Social Media

Light
Dark

ঝাঁঝালো বাক্যবাণের উত্তাপ

ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা। এখানে খেলোয়াড়ের কথা কাটাকাটির মত ঘটনা কালেভদ্রে ঘটে। ছোটখাটো এসব ঘটনার জন্য আবার ম্যাচ শেষে শাস্তির ব্যবস্থাও রয়েছে। কিন্তু ফুটবলে এসবের বালাই নেই। কথা কাটাকাটি কিংবা একটু আধটু হাতাহাতি এই খেলার নিয়মিত দৃশ্য বটে।

খুব বেশি গুরুতর পর্যায়ে না গেলে এমন ঘটনার জন্যও শাস্তি পেতে হয় না ফুটবলারদের। অবশ্য ফুটবলারদের জন্য এসব ব্যাপার সাধারণ হলেও, ডাগ আউটে দাঁড়ানো কোচদের জন্য মোটেও সাধারণ নয়। দুই দলের দুই কোচ বারবার বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে যাচ্ছেন – এমন দৃশ্য বেশ বিরল বটে।

আর তেমনই এক বিরল ঘটনা ঘটেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় সপ্তাহে। ঘরের মাঠে চেলসি আতিথেয়তা দিয়েছিল টটেনহ্যামকে। আগের তুলনায় প্রিমিয়ার লিগে এখন প্রতিদ্বন্দ্বী হ্রাস পেয়েছে। এখন লিভারপুল আর ম্যানচেস্টার সিটির সাথে অন্য দলগুলোর পার্থক্য চোখে পড়ার মত ৷ তারপরও ‘বিগ সিক্স’-এর দুই দলের ম্যাচ; উত্তেজনার কমতি ছিল না।

সেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে চেলসির কোচ টমাস টুখেল এবং টটেনহ্যামের কোচ অ্যান্তনিও কন্তের মাঝেও। দুই অভিজ্ঞ কোচ বারবার মেজাজ হারিয়েছেন। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে দুই ট্যাকটিশিয়ানের আগ্রাসী মনোভাব এবং মারমুখী চেহারা ছিল দেখার মত। কয়েকবারই তারা একে অপরের দিকে ছুঁটে গিয়েছিলেন, এমনকি দু’জনকে ছাড়াতে এগিয়ে আসতে হয় দুই দলের সব কোচিং স্টাফ এবং রেফারিদেরও।

টটেনহামের কোচ আন্তনিও কন্তে তো এমনিতেই খ্যাপাটে মানুষ। চেলসির কোচ টমাস টুখেলেরও রাগ কম নয়। স্টামফোর্ড ব্রিজে তাই চেলসি আর টটেনহাম ম্যাচেও পাওয়া গেল রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। খেলোয়াড়রা তো ক্ষণে ক্ষণে মেজাজ হারিয়েছেনই, হাতাহাতি লেগে গিয়েছিল এই দুই ম্যানেজারেরও।

শুরুটা হয়েছে ম্যাচের ৬৮ মিনিটে। ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকা স্পার্সরা তখন পিয়ের-এমিল হইবিয়ারের গোলে সমতায় ফিরেছিল। কিন্তু গোলের আগে ফাউল হয়েছে এমন দাবি করেছিলেন চেলসির খেলোয়াড়রা। আর সেটি নিয়েই উত্তেজনা ছড়ায় ডাগ আউটে।

গোলের পর উদযাপন করতে গিয়ে একটু বেশিই করে ফেলেছিলেন টটেনহাম কোচ কন্তে। স্বাগতিক কোচ টমাস টুখেলের আবার সেটি সহ্য হয়নি। প্রায় হাতাহাতি লেগে যাচ্ছিল তাদের, পরে অবশ্য বাকিরা এসে সরিয়ে নেন দুজনকে। রেফারি হলুদ কার্ড বের করে সতর্ক করেন টুখেলকে।

অবশ্য জল আরো অনেকটা গড়িয়েছে। ৭৭ মিনিটে রিচ জেমসের গোলে এগিয়ে যাওয়া চেলসি ম্যাচের শেষদিকে এসে হোঁচট খায়। ৯৬ মিনিটে হ্যার কেনের গোলে পরাজয় এড়ায় স্পার্সরা। অন্তিম মুহূর্তের এই গোলেও বিপত্তি বাধে। কেনের করা গোলের আগে চেলসির মার্ক কুকুরেলার চুলে টান দিয়ে ফেলে দেন ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো। কিন্তু রেফারি তাতে নজর দেননি।

ক্ষোভ তাই জমা-ই ছিল টুখেলের মনে। ম্যাচ শেষে হাত মেলাতে গিয়ে আবার তাঁর সাথে টক্কর লেগে যায় প্রতিদ্বন্দী কোচের। দুজনকে ছাড়াতে এগিয়ে আসতে হয় দুই দলের কোচিং স্টাফ ও রেফারিদের। এ নিয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। সেটা অবশ্য শেষপর্যন্ত মারামারি পর্যন্ত গড়ায়নি! এক পর্যায়ে টুখেল এবং কন্তেকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।

সংবাদ সম্মেলনেও টমাস টুখেল নিজের রাগ ধরে রাখতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমি এক ম্যাচ কোচিং করাতে পারবো না। কিন্তু যে রেফারি বারবার ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছে সে তো ঠকই পরের ম্যাচও পরিচালনা করবে।’ এছাড়া টটেনহ্যামের দুইটি গোল-ই বাতিল করা উচিত ছিল বলে অভিযোগ করেন এই জার্মান।

মৌসুম মাত্র শুরু হলো, এখনই উত্তেজনার বারুদে ঠাসা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। বাদবাকি ম্যাচ গুলোতে কেমন ধ্রুপদী লড়াই হতে পারে, সেটা ভেবে পুলকিত হতেই পারেন ভক্ত-সমর্থকেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link