অত্যাশ্চর্য আক্রমণের রাজা

ওয়ানডে যুগের শুরুর সময় তো বাদই দিলাম, আশি কিংবা নব্বইয়ের দশকেও তখন ক্রিকেটে বোলারদের শাসন চলতো। নতুন বলে উইকেট বাঁচিয়ে ক্রিজে টিকে থাকাই ছিলো ব্যাটসম্যানদের মূল লক্ষ্য। ব্যাটসম্যানদের এই রক্ষণাত্মক খেলাকে ছাপিয়ে বিধ্বংসী ক্রিকেট খেলা শুরু করেন শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার সনাথ জয়সুরিয়া। আধুনিক ব্যাটিংয়ের শুরুটা তাঁর হাত ধরেই আমূল পাল্টে যায়।

ওয়ানডে যুগের শুরুর সময় তো বাদই দিলাম, আশি কিংবা নব্বইয়ের দশকেও তখন ক্রিকেটে বোলারদের শাসন চলতো। নতুন বলে উইকেট বাঁচিয়ে ক্রিজে টিকে থাকাই ছিলো ব্যাটসম্যানদের মূল লক্ষ্য। ব্যাটসম্যানদের এই রক্ষণাত্মক খেলাকে ছাপিয়ে বিধ্বংসী ক্রিকেট খেলা শুরু করেন শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার সনাথ জয়সুরিয়া। আধুনিক ব্যাটিংয়ের শুরুটা তাঁর হাত ধরেই আমূল পাল্টে যায়।

বোলারদের উপর শুরু থেকেই তাণ্ডব চালিয়ে রান তোলায় মরিয়া থাকতেন তিনি! তখনও ক্রিকেটে ব্যাটিং পাওয়ারপ্লের প্রচলন হয়নি, তবে ছিল প্রথম ১৫ ওভারের ফিল্ডিং বাধ্যবাধকতা। তবে, সেটা থাকুক চাই না থাকুক সনাথ জয়াসুরিয়া তার আগ্রাসী ব্যাটিং দেখিয়ে ২২ গজ মাতিয়ে রাখতেন। ‘অলরাউন্ডার’ বলার কারণ, আদতে বাঁ-হাতি স্পিনারই ছিলেন সনাথ, সেখান থেকে কালক্রমে বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম মারকুটে ওপেনার বনে যান।

১৯৯৬ বিশ্বকাপে লঙ্কানদের শিরোপা জয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদানের কথা বললে নিশ্চই অরবিন্দ ডি সিলভার কথা আসবে। তবে শ্রীলঙ্কার শিরোপা জয়ের পেছনের অন্যতম সেরা কারিগর ছিলেন জয়াসুরিয়া। শুরুতেই যেটা বললাম ওই সময়ে শুরু থেকেই অ্যাটাকিং মাইন্ডসেট নিয়ে কোনো দলই ব্যাট করতে নামতো না!

যেখানে সেই সময়ে প্রথম ১৫ ওভারে গড়ে ৬০ রান করতো ব্যাটিং দল। সেখানে ৯৬ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা প্রথম ১৫ ওভারে ভারতের বিপক্ষে ১১৭, কেনিয়ার বিপক্ষে ১২৩ আর কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন ১২১ রান! এই ব্যাটিং তাণ্ডবের পেছনের মূল কারিগরটাই ছিলেন জয়াসুরিয়া।

কেনিয়ার বিপক্ষে জয়াসুরিয়ার ২৭ বলে ৪৪ রানের শুরুর ঝড়ে ৫০ ওভারে ৩৯৮ রান করেছিলো লংকানরা। যেটা সে সময়ের বিশ্ব রেকর্ড ছিলো। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে জয়াসুরিয়ার ১৩ চার আর ৩ ছক্কায় ৪৪ বলে ৮২ রানের বিধ্বংসী ব্যাটিং! ইংলিশ বধের কাব্য রচনা করে লঙ্কানদের সেমিফাইনালে নিয়ে যান জয়াসুরিয়া। সেমিফাইনালে ব্যাট হাতে দ্রুত আউট হলেও বল হাতে মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন, সাথে দুই ক্যাচও ধরেন! আর লংকানরা পৌঁছে যায় ফাইনালে।

