এক ম্যাচের নেতা!

ভারতে ক্রিকেট প্রতিভার কোনো অন্ত নেই। এত বিশাল একটা দেশে ক্রিকেটারের কোনো অভাব হওয়ারও কথা নয়। প্রতি বছর দেশটাতে অনেকেরই অভিষেক হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। কেউ সেখানে লম্বা দৌড়ে টিকে যান, কালক্রমে পান ক্রিকেট গ্রেটের মর্যাদা। কারও দৌড় হয়তো থেমে যায় অল্পতেই। এখানে সবার পক্ষে শচীন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলি, সৌরভ গাঙ্গুলি বা মহেন্দ্র সিং ধোনির মত তারকা হয়ে ওঠা হয় না। আবার অমল মজুমদার, রাজেন্দ্র গোয়েলদের মত অনেকেই প্রতিভা ও দক্ষতা থাকার পরও কখনো নিজেদের প্রমাণের মঞ্চটাই পান না।

আর অধিনায়কত্বের ব্যাপারটা অনেক টেকনিক্যাল। যেমন, ধারণা করা হয়েছিল শচীন টেন্ডুলকার হবেন গ্রেট অধিনায়কদের একজন। সেটা হয়নি। অথচ, যাকে অধিনায়ক করায় অনেক সমালোচনা হয়েছিল বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সেই মহেন্দ্র সিং ধোনি নিজেকে বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

অধিনায়কত্ব নিয়েই যখন কথা, তখন এমন কয়েকজন অধিনায়ক এসেছেন যারা মাত্র এক ম্যাচে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওয়ানডেতে ভারতের এমন কয়েকজন অধিনায়ককে নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন। এর মধ্যে অধিকাংশই নিয়মিত অধিনায়কের ইনজুরি বা বিশ্রামজনিত কারণে দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

  • গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ

এই প্রজন্মের অনেকেই হয়তো জানেন না ব্যাটসম্যান হিসেবে গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ কথাটা জিনিয়াস ছিলেন। ভারতের ইতিহাসেরই অন্যতম নান্দনিক ব্যাটসম্যান তিনি, বিশেষ করে টেস্টে। কয়েকটা ওয়ানডেও খেলেন তিনি। একবার তো অধিনায়ক হিসেবেই স্কোয়াডে ছিলেন। সেটা ১৯৮১ সালের ঘটনা। একটা ম্যাচ তিনি অধিনায়ক হিসেবে খেলেন। যদিও ভারত ম্যাচটা হারে। যদিও তাতে তাঁর কাল্ট হিরো মর্যাদায় এতটুকু আঁচড় লাগেনি।

  • সৈয়দ কিরমানি

কর্ণাটকার আরেক ক্রিকেটার যনি মাত্র একটা ম্যাচ ভারতের অধিনায়কত্ব করেন। সেই ম্যাচেও ভারত হারে। সাবেক এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক ছিলেন। লোয়ার অর্ডারেও তিনি ভাল কিছু ইনিংস খেলেছিলেন। বিশেষ করে কপিল দেবের সাথে ১৯৮৩ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নবম উইকেট জুটিতে ১২৬ রানের জুটিটা না হলে হয়তো ভারতের আর সেবার বিশ্বকাপ জেতাই হয় না। শুধু ক্রিকেটাঙ্গনেই নয়, পরে অভিনয় জগতেও নাম লেখান কিরমানি।

  • মহিন্দর অমরনাথ

ভারতের প্রথম বিশ্বমানের ও কার্যকর অলরাউন্ডার ছিলেন তিনি। মূলত ব্যাটসম্যানই ছিলেন, তবে তাঁর মিডিয়াম পেস বোলিংও ছিল দারুণ। ‍গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আনতে পারতেন ব্রেক-থ্রু। বিশেষ করে ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ সেমি ফাইনাল ও ফাইনাল জয়ে ছিল তাঁর বড় অবদান। পাঞ্জাবের এই ভদ্রলোকও এক ওয়ানডেতে ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পান – এবারও ভারত জিততে পারেনি।

  • অনিল কুম্বলে

আবারও কর্ণাটকার এক ক্রিকেটার। আর তিনি কর্ণাটকা তো বটেই ভারতের ইতিহাসেও অন্যতম সেরা ক্রিকেটারদের একজন। আর অবশ্যই বিশ্বের ইতিহাসেরই তিনি অন্যতম সেরা লেগ স্পিনার। তিনি অবশ্য পরে টেস্টেও ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তবে, প্রথম যখন এক ওয়ানডেতে দায়িত্ব পান তখন অনিল কুম্বলে ছিলেন একেবারেই নতুন। সেটা ২০০২ সাল। সেই ওয়ানডেতে ভারত জিতেছিল। পরে টেস্ট দল ও এরও পরে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু দলের অধিনায়কত্ব করেন কুম্বলে।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link