কাগজে কলমে পাকিস্তানের চেয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে নেদারল্যান্ডস। শক্তিমত্তায় বহুগুণে এগিয়ে থাকা একটা দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে কাউকে হয়ে উঠতে হয় অতিমানব। বাবর আজমদের বিপক্ষে ডাচদের আরাধ্য সেই অতিমানব হয়ে উঠলেন বাস ডি লিড। কিন্তু তাঁর অতিমানবীয় পারফরম্যান্সও যথেষ্ট হয়নি দলের জন্য।
আগে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে তান্ডব চালিয়েছেন ডি লিড। একাই চার উইকেট শিকার করে পাকিস্তানকে অলআউট করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর এমন বোলিং পারফরম্যান্স না দেখা গেলে হয়তো ৩৫০ ছুঁতে পারতো রিজওয়ানরা।
শুরুটা মোহাম্মদ রিজওয়ানকে দিয়েই, ৩২তম ওভারের তৃতীয় বলে অবিশ্বাস্য একটা ডেলিভারিতে ক্রিজে আসন গেঁড়ে বসা রিজুকে বোল্ড করেন তিনি। এর আগে ৭৪ বলা খেলা এই উইকেটকিপার বুঝতেই পারেননি ডি লিডের সেই বলটা – ফ্লিক করতে গিয়ে আউট হন তিনি।
দুই বল পরে আবারো পাক শিবিরে ডি লিডের আঘাত। এবার ইফতেখার আহমেদকে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তিনি। খানিকটা এক্সট্রা বাউন্সে ইফতেখারকে বোকা বানান এই পেসার, মাত্র নয় রান তুলেই তাই বিদায় নিতে হয় পাক ব্যাটারকে।
শাদাব খান আর নওয়াজের দৃঢ়তায় যখন বড় সংগ্রহের দিকে এগুচ্ছিল পাকিস্তান তখন আবারো বাস ডি লিড ত্রাতা হয়ে আসেন। পর পর দুই বলে শাদাব এবং হাসানকে তুলে নিয়ে পাকিস্তানের ৩০০ ছোঁয়ার স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দেন তিনি। সবমিলিয়ে ৯ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৬২ রানের বিনিময়ে চার উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন ডাচ অলরাউন্ডার।
ব্যাটিংয়েও সতীর্থদের ব্যর্থতার মাঝে একাই লড়ে গিয়েছেন ডি লিড। তাঁর ৬৮ বলে ৬৭ রানের ইনিংসে ভর করে জিততে না পারলেও আত্মবিশ্বাসের রসদ পেয়েছে নেদারল্যান্ডস। বিক্রমাজিৎ এর সঙ্গে এই ব্যাটারের গড়া ৭০ রানের জুটিতে অবশ্য জয়ের সম্ভাবনাও মেশানো ছিল। সেই সম্ভাবনা বাস্তব না হলেও ডি লিডের মাহাত্ম্য কমেনি এক ফোঁটা।
ছয় চার আর দুই ছক্কায় সাজানো এই ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেট প্রায় একশ ছুই ছুই। পাকিস্তানের বিশ্বমানের বোলারদের তিনি যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেছেন পুরোটা সময় তাতে বড়সড় অভিবাদন দেয়া যেতে পারে তাঁকে। সহযোগী দেশের ক্রিকেটাররা সাধারণত নিজেদের ক্রিকেট সামর্থ্য দেখানোর যথেষ্ট সুযোগ পান না।
তাই বিশ্বকাপ তাদের জন্য ছিল বহুল আরাধ্য এক মঞ্চ। সেই মঞ্চেই সেরাটা দিলেন বাস ডি লিড, ব্যাটে বলে অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স উপহার দিলেন ক্রিকেট প্রেমীদের। জিততে পারলো হয়তো আরো ভাল লাগতো তাঁর। তবে যা করেছেন সেটাও সহজসাধ্য নয়।