অবশেষে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) রোলার কোস্টার রাইড শেষ হল; সমালোচনা ছিল বিপিএলকে ঘিরে, আবার পিচ সহ বেশকিছু কারণে প্রশংসাও পেয়েছিল। তবে সবকিছুর উপরে পারফরম্যান্সের গুরুত্ব, তাই তো পারফরমারদের নিয়ে সেরা একাদশ তৈরি করলো খেলা ৭১।
- তামিম ইকবাল (ফরচুন বরিশাল) – অধিনায়ক
চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক, ফাইনালের ম্যাচসেরা তামিম ইকবালকে সেরা একাদশে রাখতেই হবে। পুরো আসর জুড়ে তিনি ছিলেন ইম্প্যাক্টফুল। যে ম্যাচে যেভাবে খেলা উচিত ছিল সেভাবেই খেলেছেন তিনি, তরুণদের শিখিয়েছেন কিভাবে টি-টোয়েন্টি খেলতে হয় – টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকায় তাঁর অবস্থান চার নম্বরে। তিনিই দলের অধিনায়ক।
- নাইম শেখ (খুলনা টাইগার্স)
মাত্র দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে বিপিএলের এক আসরে ৫০০ এর বেশি রান করার রেকর্ড গড়েছেন নাইম শেখ। এনসিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার পর বিপিএলেও হয়েছেন সেরা ব্যাটার। খুলনার অভাবনীয় সাফল্যে তাঁর অবদান তাই অনস্বীকার্য। আর এই ফর্ম ধরে রাখতে পারলে হয়তো জাতীয় দলেও দেখা যাবে তাঁকে।
- ডেভিড মালান (ফরচুন বরিশাল)
বিপিএল দিয়েই উত্থান ঘটেছিল ডেভিড মালানের, সেই ঋণ বোধহয় এবারের আসরে শোধ করেছেন তিনি। বরিশালের হয়ে খেলতে নেমে রান করেছেন মেশিনের মতই, ষাটের বেশি গড়ে মাত্র নয় ইনিংসেই ৩১৬ রান করেছেন মালান।
- গ্রাহাম ক্লার্ক (চিটাগং কিংস)
এবারের বিপিএলে হৃদয় জিতে নিয়েছেন গ্রাহাম ক্লার্ক। অখ্যাত তারকা হিসেবে দেশের মাটিতে পা রাখলেও ফিরছেন একগাদা ক্রিকেটপ্রেমীর ভালবাসা নিয়ে। ভালবাসা পাবেন না কেন, টুর্নামেন্টের তৃতীয় সেরা ব্যাটার তিনি; সেই সাথে আছে একটা শতক।
- শামীম হোসেন (চিটাগং কিংস)
বিপিএল-২০২৫ এ বাংলাদেশের সেরা প্রাপ্তি ফিনিশার শামীম হোসেন। একাই চিটাগংয়ের অলললমিডল অর্ডার সামলেছিলেন তিনি। ১৬০ স্ট্রাইক রেটে ৩৫২ রান করা মুখের কথা নয় – টুর্নামেন্টের সেরা একাদশে তাই রাখতেই হয় তাঁকে।
- খুশদিল শাহ (রংপুর রাইডার্স)
ব্যাটে বলে পরিপূর্ণ অলরাউন্ডার রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন খুশদিল শাহ। আট ইনিংসে ২৯৮ রান করার পাশাপাশি ১৭ উইকেট নিয়ে রীতিমতো তান্ডবের সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। তাঁর অনুপস্থিতিই মূলত রংপুর রাইডার্সের ভারসাম্য নষ্ট করেছে, যার মাশুল দিতে হয়েছে এলিমিনেটর থেকে বাদ পড়ে।
- মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন (খুলনা টাইগার্স)
সদ্য সমাপ্ত বিপিএল দিয়ে নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছেন মাহিদুল অঙ্কন। ফিনিশারের ভূমিকায় তিনি ছিলেন অবিশ্বাস্য, বলে কয়ে হাঁকিয়েছেন একের পর এক ছক্কা। এই কাল্পনিক একাদশের উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব থাকবে তাঁর ওপর।
- মেহেদি হাসান মিরাজ (খুলনা টাইগার্স)
দলকে কোয়ালিফায়ার পর্যন্ত এনেছেন, ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছেন – সাকিব আল হাসান ছাড়া অন্য কোন বাংলাদেশীকে এভাবে অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স উপহার দিতে প্রথম দেখলো লাল-সবুজের সমর্থকেরা। ৩৫০ এর বেশি রান, সেই সাথে দশের বেশি উইকেট; বিপিএলে এমন ডাবলের কীর্তিও খুব বেশি তারকার নেই।
- ফাহিম আশরাফ (ফরচুন বরিশাল)
খুশদিল শাহয়ের মতই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফ নিজের জাত চিনিয়েছেন এবারের আসরে। পুরো আসর জুড়ে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন তিনি; তবে মূল কাজটা করেছেন বল হাতে, ঝুলিতে পুরেছেন বিশ উইকেট। তাঁর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে ফেরার ক্ষেত্রে এই পারফরম্যান্সই সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর ছিল।
- তাসকিন আহমেদ (দুর্বার রাজশাহী)
আসরের সবচেয়ে বিতর্কিত দলের হয়েও খেলে তাসকিন আহমেদ ছিলেন নিজে ছিলেন অবিশ্বাস্য রকমের উজ্জ্বল। বিপিএল ইতিহাসেরই সেরা বোলিং ফিগারের মালিক বনে গিয়েছেন তিনি, সেই সাথে গড়েছেন এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড।
- খালেদ আহমেদ (চিটাগং কিংস)
শোককে শক্তিতে কিভাবে রূপ দিতে হয় সেটাই হয়তো শিখিয়েছেন খালেদ আহমেদ। টুর্নামেন্ট চলাকালীন মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়েছিলেন তিনি, সেই শোককে সঙ্গী করেই লড়ে গিয়েছেন ফাইনাল পর্যন্ত – দলগতভাবে শেষটা সুন্দর না হলেও ২০ উইকেটের মাইলফলক ঠিকই পূর্ণ করেছেন এই পেসার।