অবশেষে কেটেছে আফগানিস্তান জুজু। টি-টোয়েন্টি সিরিজে দাপুটে জয়ই পেয়ে গেলো বাংলাদেশ। ব্যাটে-বলে সমানতালে পারফরম করেই জয় ছিনিয়ে নিল সাকিব আল হাসানের দল। আফগানিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করবার মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের সাথে হেড-টু-হেড লড়াইয়ের ব্যবধান কমালো টাইগাররা।
আগের ম্যাচটার শেষে ছিল রোমাঞ্চ। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতেই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের সুখস্মৃতি নেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে। সাকিব আল হাসান তাইতো আগের দিনের মতই টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন। বৃষ্টির আশংকা এদিনও ছিল। তাইতো আগেভাগে বোলিংটা শেষ করতেই চাইলেন সাকিব।
সাকিবের সেই সিদ্ধান্তের পক্ষে তার বোলাররা যথেষ্ট সচেষ্ট। বিশেষ করে পেসাররা। এদিন নতুন বল তুলে দেওয়া হল তাসকিন আহমেদের হাতে। প্রথম ওভারেই তাসকিন সফলতার দেখা পেয়ে যান। তুলে নিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজের উইকেট।
নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের উইকেটও নিজের পকেটে পুরেন নেন তাসকিন। সেখান থেকেই আফগানিস্তানের ব্যাটিং বিপর্যয়ের আরও একটি চিত্রপটের শুরু। নাসুমের এক ওভারেই মোহাম্মদ নবী দু’দফা বেঁচে যান মোহাম্মদ নবী। একবার তার ক্যাচ ফেলে দেন সাকিব, দ্বিতীয় দফা লিটন দাস।
বৃষ্টির বাঁধা এর আগেই এসে গেছে। প্রায় ঘন্টাখানেক বন্ধ ছিল খেলা। এরপর কর্তন করা হয় তিন ওভার। তাতে দ্রুত রান তোলার তাড়া বাড়ে আফগান ব্যাটারদের। আর তাতেই সফলতা এসে ধরা দেয় টাইগার বোলারদের হাতে। দু’দফা বেঁচে গিয়ে ভয়ংকর রুপ তখনই ধারণ করতে শুরু করেন মোহাম্মদ নবী। কিন্তু বেশিদূর এগোতে পারেননি। মুস্তাফিজুর রহমানের শিকারে পরিণত হন।
এরপরের ওভারে সাকিবের জোড়া আঘাত। নাজিবুল্লাহ জাদরান ও ইব্রাহিম জাদরানের উইকেট তুলে নেন টাইগার অধিনায়ক। সেখান থেকেই স্লথ হতে থাকে আফগানদের রান নেওয়ার মাত্রা। কিন্তু শেষ দিকে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও করিম জানাতের ব্যাটে ভর করে ১১৬ রান অবধি পৌছে আফগানরা। বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা গিয়ে দাঁড়ায় ১১৯।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ। সাকিবের ঝুলিতে আগেরদিনের মতই ২টি উইকেট। এদিন রনি তালুকদারের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পান আফিফ হোসেন। তাকে নিয়ে ইনিংস শুরু করেন লিটন দাস। নিজের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসার চেষ্টাই করে গেছেন লিটন দাস।
তিনি চড়াও হন আফগানিস্তানের বোলারদের ওপর। অন্যদিকে আফিফ নিজের আত্মবিশ্বাসের সন্ধানই করে গেছেন। তবে পাওয়ারপ্লে শেষ হতে না হতেই, পরিস্থিতি বদলে যেতে শুরু করে। আগ্রাসী লিটন খানিকটা স্থবির হয়ে পড়েন। মুজিব-উর রহমানের এক ওভারেই ফেরেন লিটন ও আফিফ। পরের ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
বিপর্যয় তখন বাংলাদেশের মাথার উপর। আবারও তাওহীদ হৃদয়ের উপর ভরসা করতে চাইলো দল। কিন্তু দায়িত্বটা নিজের কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। রশিদ খানের বলে লং অন দিয়ে দূর্দান্ত এক ছক্কা হাকিয়ে সাকিব জানান দেন, বিপর্যয় উড়িয়ে দিতে তিনি প্রস্তুত।
শেষ অবধি জল আর তেমন ঘোলা হয়নি। রোমাঞ্চের পারদ ছুঁয়ে দেখেনি আকাশ। যদিও জয় পেতে শেষ ওভার পর্যন্তই অপেক্ষা করতে হয় বাংলাদেশকে। ১৭ তম ওভারের প্রথম বলে মিডউইকেট দিয়ে বাউন্ডারি আদায় করে নেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। এরপরই আকাশ পানে তাকিয়ে স্বস্তির একটা নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি। বাংলাদেশের জয় ৬ উইকেটে।