জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন; শুরুর একাদশে জায়গা হারিয়েছেন এমনটা নয়, স্কোয়াডেই তাঁকে রাখেননি কোচ। কিন্তু দমে যাননি রাফিনহা, বার্সেলোনার হয়ে লিখেছেন ঘুরে দাঁড়ানোর কাব্য। আর সেই কাব্যে রেশ এবার দেখা গেল ব্রাজিলের জার্সিতেও। বাদ পড়ার কয়েক মাসের ব্যবধানে তিনি বনে গেলেন সেলেসাও আক্রমণভাগের নেতা।
পেরুর বিপক্ষে এই তারকা খেলেছেন ‘নাম্বার টেন’ রোলে। তবে নির্দিষ্ট কোন পজিশনে আটকে ছিলেন না তিনি; কখনো লেফট উইং, কখনো রাইট উইং আবার কখনো পুরাদস্তুর স্ট্রাইকার হয়ে ডিফেন্ডারদের পরীক্ষা নিয়েছেন।
৩৮ মিনিটের মাথায় স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন বার্সা ফরোয়ার্ড। দ্বিতীয়ার্ধেও আরেকবার সেই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। পেনাল্টি থেকে জোড়া গোল করেছেন সেটা ভেবে বিদ্রুপের হাসি হাসলে ভুল করবেন অবশ্য। কেবল গোল করেননি তিনি, পিউর ফুটবল খেলেছেন তিনি। তাঁর সরব উপস্থিতির কারণেই অনেক দিন পর জীবন্ত মনে হয়েছে ব্রাজিলের মিডফিল্ডকে।
হ্যাটট্রিকও পেতে পারতেন রাফিনহা, তবে গোলবারের বাঁধায় সম্ভব হয়নি সেটা। অবশ্য তাঁর কারণে আড়ালে পড়ে গিয়েছেন আগের ম্যাচের নায়ক লুইস হেনরিক। বদলি হিসেবে নেমে এদিনও আলো ছড়িয়েছেন তিনি, বলতে গেলে মাঠে নেমেই ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন।
মাঠের নামার এক মিনিটের মধ্যেই ডান দিক দিয়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স লাইনকে ফাঁকি দেন হেনরিক, এরপর ডি বক্সে ক্রস আর আন্দ্রেস পেরেইরার অ্যাক্রোবেটিক ফিনিশিং – বাঁধিয়ে রাখার মত একটা স্থিরচিত্র বটে। ব্রাজিলের জয় ততক্ষণে নিশ্চিত, কিন্তু বোতাফোগোর তরুণকে বোঝাবে কে?
তিন মিনিট পরে নিজেই নাম লেখালেন স্কোরশিটে, একেবারে আগের ম্যাচের মতই বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। এরপর কাটব্যাক করে বাম পায়ের শটে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন পেরুর জাল – ভিনিসিয়াস, রাফিনহার মত আরো একটা মারণাস্ত্র পেয়ে গেল সেলেসাওরা।
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চার নম্বরে উঠে এসেছে পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ফলে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে শঙ্কার মেঘ তৈরি হয়েছিল কয়েক মাস আগে সেটা এখন উড়ে গিয়েছে বহু দূর। সমর্থকদের মনেও বইতে শুরু করেছে স্বস্তির হাওয়া।