অনন্য এক কীর্তির সামনে অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। আর ৪ টি টেস্ট এবং ৫ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেললেই ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই শতাধিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়বেন তিনি। তবে সে অনাগত রেকর্ড ছাপিয়ে নতুন খবর হল, অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী ওয়ানডে অধিনায়ক হতে পারেন ডেভিড ওয়ার্নার। কিন্তু অধিনায়ক হওয়ার পথে ওয়ার্নারের বাঁধাও রয়েছে।
২০১৮ সালে বল টেম্পারিং করে এক বছরের জন্য ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ওয়ার্নার। একই সাথে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া সেবার তাঁকে আজীবনের জন্য অধিনায়কত্ব থেকে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছিল। সেই নীতিমালা অনুযায়ী ডেভিড ওয়ার্নারের আর অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হওয়া সম্ভব না। তবে নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র বলছে, ওয়ার্নারকে নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক করার জন্য ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাদের পূর্বের নীতিমালার কিছু পরিবর্তন আনতে পারে।
বার্তা সংস্থা অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস বলছে, ‘ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নতুন করে নীতিমালা প্রণয়ন করতে পারে। ওয়ার্নারের পূর্বের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আবারও পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। সামনে শুক্রবার হোবার্টে এই বিষয় নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বোর্ড কর্তাদের মধ্যে আলোচনা হবে’।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) চেয়ারম্যান হেন্ডারসন বলেন, যদি প্রয়োজন হয় সাংগঠনিক নীতিমালা সংস্কার করার তবে তা করা হবে। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে ডেভিড ওয়ার্নারের অবদান অনেক। আমাদের প্রথম কাজ হবে, আজীবন অধিনায়কত্বের নিষেধাজ্ঞার কোড পুনর্বিবেচনা করা, তারপর সবাই বৈঠকে বসে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খুব তাড়াতাড়িই এটি সম্পন্ন করতে চাচ্ছি। কারণ এর সাথে আমাদের ভবিষ্যত অধিনায়ক কে হবেন তা জড়িত।’
একই মত পোষণ করেছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী নিক হকলি। তিনি মনে করেন, ‘ক্রিকেটারদের যে আগের থেকে আচরণগত পরিবর্তন হয়েছে তার জন্য হলেও সুযোগটা দেওয়া দরকার। এখানে খুব বেশি কঠোর হওয়া ঠিক হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ার্নারের ইস্যুটি এখনও দোদুল্যমান অবস্থায় আছে। তবে শুক্রবারের মধ্যে আমরা বোর্ড থেকে একটি সিদ্ধান্ত দিতে পারব। এর মধ্যে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারটি আবারও পুনর্বিবেচনা করা হবে।’
গত মাস পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে দলের নেতৃত্বে ছিলেন অ্যারন ফিঞ্চ। কিন্তু অ্যারন ফিঞ্চ ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ায় পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম পছন্দ ছিলেন কামিন্স। কিন্তু লাল বলের ক্রিকেট অজিদের দায়িত্ব সামলানো এ ক্রিকেটার সাদা বলের ক্রিকেটে দায়িত্ব নিতে চাননি। তাই পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে ডেভিড ওয়ার্নারের নামই ভেসে ওঠে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া আরও একটি রিপোর্টে জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে গত ২০২১-২২ সময়ে ৫.১ বিলিয়ন ক্ষতি হয়েছে। মূলত প্যান্ডামিকের কারণেই এই ক্ষতি। এ সময়ে তাদের মিডিয়া রাইটসের মূল্য কমে গিয়েছিল। একই সাথে আরও কিছু অর্থ উৎসের পথ বন্ধ হয়েছিল। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া সেই ক্ষতি এখন কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের শিরোপা ঘরে তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। আর সে শিরোপার পেছনের সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। হয়েছিলেন সেবারের টুর্নামেন্ট সেরা। সেই পারফরম্যান্সেই বোধহয় বরফ গলেছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার। কারণ প্রায় ৪ বছর আগে ভিলেন ভাবা সেই ওয়ার্নারকেই অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে অধিনায়ক করার কথা ভাবছে অস্ট্রেলিয়া। তবে কোনো কিছুই অবশ্যম্ভাবী নয়। তাই আপাতত অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পর্যন্ত।