আগ্রাসী সাকিব, ব্যাটে-আচরণেও

মিরপুরের উইকেট রঙ বদলায় বেলায় বেলায়। দিনের ম্যাচে যেখানে দেখা যায় রান ক্ষরা, রাতে সেখানেই হয় রান বন্যা। এতে অবশ্য বড় ভূমিকা থাকে শিশিরের। আর শিশিরের সাহায্য নিয়েই ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দেখালেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ব্যাটিং ডিসপ্লে।

এতদিন ধারণা করা হচ্ছিল ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক হিসেবে দেখা যাবে সাকিব আল হাসানকে। তবে ম্যাচের আগে টসের সময় সেই ধারণা পাল্টে গেল। কেননা বরিশালের হয়ে আজ টস করতে নেমেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পরে অবশ্য দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রতি ম্যাচের আগেই নিজেদের অধিনায়ক ঠিক করবে দলটি। অর্থাৎ এই দলের নিয়মিত কোন অধিনায়ক নেই।

সাকিব অধিনায়ক হন কিংবা নাই হন, দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকেই। ব্যাট হাতে বরিশালের ইনিংসকে সাজিয়েছেন নিজের মত করে। যদিও আজ উড়ন্ত শুরুই পেয়েছিল বরিশাল। দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও চতুরঙ্গা ডি সিলভা ঝড় তুলেছিলেন পাওয়ার প্লেতে।

সিলেটের বোলারদের দিশেহারা করে তুলেছিল এই জুটি। দুজনে মিলে ওপেনিং জুটিতে এনে দেন ৬৭ রান। তবে দুজন পরপর আউট হয়ে যাওয়ায় খানিকটা চাপে পড়ে বরিশাল। সেখান থেকে আবার বরিশালকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনেন সাকিব আল হাসান। কখনো ঝড় তুলেছেন ইফতেখার আহমেদ, কখনো আবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে।

বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেই তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। মাত্র ২৬ বলেই এই অর্ধশতকের দেখা পান সাকিব আল হাসান। ওদিকে ব্যাট হাতে যেমন আগ্রাসী ছিলেন তেমনি মাঠে তাঁর আচরণেও দেখা গিয়েছে চিরচেনা আগ্রাসী রূপ।

দুপুরের ম্যাচে তামিমের পর এবার সাকিব আল হাসানও বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন আম্পায়ারের সাথে। রেজাউর রহমান রাজার করা একটা বাউন্সার সাকিবের মাথার অনেকখানি উপরে দিয়ে গেলেও ওয়াইড দেননি আম্পায়ার।

সেজন্যই আম্পায়ারের উপর ক্ষেপে যান এই ক্রিকেটার। সাথে সাথেই তেড়ে যান আম্পায়ারের দিকে। ওয়াইড না দেয়ার সিদ্ধান্তটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না সাকিব।তবে, সাথে সাথেই আবার মনোযোগ দেন ব্যাটিংয়ে।

পরের বলেই রাজাকে বিশাল একটা ছয় মেরেছেন সাকিব। ২৬ বলে নিজের অর্ধশতক পূরণ করে ফেলার পর যেন আরো বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন এই ব্যাটার। চার নাম্বারে নামা সাকিব ব্যাট করেছেন ইনিংসের শেষ ওভার অবধি।

তাঁর ইনিংসে সিলেটের সামনে বড় টার্গেট দিতে পেরেছে বরিশাল। উনিশতম ওভারে আউট হবার আগে খেলেন ৬৭ রানের ইনিংস। ব্যাটিং করেছেন প্রায় ২১০ স্ট্রাইকরেটে। সাকিব ৩২ বলে খেলা নিজের এই ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৭ টি চার ও ৪ টি ছয় দিয়ে। শেষ পর্যন্ত মাশরাফি বিন মর্তুজার বলে ক্যাচ আউট হন সাকিব। ততক্ষণের অবশ্য আগ্রাসনের দারুণ এক বিজ্ঞাপনই করে গেলেন যেন।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link