১৩১ স্ট্রাইক রেটে ৬ ম্যাচে ২২১ রান সাথে পাঁচ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও জিতেছিলেন এই লঙ্কান অলরাউন্ডার। শ্রীলঙ্কার সেই শিরোপা জয়ে জয়াসুরিয়ার অবদানটা অনেক।

৩০ জুন, ১৯৬৯।

শ্রীলঙ্কার মাতারায় জন্মগ্রহণ করেন সনাথ জয়াসুরিয়া। যাকে ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বকালের সেরাদের একজন ধরা হয়। তাঁর পাওয়ারফুল স্টাইক আর ম্যাচ জয়ী অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্যই তিনি সর্বকালের সেরাদের একজন। মূলত আধুনিক ক্রিকেটের যেই বিধ্বংসী ব্যাটিং সেটা জয়াসুরিয়ার হাত ধরেই শুরু হয়েছিলো।

তবে জয়াসুরিয়ার ক্যারিয়ারটা শুরু হয়েছিলো একজন বাঁ-হাতি স্পিনার হিসেবেই! যিনি কিনা টুকটাক ব্যাট হাতেও কার্যকর ব্যাপারটা ছিলো এমনই। কিন্তু তিনি নিজের ধ্বংসাত্মক ব্যাটিং দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন তার ব্যাটিং সামর্থ্য। মিডল অর্ডার থেকে তিনি উঠে এসেছিলেন ওপেনিংয়ে। অবশ্য এই ওপেনিংয়ে আসার পেছনেও কারণ আছে। ১৯৯২ এর বিশ্বকাপে মার্ক গ্রেটব্যাচ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দেখানো শুরু করেন। প্রথম ১৫ ওভারের ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশন কাজে লাগানোর জন্য। পিঞ্চ হিটার কথাটা তখনই প্রচলিত হয়।

সেটা দেখার পরই অনেক দলই ওয়ানডেতে এই অ্যাপ্রোচটা গ্রহণ করতে চাইলো। শ্রীলঙ্কার হাতে তখন এই কাজের জন্য সেরা অপশন ছিলো সনাথ জয়সুরিয়া। ১৯৯৩ সালের হিরো কাপের ভারতের বিপক্ষে প্রথমবার ব্যাট হাতে ওপেন করেন তিনি। এরপর নিজেকে এই পজিশনের জন্য প্রমাণ করতে খুব বেশি সময় নেননি তিনি। নিজের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দিয়ে নজর কেঁড়েছিলেন সবার। এরপর ১৯৯৬ সালে তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স আর ওপেনিংয়ে ব্যাটিং তাণ্ডব তো সবারই জানা। নিজের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং তাণ্ডব দিয়েই আখ্যা পেয়েছিলেন ‘মাতারা হ্যারিকেন’।

একটু পেছনে ফেরা যাক। মাতারার সেন্ট সারভেটাস কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন জয়াসুরিয়া। সেখানেই তার প্রিন্সিপাল এবং কোচ তার ক্রিকেটের প্রতিভা সম্পর্কে জানতে পারে। তিনি তার কলেজের হয়ে ক্রিকেট টুর্নামেন্টে অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্বও দিয়েছেন। ১৯৮৮ সালে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য তিনি বর্ষসেরা স্কুল ক্রিকেটারের পুরস্কার পন। ওই বছর তিনি সেরা ব্যাটসম্যান এবং একই সাথে সেরা অলরাউন্ডারের পুরস্কার জেতেন। এরপর তাঁর নজরকাড়া পারফরম্যান্স তাকে টেনে নেয় শ্রীলঙ্কা দলে।

১৯৮৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে শ্রীলঙ্কার হয়ে খেলার সুযোগ পান। এর কিছুদিন পর পাকিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা বি দলের হয়ে সফরে যান। সেখানে দুইটি অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি করে নির্বাচকদের নজরে আসেন তিনি। এরপর আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ১৯৮৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে জাতীয় দলে ডাক পান জয়সুরিয়া। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেলবোর্নে বক্সি ডেতে ওয়ানডে অভিষেক হয় তাঁর। এরপর ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টনে টেস্ট অভিষিক্ত হন তিনি।

