টেস্টের দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরি এবং সেঞ্চুরির লিস্টে? আছেন কপিল দেব। ঋষাভ পান্তের অত্যাশ্চর্য ইনিংসের সঙ্গে তুলনীয় অন্তত দুটি ইনিংস আছে তাঁর – পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩০ বলে ৫০, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫৫ বলে ৮৯। দুটো ম্যাচেই ভারত কিন্তু হেরেছিল।
একদিনের ম্যাচে দ্রুততম সেঞ্চুরি এবং হাফ-সেঞ্চুরির লিস্টে? সেখানেও আছেন। এখানে অবশ্য দুটোতেই জয় এসেছে – ভারতের একদিনের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুটি জয় – ১৯৮৩ জিম্বাবওয়ে (১৩৮ বলে ১৭৫) এবং ১৯৮২ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে (৩৮ বলে ৭২)।
একটা বছরে সর্বাধিক উইকেট সংগ্রহের লিস্ট? আছেন, দুইবার। ১৯৮৩ তে ৭৫ এবং ১৯৭৯ তে ৭৪ উইকেট দখল করেছিলেন কপিল।
কোনো ভারতীয় পেসারের সিরিজে শ্রেষ্ঠ পারফর্মেন্স? এখানেও জাসপ্রিত বুমরাহর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে পারেন। ১৯৭৯-এর সিরিজে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৭.৬৯ গড়ে ৩২ উইকেট এবং ১৯৮৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১৮.৫২ গড়ে ২৯ উইকেট নিয়েছিলেন কপিল।
যেখানে বুমরাহ বেশ কিছুটা এগিয়ে গড় এবং স্ট্রাইক রেটে, কপিল বেশি মার্কস পাবেন বিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানদের মান ধরলে (জহির আব্বাস, জাভেদ মিয়াঁদাদ, মাজিদ খান, মুদাসসার নজর, ওয়াসিম রাজা, আসিফ ইকবাল, ইমরান খান এবং গর্ডন গ্রিনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স, ভিভ রিচার্ডস, ডেভিড লয়েড, ল্যারি গোমস, জেফরি দুঁজো ধরলে)। আর হ্যাঁ, দুটো সিরিজেই ২০০র ওপর ওভার বল করেছিলেন কপিল।
ইনিংসে শ্রেষ্ঠ বোলিং পারফরম্যান্স? আছেন, তার ৯/৮৩ এ অব্দি কোনো ক্যাপ্টেনের শ্রেষ্ঠ বোলিং পারফরম্যান্স। হেরে যাওয়া দলের হয়েও।
লিস্ট আরও অনেকটাই লম্বা করা যায়। কিন্তু শুধু সংখ্যার মাধ্যমে কপিলকে বোঝানো সম্ভব নয়। একার হাতে তিনি যেভাবে ভারতীয় ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে গেছিলেন তার তুলনা ক্রিকেট ইতিহাসে একমাত্র তিনিই। তার ক্রিকেটের আকর্ষণ এবং আভিজাত্যেরও তুলনা সেদিনও ছিল না, আজও নেই।
তাই ব্যাটিং, বোলিং এবং অবশ্যই ফিল্ডিং – যেদিক দিয়েই আমরা বিচার করি না কেন, কপিলকে দেখতে পাওয়া যাবে। যে বেঞ্চমার্ক তিনি তৈরি করে দিয়ে গেছেন সেটা আজ, ৪০ – ৪৫ বছর পর, অন্যরা একে একে অতিক্রম করছেন। কোনো একজন নয় কিন্তু, বিভিন্ন ক্রিকেটার বিভিন্ন বেঞ্চমার্ক অতিক্রম করছেন।
আপনারা ঋষাভের বিধ্বংসী ব্যাটিং, বুমরাহর সিরিজ জুড়ে প্রাণপণ লড়াই, রবীন্দ্র জাদেজার দুরন্ত ফিল্ডিং দেখছেন, উপভোগ করছেন – আমরা দেখেছি একা কপিলকে এই তিনটেই প্রায় সমান দক্ষতার সঙ্গে করতে। একবার নয়, বারবার। ভারতীয় ক্রিকেটের যুগপুরুষ কপিল দেব এমনি এমনি বনে যাননি।