ভারতের প্রতি ছিল বিশেষ ছাড়ের নির্দেশ পান ক্রিস ব্রড

সাক্ষাৎকারে ব্রড জানিয়েছেন, তিনি আরও কাজ করে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আইসিসি তাঁর চুক্তি নবায়ন করেনি। আবার নিজেই বলছেন, এই জায়গায় ২০ বছর কাজ করাটাই বড় কীর্তি। এক মুখে দুই কথা কেন বলছেন ক্রিস ব্রড?

আইসিসি এখন ভীষণ রাজনৈতিক একটা সংস্থা, কোনো রাখঢাক না রেখেই বলে দিলেন সাবেক ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড। দাবি করলেন, আইসিসিতে দায়িত্ব পালনকালে তাকে ভারতের বিপক্ষে শাস্তিমূলক সিদ্ধান্তে ‘সহনশীল’ হতে চাপ দেওয়া হয়েছিল।

ইংল্যান্ডের সাবেক ব্যাটার ও টেস্ট কিংবদন্তি স্টুয়ার্ট ব্রডের বাবা ক্রিস ব্রড ছিলেন আইসিসির অন্যতম অভিজ্ঞ ম্যাচ রেফারি। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করে ৬২২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সম্প্রতি দ্য টেলিগ্রাফ-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে আইসিসিতে ভারতের প্রভাব নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন।

ক্রিস ব্রড জানিয়েছেন, তাঁর ম্যাচ রেফারির জীবনে তাকে রাজনৈতিক চাপ থেকে শুরু করে নানা রকম ‘বুলেট’ এড়িয়ে চলতে হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, ভারতের ধীর ওভার রেটের ঘটনায় আইসিসির পক্ষ থেকে তাকে ‘সহনশীল’ হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

ব্রড বলেন, ‘ভারত তিন-চার ওভার পিছিয়ে পড়েছিল, তাই স্বাভাবিকভাবে জরিমানা হওয়ার কথা। কিন্তু আমাকে ফোন করে বলা হলো, ‘ভারতের ব্যাপারে একটু সহনশীল হও। তাই কিছু সময় বের করে এনে জরিমানার সীমার নিচে নামাতে হল।’

পরের ম্যাচেও একই ঘটনা ঘটল। ক্রিস ব্রড আবার ফোন করলেন। এখানে তিনি কাঠগড়ায় তোলেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক ও সাবেক বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলিকে।

ব্রড বলেন, ‘পরের ম্যাচেও একই ঘটনা ঘটে। সৌরভ গাঙ্গুলি তখন দ্রুত ওভার শেষ করার নির্দেশ শুনছিল না। আমি ফোন করে জিজ্ঞাসা করি, এখন কী করব? তখন আমাকে বলা হয়, ‘শুধু তাকে জরিমানা করো। অর্থাৎ শুরু থেকেই এখানে রাজনীতি জড়িত ছিল।’

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দীর্ঘ ২০ বছরের  ক্যারিয়ারের ইতি টানেন ব্রড। এখন তিনি আনন্দিত যে আর আইসিসির সেই নোংরা রাজনীতিতে থাকতে হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করায় বিশ্বাসী ছিলাম। কিন্তু কিছু জায়গায় দেখেছি, অনেক নোংরা জল বয়ে যায়। তাই এমন পরিবেশে ২০ বছর টিকে থাকাটাই বিরাট এক রেকর্ড।’

তিনি মনে করেন, এখন ক্রিকেটের সব ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ভারত। বললেন, ‘ভারত এখন ক্রিকেটে সব অর্থ আর ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করছে। সাবেক বিসিসিআই সচিব জয় শাহ এখন আইসিসির চেয়ারম্যান। তাই পুরো সংস্থাটাই এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক হয়ে গেছে। আমি খুশি যে এখন আর সেই পরিবেশে নেই।’

সাক্ষাৎকারে ব্রড জানিয়েছেন, তিনি আরও কাজ করে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আইসিসি তাঁর চুক্তি নবায়ন করেনি। আবার নিজেই বলছেন, এই জায়গায় ২০ বছর কাজ করাটাই বড় কীর্তি। এক মুখে দুই কথা কেন বলছেন ক্রিস ব্রড?

Share via
Copy link