জয়সুরিয়া তার ব্যাটিং টেকনিক দিয়ে শুরু থেকেই বোলারদের উপর চড়াও হতে থাকেন। ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশনের কারণে সহজেই ফিল্ডারদের মাথায় উপর দিয়ে কিংবা ফাঁক গলে বলকে সীমানা ছাড়া করতেন তিনি। যেখানে এর আগে কোনো আসরেই শ্রীলঙ্কা প্রথম পর্ব পার হতে পারেনি! সেখানে ৯৬ এর বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচ না হেরেই টুর্নামেন্টে শিরোপা জেতে তারা। বর্তমানে আধুনিক ক্রিকেটের টি-টোয়েন্টিতে যেই বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের মাইন্ডসেট দেখা যায় সেটা জয়সুরিয়াই ৯০ এর দশকে তৈরি করেছেন।

গ্লেন ম্যাকগ্রার মতে সনাথ জয়াসুরিয়াকে বল করাই সবচেয়ে কঠিন! এক সাক্ষাৎকারে জয়সুরিয়া জানিয়েছিলেন তাঁর জন্য সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ হলো ওয়াসিম আকরাম, শেন ওয়ার্ন, গ্লেন ম্যাগ্রা, কোর্টনি ওয়ালশ ও কার্টলি অ্যামব্রোসের বল মোকাবেলা করা।

ওয়ানডেতে সবচেয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডটি নিজের নামে করে রেখেছেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১৭ বলের সেই ব্যাটিং তাণ্ডবে করা রেকর্ড ১৯ বছর অক্ষুণ্ণ ছিলো। সময়ের বিচারে সেটিকেই ওয়ানডে ইতিহাসের দ্রুততম ফিফটি হিসেবে ধরা হয়। ৪৮ বলে পাকিস্তানের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরিটিও লঙ্কানদের ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রুততম। দ্রুততম দেড়শোর রেকর্ডটিও (৯৫ বল) তাঁরই দখলে। ওয়ানডে ইতিহাসে জয়াসুরিয়া একমাত্র ক্রিকেটার যিনি টানা দুইটি দেড়শো করেছেন।

২০০০ সালে শারজাহতে ভারতের বিপক্ষে তার করা ১৮৯ রানের সেই মহাকাব্যিক ইনিংসটি আজও শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের সেরা ওয়ানডে ইনিংস। তখনকার সময়ে এটি ছিলো তৃতীয় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান। এছাড়াও প্রথম শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার হিসেবে জয়সুরিয়া ১০০ টেস্ট খেলার গৌরব অর্জন করেন। ভারতের বিপক্ষে তার খেলা ৩৪০ রানের ইনিংসটি তখনকার সময়ে লঙ্কানদের টেস্ট ক্রিকেটের সেরা ইনিংস!

পরবর্তীতে মাহেলা জয়বর্ধনে ৩৭৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পথে সেই রেকর্ড ভেঙ্গে দেন।২০০৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের বিদায়ী ম্যাচে ৭৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি। যেখানে জেমস এন্ডারসনকে ছয় বলে ছয়টি চার মারেন তিনি।

২০০৬ এর শেষের দিকে লঙ্কানরা ওয়ানডে সিরিজের জন্য নেদারল্যান্ডস সফরে যায়। সেখানে প্রথম ম্যাচেই ১০৪ বলে ১৫৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। সেই ইনিংসের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কা ৯ উইকেটে ৪৪৩ রানের রেকর্ড রান সংগ্রহ করে। ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৪৩৮ রান টপকে নতুন রেকর্ড গড়ে লংকানরা। অবশ্য ওয়ানডেতে বর্তমানে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি ইংলিশদের দখলে।

জয়াসুরিয়া একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে এক ওভারে ৩০ বা তার বেশি রান নিয়েছেন মোট দুইবার। অবশ্য এক ওভারে সর্বোচ্চ রান নেওয়ার রেকর্ডটাও তার ছিলো! ২০০৭ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের সাথে এক ওভারে ৩৬ রান নিয়ে সেটি ভেঙে দেন হার্শেল গিবস।

২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তিনি অনবদ্য পারফরম্যান্স করেন। সাধারণত তিনি কোকাবুরার তৈরি বিশেষ ব্যাটে খেললেও সেই টুর্নামেন্টে তিনি রিবুকের স্পনসর করা ব্যাট নিয়ে খেলতে নামেন। সেই ব্যাট দিয়ে গ্রুপ পর্বে দুইটি ফিফটি করেন তিনি। অবশ্য একটি লজ্জার রেকর্ডও গড়েছিলেন! পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৬৪ রান দিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার তালিকায় পাঁচ নম্বরে নাম উঠান তিনি।

