‘ঝড়’ আর চেতেশ্বর পূজারা – দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক খোঁজারই কোনো মানে হয় না। কারণ, চেতেশ্বর পূজারাকে সবাই চেনে টেস্টের খেলোয়াড় হিসেবেই। টেকনিক আর ধৈর্যের মিশেল ঘটিয়ে বছরের পর বছর তিনি খেলছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট।
কিন্তু এই পূজারাই ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগও (আইপিএল) খেলেছেন। তা সাদা পোশাকে উজ্জ্বল হলেও পূজারারও আছে টি-টোয়েন্টিতে ছোটখাট ঝড়ের ইনিংস, খেলেছেন তিনি স্ট্রাইক রেট বাড়িয়েও। সেগুলো কী?
- স্ট্রাইক রেট – ১৬৬.৬৭
আইপিএল-২০১১ তে ডেকান চার্জার্সের বিপক্ষে পূজারার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু সে ম্যাচে পরে ব্যাট করেছিল। আগে ব্যাট করে ডেকান চার্জার্স ২০ ওভরে স্কোরবোর্ডে তুলেছিল ১৭৫ রান। রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে ব্যাঙ্গালুরু ১১.১ ওভারে ৫৬ রানের মাথাতে হারিয়ে ফেলেছিল ৫ উইকেট।
পঞ্চম উইকেটের পতনের পর ক্রিজে এসেছিলেন চেতেশ্বর পূজারা। এসেই তিনি ক্রিজে থাকা বিরাট কোহলির সাথে দ্রুত ৬২ রানের একটা পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। তবে ১৭ তম ওভারে ডেল স্টেইনের ৩ বলে ২ চার মারার পর তিনি স্টেইনের বলেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। ফিরে যাওয়ার সময় পূজারার রান ১৫ বলে ২৫!
- স্ট্রাইক রেট – ১৭৭.২৭
পূজারার সৌরাষ্ট্রর জন্য ম্যাচটা জেতার মতই ছিল। বিশেষ করে ১৮ ওভারে যখন সিকিম অল আউট হয়ে গেল মাত্র ৭৫ রানে। ৭৬ রান তাড়া করতে নেমে সৌরাষ্ট্রর হয়ে ওপেন করতে নেমেছিলেন চেতেশ্বর পূজারা আর শেলডন জ্যাকসন।
তবে ২৪ রানে জ্যাকসন ফিরে গেলে পূজারা একপ্রান্ত আগলে রেখে দলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন। ৮.৩ ওভারে জয় পাওয়া দলের রানে পূজারার অবদান ছিল চারটি ৪ আর এক ছয়ে ২২ বলে ৩৯!
- স্ট্রাইক রেট- ১৮২.৩৫
পূজারার এ ম্যাচটাও ছিল সৌরাষ্ট্রের হয়ে। তবে সৌরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ দলটি সেদিন ছিল বরোদা। ২০ ওভার ব্যাট করে বরোদা যখন সৌরষ্ট্রকে ১৪৪ রানের টার্গেট দিল, লক্ষ্যে নামা সৌরাষ্ট্র তখন নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাচ্ছে। তবে চার নম্বরে নামা পূজারা ছিলেন দলের মধ্যে ব্যাতিক্রম।
তিনি ক্রিজের এক প্রান্ত আগলে রেখে রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে রান করে যাচ্ছিলেন। তবে পূজারার সেই রানও থেমে যায় ইউসুফ পাঠানের বোলিং ক্যারিশমায়। প্যাভিলিয়নে ফিরে যাবার আগে তিনি করেছেন ১৭ বলে ৩১ রান!
- স্ট্রাইক রেট – ১৯৫.৪৫
মহারাষ্ট্র-সৌরাষ্ট্রর সেই ম্যাচে মহারাষ্ট্র ১৮.৩ ওভারে অল আউট হয়ে গেছিল মাত্র ১১৬ রানে। ১১৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পূজারা ব্যাট করতে নামেন ৪ নম্বরে, তাও ৯ ওভার পর যখন দলের রান ২ উইকেট হারিয়ে ৫৮।
ক্রিজে নেমেই তিনি ব্যাট চালিয়ে খেলতে শুরু করেন, মহারাষ্ট্র বোলাররাও পূজারাকে ফেরানোর কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছিল না। শেষ অবধি অবশ্য কেউ আর পূজারাকে আউট করতে পারেনি, ১৫.৩ ওভারে দলকে জিতিয়ে দিয়েই মাঠ ছেড়েছিলেন চেতেশ্বর পূজারা। জিতে মাঠ ছাড়ার সময় পূজারার রান পাঁচ বাউন্ডারি আর এক ওভার বাউন্ডারিতে ২২ বলে ৪৩!
- স্ট্রাইক রেট – ২০০
আইপিএলের ২০১০ সালের আসরের ঘটনা। চেতেশ্বর পূজারা সেসময় খেলতেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে। টসে হারা কলকাতা সেবার আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে করেছিল ১৬০ রান। চেতেশ্বর পূজারা এই ইনিংসেই ব্যাট করতে নেমেছিলেন সাত নম্বরে।
যদিও ডেথ ওভারে অল্প কিছু সময় তিনি ক্রিজে ছিলেন, তাও তাতেই তিনি ৮ বলে করেছিলেন ১৬ রান যেটা কলকাতার রানকে শেষ দিকে বাড়িয়ে নিতে সাহায্য করেছিল।