বাংলাদেশের বর্তমান টি-টোয়েন্টি দল একটু আশার আলো দেখাচ্ছে বটে। বিশেষ করে ব্যাটিং ইউনিট। হুটহাট বিপর্যয় ছাপিয়ে ব্যাটাররা যেন টি-টোয়েন্টির মেজাজটা বুঝতে শুরু করেছেন। ছক্কা হাঁকানোর মাত্রা বেড়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। আর ব্যাটারদের ইতিবাচক পরিবর্তনটা প্রভাব ফেলেছে স্ট্রাইকরেটেও।
২০১০-২০১৯ এই সময়কালে টি-টোয়েন্টিতে সর্বাধিক স্ট্রাইকরেট ছিল লিটন দাসের। ১৩৮.৪৬ স্ট্রাইকরেটে তিনি ব্যাটিং করেছিলেন। কিন্তু বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে স্ট্রাইকরেট বেশ নিম্নগামী লিটনের। নিদেনপক্ষে ২০০ বল মোকাবেলা করা ব্যাটারদের সেরা পাঁচে জায়গা হচ্ছে না লিটনের। তার বর্তমান স্ট্রাইকরেট ১২১.৭৭।
যদিও বর্তমান দলে তিনিই সর্বাধিক বল মোকাবেলা করেছেন। ১৪৭৪ বলে লিটনের রান ১৭৯৫। সাম্প্রতিক সময়ে ওপেনিংয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং করা পারভেজ হোসেন ইমনের স্ট্রাইকরেট ১৩৮.৬৬। বর্তমান বাংলাদেশ দলে স্ট্রাইকরেট বিবেচনায় তিনিই রয়েছেন শীর্ষে।
২৬৯ বল মোকাবেলা করে ৩৭৩ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটাও নিজের দখলে রেখেছেন। তার পরের স্থানে ১২৮.৯৩ স্ট্রাইকরেট নিয়ে অবস্থান করছেন তানজিদ হাসান তামিম। এই দুইজনেই তো উদ্বোধনে বাংলাদেশকে এনে দিচ্ছেন উড়ন্ত সূচনা।
সাম্প্রতিক সময়ে টাইগারদের মিডল অর্ডারকে ধুকতে দেখা গেলেও, সেরা পাঁচ স্ট্রাইকরেটের পরবর্তী তিনটি স্থানেই রয়েছেন মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। তৃতীয় স্থানে আছেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। তার স্ট্রাইকরেট ১২৮.৭০। বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক ছক্কা হাঁকিয়েছেন দুইজন, এক জাকের আলী অনিক, দুই তাওহীদ হৃদয়।
এরা স্ট্রাইকরেটের তালিকাতেও যথাক্রমে অবস্থান করছেন। জাকেরের স্ট্রাইকরেট এখানে ১২৬.৩২, হৃদয়ের ১২৫.১৭। খুব বেশি পার্থক্য না থাকলেও হৃদয়ের অফফর্ম বেশ দুশ্চিন্তার খোরাক জোগাচ্ছে বটে। দুই জনেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৩৭টি করে। তবে ৪৫২ বলের মধ্যে ৩৭টি ছক্কা জাকের হাঁকালেও, হৃদয় খেলেছেন ৭১৯ বল।
২০১০-১৯ ওই দশকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট লিটনের ১৩৮.৪৬ হলেও, বাকিদের অবস্থা ছিল শোচনীয়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ব্যাট করেছেন ১২৭.৩৫ স্ট্রাইকরেটে। অন্যদিকে সাকিব আল হাসানের স্ট্রাইকরেট ছিল ১২৪.৫৮। নিদেনপক্ষে ২০০ বল মোকাবেলা করাদের মধ্যে এরাই ছিলেন শীর্ষে।
অতএব বাংলাদেশ দলের আগ্রাসনের মাত্রায় যে পরিবর্তন এসেছে- সেটা নিশ্চিত। এমনকি আগ্রাসী ব্যাটারদের সংখ্যাও বেড়েছে। আর এদের নেতৃত্বে আছেন লিটন দাস। যদিও তিনি রানের অবারিত ধারায় ফিরতে পারেননি এখনও। তবে এই ব্যাটিং ইউনিট একটু ধারাবাহিক এবং আরেকটু আগ্রাসী হতে হবে। কেবল তবেই টি-টোয়েন্টির ফলাফল বাংলাদেশের পক্ষে আসতে শুরু করবে। বোলিং আক্রমণ তো বহুকাল ধরেই ধারাবাহিক।