প্রায় দুই দশক ধরে ২২ গজ মাতিয়েছেন তিনি! জয়সুরিয়া একমাত্র ক্রিকেটার যিনি ওয়ানডেতে ১২ হাজারেরও বেশি রান করেছেন এবং ৩০০ এরও বেশি উইকেট শিকার করেছেন। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে তাকে মোস্ট ভ্যালুয়েবল খেলোয়াড় ঘোষণা করা হয়। এবং উইজডেনের বর্ষসেরা পাঁচ ক্রিকেটারের একজন নির্বাচিত হন তিনি। ওয়ানডেতে চারবার নিজের স্কোরকে তিনি ১৫০-এর ওপর নিয়ে গেছেন। এখানে তিনি ওয়ানডের ইতিহাসে আছেন দ্বিতীয় স্থানে। তিনি কমপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন, এমন শতকরা আশি ভাগ ম্যাচে জিতেছে শ্রীলঙ্কা।

জয়সুরিয়া ১৯৯৯-২০০৩ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার হয়ে অধিনায়কত্ব করেন। ২০০৭ সালে টেস্ট আর ২০১১ সালে বিদায় নেন সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেট থেকে। ২০১৩ সালে ক্রিকেট শ্রীলঙ্কা (এসএলসি) তাকে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করে। এবং ২০১৪ সালে তিনি প্রধান নির্বাচক থাকা অবস্থায় লঙ্কানরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় পায়।

জয়াসুরিয়া ১১০ টেস্টে ৪০ গড়ে ৬৯৭৩ রান করেছেন। ৩১ ফিফটির সাথে করেছেন ১৪টি সেঞ্চুরি। ৪৪৫ ওয়ানডে ম্যাচে ৩২.৩৬ গড়ে রান করেছেন ১৩৪৩০। সেঞ্চুরির পাশাপাশি করেছেন ৬৮টি ফিফটি। ৩১ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২৩ গড়ে করেছেন ৬২৯ রান, আছে চারটি ফিফটি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বল হাতে টেস্টে ৯৮, ওয়ানডেতে ৩৬৮ আর টি-টোয়েন্টিতে শিকার করেছেন ২৪ উইকেট। ঘরোয়া ক্রিকেটে ৯৩৩ ম্যাচে ৩৩ হাজারেরও বেশি রান করেছেন তিনি! ৬১ সেঞ্চুরির পাশাপাশি ১৬৪ ফিফটি নিজের নামে করেছেন তিনি। বল হাতে ঘরোয়া ক্রিকেটে ৬৯৫ উইকেট। ৭ বার শিকার করেছেন পাঁচ উইকেট।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৯ রানে নেওয়া ৬ উইকেট ওয়ানডেতে তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ভারত এবং বাংলাদেশকে পেলেই যেন তাঁর ব্যাট জ্বলে উঠতো। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫৬ আর ভারতের বিপক্ষে তার ব্যাটিং গড় হলো ৪০! তিনি ওয়ানডে ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০ হাজার রান আর ৪০০ উইকেট নেওয়া দুইজন খেলোয়াড়ের একজন হলে সনাথ জয়সুরিয়া।

বিতর্কও কম ছুঁয়ে যায়নি তাঁকে। পারিবারিক জীবনে কখনোই থিতু হতে পারেননি। তৃতীয় স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ির পর বেশ বিতর্কও ছড়ায় সনাথের পারিবারিক জীবন। ২০১৮ সালে তাঁর জীবনে আসে আইসিসির দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা। আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিটের তদন্তে উঠে আসে, তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেছেন সাবেক এই লঙ্কান অধিনায়ক। তাতে গোটা ক্যারিয়ারের সম্মানের পাহাড়ে ধস নামে।

একটা অন্যরকম তথ্য দিয়ে শেষ করি। ক্যারিয়ারে মোট ৫৩ বার রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেছেন মাতারা, মানে ডাক মেরেছেন। এখানে রেকর্ডের পাতায় তাঁর অবস্থান তৃতীয়। ওপরের দু’জন হলেন বোলার – সতীর্থ মুত্তিয়া মুরালিধরণ (৫৯) ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোর্টনি ওয়ালশ (৫৪)।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...