এক সময় ক্রিকেট ছিল স্রেফ উচ্চ শিক্ষিতদের খেলা।
অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে ক্রিকেট খেলতেন তাঁরা। এই বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় ছাত্ররাই খেলতেন ক্রিকেট। সেই দিন বিশ্বজুড়েই চলে গেছে।
এখন ক্রিকেট এতটাই পেশাদার খেলা যে, পাশাপাশি খুব ভালো পড়াশোনা করা একটা কঠিন ব্যাপার। ক্রিকেটই এখন জীবনের সবটা সময় নিয়ে নেয়। তারপরও সবাই থেমে নেই। এখনও অনেকে ক্রিকেটের পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যান। ক্রিকেট মাঠে সেই আদিকাল থেকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার দেখা গেছে। এমন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছে যাদের ঝুলিতে আছে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি। আর চাইলে ক্রিকেট মাঠের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে চাইলে দিব্যি একটা একটা একাদশ বানিয়ে ফেলা যায়।
- কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত (ভারত)
চেন্নাইয়ের একটি কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছিলেন কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত। এই ইঞ্জিনিয়ার ব্যাট হাতেও ছিলেন বেশ সফল। ভারতের হয়ে বেশ লম্বা একটা সময় ওপেন করেছিলেন। ১৪৬ ওয়ানডে ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে চার হাজারের বেশি রান। আমাদের এই একাদশেও ওপেনার হিসেবে থাকছেন তিনি।
- সাঈদ আনোয়ার (পাকিস্তান)
সাঈদ আনোয়ারের ঝুলিতেও আছে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিগ্রি। পাকিস্তানের অন্যতম সফল এই ওপেনারও তাই ওপেন করছেন এই একাদশের হয়ে। পাকিস্তানের হয়ে ৫৫ টেস্ট ও ২৪৭ টি ওয়ানডে মাচ খেলেছেন এই ওপেনার। ২৪৭ ওয়ানডে ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ৮৮২৪ রান।
- সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুয়ে)
জিম্বাবুয়ের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সিকান্দার রাজাও একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিন ফরম্যাটেই জিম্বাবুয়ের ভরসার নাম সিকান্দার রাজা। ব্যাট ও বল দুই ডিপার্টমেন্টেই সমান কার্যকর এই ক্রিকেটার। ১০৫ ওয়ানডে ম্যাচে প্রায় তিন হাজার রানের পাশাপাশি তাঁর ঝুলিতে আছে ৬২ টি উইকেট।
- সরফরাজ আহমেদ (পাকিস্তান): অধিনায়ক
পাকিস্তানের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের ঝুলিতেও আছে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি। দেশটি সাবেক এই তিন ফরম্যাটেই পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন। ৪৯ টেস্ট ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ২৬৫৭ রান। পাকিস্তানের হয়ে তিনি অধিনায়ক হিসেবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছেন, ফলে এই একাদশে তিনিই অধিনায়ক।
- রশিদ লাতিফ (পাকিস্তান): উইকেটরক্ষক
পাকিস্তানের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানও দেশটির হয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন লম্বা সময়ে। ৩৭ টেস্ট ম্যাচে ২৮.৭৭ গড়ে করেছেন ১৩৮১ রান। এছাড়া পাকিস্তানের হয়ে ১৬৬ টি ওয়ানডে ম্যাচও খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। তাঁর ঝুলিতেও আছে ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিগ্রি।
- মিশেল স্যান্টনার (নিউজিল্যান্ড)
নিউজিল্যান্ডের ভালো একটি ইউনিভার্সিটি থেকে নিজের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নিয়েছিলেন স্যান্টনার। দেশটির এই বোলিং অলরাউন্ডার তিন ফরম্যাটেই নিউজিল্যান্ডের ভরসার জায়গা। ৭৫ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ৭৫ টি উইকেটের পাশাপাশি আছে ৯২৭ রান। ফলে এই একাদশের লোয়ার মিডল অর্ডারের দায়িত্বে থাকবেন তিনি।
- রবিচন্দ্রন অশ্বিন (ভারত)
ভারতের বোলিং লাইন আপের মূল ভরসার জায়গা রবিচন্দ্রন অশ্বিন। অবশ্য ব্যাট হাতেও তিনি যথেষ্ট কার্যকর। ৭৯ টেস্টে এই অলরাউন্ডারের ঝুলিতে আছে ৪১৩ উইকেট। অন্যদিকে, ব্যাট হাতে করেছেন ২৬৮৫ রান। ১১১ ওয়ানডেতেও অশ্বিনের ঝুলিতে আছে ১৫০ উইকেট। চেন্নাইয়ের একটি কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিলেন অশ্বিনও।
- অনিল কুম্বলে (ভারত)
ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনারদের একজন অনিল কুম্বলে। ১৩২ টেস্টে কুম্বলের ঝুলিতে আছে ৬১৯ উইকেট। ওদিকে ২৭১ ওয়ানডে মাচেও ৩৩৭ উইকেটের মালিক এই স্পিনার। ভারতের সর্বকালের সেরা এই স্পিনারের ঝুলিতেও আছে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি।
- জভাগাল শ্রীনাথ (ভারত)
টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই ভারতকে সার্ভিস দিয়েছেন এই স্পিনার। ৬৭ টি টেস্টের পাশাপাশি খেলেছেন ২২৯ টি ওয়ানডে ম্যাচ। সবমিলিয়ে তাঁর ঝুলিতে আছে পাঁচশোর বেশি উইকেট। পাশাপাশি শ্রীনাথের ঝুলিতে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিও ছিল।
- সৌরভ নেত্রভেলকার (আমেরিকা)
সৌরভ ভারতে জন্ম নেয়া ক্রিকেটার তবে বর্তমানে তিনি আমেরিকার হয়ে খেলছেন। দেশটির হয়ে ১৩ ওয়ানডে ও ৮ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন এই বোলার। যদিও এর আগে তিনি ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলেছেন। সে যাই হোক, তাঁর ঝুলিতে আছে ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিগ্রি।
- এরাপলী প্রসন্ন (ভারত)
ভারতের এই স্পিনারের ঝুলিতেও আছে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিগ্রি। ওদিকে ভারতের হয়ে মোট ৪৯ টি টেস্ট খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। সেখানে তাঁর ঝুলিতে আছে ১৮৯ টি উইকেট।