বিরাট-বাবর শ্রেষ্ঠত্ব এখন আর অতূল্য কোনো বিষয় নয়। হ্যাঁ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিরাট কোহলি এখনও বাবরের চেয়ে ঢের এগিয়ে। নামের পাশে এরই মধ্যে বসে গিয়েছে ২৫০০০ এর বেশি রান আর ৭৬ টা শতক। বলা চলে, কিংবদন্তি হওয়ার পথে নয়, বরং ইতোমধ্যে ‘কিংবদন্তি’ নামক আসনটায় পৌঁছে গিয়েছেন কোহলি।
বাবরকে অবশ্য তাঁর ৮ বছরের ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত সফলই বলা চলে। ১২০০০ এর বেশি রানের পাশাপাশি ৩০ টা সেঞ্চুরি করেছেন। আর তাই বিরাট কোহলির সাথে শ্রেষ্ঠত্বের দৌড়ে ভাল ভাবেই আছেন পাকিস্তানি এ ব্যাটার। অবশ্য এই মুহূর্তে এগিয়ে আছেন বাবর আজমই।
ওয়ানডে ফরম্যাটে ব্যাটারদের র্যাংকিংয়ে বাবর যেখানে রয়েছেন ১ নম্বরে, সেখানে বিরাট কোহলি এখন আছেন ৯-এ। আর বাকি দুই ফরম্যাটে কোহলি তো নেই সেরা দশেও। সব মিলিয়ে বর্তমান সময়ে শ্রেষ্ঠত্বের দিক দিয়ে এগিয়ে আছেন বাবর আজমই।
ক’দিন আগে বাবরকে নিয়ে এমনই একটা মত দিয়েছিলেন স্বয়ং বিরাট কোহলিও। জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তাঁর চোখে সেরা ব্যাটার বাবর আজমই।
তবে সামনেই বসছে এশিয়া কাপের আসর। ভারত-পাকিস্তান মহারণের পাশাপাশি বাবর-বিরাট শ্রেষ্ঠত্বের দ্বৈরথ দেখতেও মুখিয়ে সারা বিশ্ব। এবারের এশিয়া কাপের সিংহভাগ ম্যাচই হবে শ্রীলঙ্কাই। ভারত তো সব ম্যাচই খেলবে লঙ্কানদের মাটিতে।
আর একটি ম্যাচ বাদে পাকিস্তানকেও পুরো এশিয়া কাপ কাটাতে হবে শ্রীলঙ্কায়। এখন এই লঙ্কানদের মাটিতে বাবর, বিরাটের অতীত ইতিহাস কী বলে? কে বেশি এগিয়ে?
একদিনের ক্রিকেটে বিরাট কোহলির ব্যাটিং গর ৫৭ এর কিছুটা বেশি। তবে শ্রীলঙ্কার মাটিতে গড়টা ৫০ও টপকাতে পারেননি এ ব্যাটার। শ্রীলঙ্কায় খেলা ২৩ টা ম্যাচে ৪৭.৩১ গড়ে করেছেন ৮৯৯ রান। যেখানে ছিল ৪ টি শত রানের ইনিংস।
তবে লঙ্কানদের মাটিতে শ্রীলঙ্কা ব্যতীত অন্য দলের সামনে বরাবরই বিরাটের ব্যাট অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে। এখানে খেলা ২৩ ম্যাচে মধ্যে ২০ ম্যাচই বিরাট খেলেছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আর এই ২০ ম্যাচে তাঁর রান ছিল ৮৬২। অর্থাৎ ভিন্ন প্রতিপক্ষের বিপরীতে বাকি ৩ ম্যাচে তিনি করেছেন মাত্র ৩৭ টি রান।
তবে ২০১৭ সালে একবার লঙ্কা সফরে এসে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে বেশ ভুগিয়েছিলেন তিনি৷ ৫ ম্যাচের সিরিজে ২ সেঞ্চুরিতে করেছিলেন ৩৩০ রান। আর এমন পারফর্মেন্সের সুবাদের সেবার শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ তে হোয়াইট ওয়াশ করেছিল ভারত।
শ্রীলঙ্কার মাটিতে অবশ্য বাবর আজমের অদ্যাবধি পরিসংখ্যান বেশ হতাশার। যদিও মাত্র ৪ টা ওয়ানডে খেলেছেন। আর সেই ৪ ম্যাচে ২২.৫০ গড়ে এ ব্যাটার করেছেন মাত্র ৯০ রান। তবে শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম ৩ ম্যাচ ব্যর্থ হলেও শেষ ম্যাচে ৫৩ রানের ইনিংস খেলেছেন বাবর। অর্থাৎ, শ্রীলঙ্কাতেও রানফোয়ারা ছোটানোর অপেক্ষায় রয়েছেন এ ব্যাটার।
আর সেই যাত্রায় আসন্ন এশিয়া কাপটা বড় মঞ্চই হতে যাচ্ছে বাবর আজমের জন্য। একই সাথে, বিরাট কোহলির সাথে তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইটাও থাকছে সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। সময়ের সেরা দুই ব্যাটার একই টুর্নামেন্টে কে কাকে ছাপিয়ে যাবেন, সেটি তো আগ্রহের তুঙ্গে থাকারই কথা।
তবে দর্শকের সেই আগ্রহের অপেক্ষা ফুরেবে কিছুদিন বাদেই। আগামী ২ সেপ্টেম্বর মাঠে গড়াতে যাচ্ছে ভারত-পাকিস্তান মহারণ। বহুল প্রতীক্ষিত সেই মহারণে নিশ্চয় বাবর-বিরাট মধ্যকারও জমাট লড়াইয়ের অপেক্ষায় থাকবে পুরো বিশ্ব।