিফ ও শান্ত। মাঝে শাহীন শাহর থ্রোয়ে আফিফ মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও আবার উঠে দাড়ান।
বিশেষ করে নাজমুল হোসেন শান্ত’র ৪০ রানের ইনিংসে আজ ভালো সংগ্রহের আশাই দেখছিল বাংলাদেশ। তবে এরপরই আবার তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। শেষ দিকে আর কেউ হাল ধরতে না পারায় ১০৮ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
শান্ত বাদে ব্যাটিং লাইন আপে আর কেউ হাল ধরতে না পারা নিয়ে রিয়াদ বলেন, ‘আমাদের মত দলের একজন ব্যাটসম্যান প্রয়োজন যিনি ১৫-১৬ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করবেন। তাহলে ডেথ ওভারে হাত খুলে ব্যাটিং করা যায়। তবে আজ সেটা হয়নি।’
তবে ছোট টার্গেটে ব্যাট করতে নামলেও পাকিস্তানকে শুরুতে চাপের মুখেই রাখে তাসকিন, মুস্তাফিজরা। বিশেষ করে বাবর আজমকে ১ রানে ফিরালে ম্যাচে যেন আবার প্রাণ ফিরে পায় বাংলাদেশ। নতুন বলে বোলারদেন দারুণ পারফর্মেন্স নিয়ে অধিনায়ক বলেন, ‘শেষ ৫-৬ ছয় মাস ধরেই পেস-স্পিন দুই ডিপার্টমেন্টই দারুণ করছে। তবে ব্যাটিং নিয়ে আমাদের আরো কাজ করতে হবে।’
তবে এরপরই আবার সেই নখদন্তহীন বোলিং। বিশেষ করে আজকের ফিল্ডিং যেন আরো হতাশায় ডুবিয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। ফিল্ডিং নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও অসহায়ত্ব ফুটে উঠে রিয়াদের মুখে। তিনি বলেন, ‘আমি জানিনা আসলে কি হচ্ছে। ছেলেরা অনুশীলনে এই ধরনের ক্যাচ নিয়মিতই ধরছে। তবে ম্যাচে আমরা এই সুযোগ গুলো হাতছাড়া করছি।’
ওদিকে গতকাল বিপ্লবকে বল না দেয়ায় সমালোচিত হয়েছিলেন অধিনায়ক। আজ অবশ্য সেই ভুল করেননি রিয়াদ। বিপ্লবও তৈরি করেছিলেন সুযোগ। তবে ২৬ রানে ব্যাট করতে থাকা ফখর জামানের ক্যাচ লং অনে ফেলে দেন সাইফ হাসান। এরপর আবার বিপ্লবের বলে ক্যাচ দেন রিজওয়ান। এবার সেই সহজ ক্যাচ ফেলে দেন তাসকিন আহমেদ।
ওদিকে বায়োবাবলের মধ্যে দর্শকের মাঠে ঢুকে পড়া নিয়েও তৈরি হতে পারে জটিলতা। সেই দর্শক মুস্তাফিজের কাছে আসার পর মুস্তাফিজকে মাঠ থেকে সড়িয়ে আনা হয়। ১৩ তম ওভার শেষে এই ঘটনা ঘটলে ওভারের মাত্র ১ বলের করে মাঠ ছাড়েন মুস্তাফিজ। তবে সেটা কী বায়োবাবল জনিত কারণে নাকি ইনজুরির কারণে সেটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এতকিছুর মাঝেও আজ নিজের ব্যাটিং দিয়ে সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্তকে নিয়ে দীর্ঘসময় ধরেই পরিকল্পনা করছিল বিসিবি। সেটার ফল আসতে শুরু করাটা অবশ্যই স্বস্তির সংবাদ। নিজের ব্যাটিং নিয়ে শান্ত বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় আমি যদি আরেকটু বড় ইনিংস খেলতে পারতাম তাহলে হয়তো দল আরেকটু ভালো অবস্থায় যেতো। আমার মনে হয় না জয়ের মত স্কোর করতে পেরেছি আমরা। তবে আমি যদি ৭০ করতে পারতাম তাহলে হয়তো দলের স্কোর ১৫০-১৬০ রানের মত হতে পারতো।’