আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক বেশ বিরল ও কঠিন এক কীর্তি। তবে এই কঠিন কাজটিও অনেক বোলারই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে করে দেখিয়েছেন।
টেস্ট ক্রিকেটে এখন অবধি ৪৫ বার হ্যাটট্রিক হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বাংলাদেশি বোলারও আছেন দুইজন। আবার ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে হ্যাটট্রিকের ঘটনা ঘটেছে মোট ৪৯ বার। এই ফরম্যাটে হ্যাটট্রিক করেছেন মোট পাঁচ বাংলাদেশি বোলার। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মোট ৭ জন বাংলাদেশি বোলার এই কীর্তি করেছেন। তাঁদের নিয়েই খেলা ৭১ এর আজকের আয়োজন।
- অলক কাপালি (২০০৩, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান: পেশোয়ার)
বাংলাদেশের হয়ে এই কীর্তি শুরু করেন অলক কাপালি। ২০০৩ সালে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে পেশওয়ারে এই কীর্তি গড়েন অলক কাপালি। শাব্বির আহমেদের উইকেট নিয়ে তাঁর হ্যাটট্রিক যাত্রা শুরু করেন কাপালি। তারপরের দুই বলেই তুলে নেন দানিশ কানেরিয়া ও উমর গুলের উইকেট।
- শাহাদাত হোসেন (২০০৬, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে: হারারে)
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন শাহাদাত হোসেন। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন শাহাদাত। তারপর আরো চার জন বাংলাদেশি বোলার ওয়ানডে ক্রিকেটে এই কীর্তি করেছেন। হারারাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে পরপর তুলে নেন মুফাম্বিসি, চিগাম্বুরা ও মুপারিওয়া এর উইকেট।
- আব্দুর রাজ্জাক (২০১০, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে: মিরপুর)
ওয়ানডে ক্রিকেটের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকটি আসে আব্দুর রাজ্জাকের হাত ধরে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনার রাজ্জাক। ২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। হ্যাটট্রিক-সহ পাঁচ উইকেট নেন তিনি। বাংলাদেশ ছয় উইকেটের বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিতে।
- সোহাগ গাজী (২০১৩, প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড: চট্টগ্রাম)
২০১৩ সালে ওয়ানডে ও টেস্ট দুই ফরম্যাটেই হ্যাটট্রিক করেন দুজন বাংলাদেশি বোলার। টেস্ট ক্রিকেটে এই কাজটি করেন সোহাগ গাজী। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক টেস্ট ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। ওই ম্যাচে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরিও করেছিলেন সোহাগ গাজী। তিনিই বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার যিনি একই টেস্ট ম্যাচে হ্যাটট্রিক ও সেঞ্চুরি করেছেন। সেই ম্যাচে তিনি পরপর তুলে নেন কোরি অ্যান্ডারসন, জেমস ওয়টলিং ও ডগলাস ব্রেসওয়েলের উইকেট।
- রুবেল হোসেন (২০১৩, প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড: মিরপুর)
ওয়ানডে ক্রিকেটে তৃতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে হ্যাট্ট্রিক করেন রুবেল। ২০১৩ সালেই সোহাগ গাজীর পর আবার এই কীর্তি করেন রুবেল। ফরম্যাট আলাদা হলেও তিনিও হ্যাটট্রিক করেন একই প্রতিপক্ষে বিপক্ষে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচটি হয়েছিল চট্টগ্রামে। সেখানে তিনি পরপর তুলে নেন কোরি অ্যান্ডারসন, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও জিমি নিশামের উইকেট।
- তাইজুল ইসলাম (২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে: মিরপুর)
বিশ্বের ৩৬ তম ও বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক করেন তাইজুল। ২০১৪ সালে মিরপুর স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই কীর্তি করেন তিনি। সেটা ছিল তাইজুলের অভিষেক ওয়ানডে ম্যাচ। যদিও, এরপর কখনোই ওয়ানডেতে থিতু হতে পারেননি তিনি।
- তাসকিন আহমেদ (২০০৭, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা)
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের পঞ্চম ও সর্বশেষ বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক এর দেখা পান তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের এই স্পিড স্টার ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে এই কীর্তি গড়েন। আসেলা গুনারত্নের উইকেট তুলে নিয়ে তাসকিন শুরু করেন তাঁর হ্যাটট্রিক যাত্রা। তারপর পরপর তুলে নেন সুরাঙ্গা লাকমাল ও নুয়ান প্রদীপের উইকেট। যদিও সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা দল বোর্ডে ৩১১ রান জমা করেছিল। তবে, বৃষ্টির কারণে আর মাঠে নামারই সুযোগ হয়নি বাংলাদেশ দলের।