দিল্লীর কেল্লায় লখনৌর হামলা

ব্যাটিংয়ের শুরুতে কাইল মেয়ার্স ঝড়, এরপর বোলিংয়ে মার্ক উডের পেস তাণ্ডব, রবি বিষ্ণয়ের স্পিন ঘূর্ণি – এবারের আসরের তৃতীয় ম্যাচের দৃশ্যপট জুড়েই ছিল লখনৌর ক্রিকেটারদের আধিপত্য। আর সেই আধিপত্য দেখিয়েই দিল্লী ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ৫০ রানের জয় তুলে নিয়েছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। দিল্লীর হয়ে এ দিন একাদশে সুযোগ পান নি বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য শুরুতে কিছুটা ধাক্কাই খেয়েছিল লক্ষ্ণৌ। একে তো ইনিংসের শুরুতে দিল্লীর বোলারদের সামনে কিছুটা ছন্নছাড়াই লাগছিল লখনৌর দুই ওপেনারকে। তার উপর দলীয় ১৯ রানে অধিনায়ক লোকেশ রাহুল উইকেট হারায় লক্ষ্ণৌ।

তবে সাময়িক সে বিপদ সামলে নেন আরেক ওপেনার কাইল মেয়ার্স। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো কোনো আইপিএল ম্যাচে খেলতে নেমে কিছুক্ষণ বাদেই এ ক্যারিবীয় ক্রিকেটার দেখাতে শুরু করেন তাঁর পেশির জোর। একের পর এক চার ছক্কায় দিল্লীর বোলারদের কাছে এ দিন রীতিমত নাভিশ্বাসের কারণ হন তিনি।

ব্যক্তিগত অর্ধশতকও তুলে নেন তড়িৎ গতিতে। মাত্র ২৮ বলেই পৌঁছে যান পঞ্চাশে। ফিফটি পূরণের পর আরো বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন মেয়ার্স। অক্ষর প্যাটেল থেকে শুরু করে কুলদ্বীপ যাদব, কেউই যেন এ দিন মায়ার্সের সামনে কোনো কূলকিনারাই খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অবশেষে অক্ষর প্যাটেলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৭৩ রানে সাজঘরে ফিরে যান মায়ার্স। বিধ্বংসী এই ইনিংস খেলার পথে ক্যারিবিয়ান এ ব্যাটার হাঁকিয়েছেন ২ টি চার আর ৭ টি ছক্কার মার।

মেয়ার্স ফিরে গেলেও অবশ্য লখনৌ’র রানের গতি থামেনি। আরেক ক্যারিবিয়ান ব্যাটার নিকোলাস পুরানের ৩৬ রানের ইনিংসে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় তারা। আর শেষ দিকে আয়ুষ বাদোনির ঝড়ো ১৮ রানের ক্যামিওতে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস।

১৯৪ রানের লক্ষ্যে শুরুটা ভালই করেছিল দিল্লী ক্যাপিটালসের দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর পৃথ্বী শ। প্রথম ৪ ওভারেই কোনো উইকেট না হারিয়ে তুলে ফেলে ৪০ রান। তবে এর পরেই বোলিং প্রান্তে এসে লখনৌর দিকে মোমেন্টাম ঘুরিয়ে দেন পেসার মার্ক উড। পরপর দুই বলে তুলে নেন পৃথ্বী শ আর মিশেল মার্শের উইকেট।

উডের আগুন ঝরা বোলিংয়ে প্রতিরোধ গড়তে পারেননি পরের ব্যাটার সরফরাজ খানও। পরের ওভারে ইংলিশ এ পেসারের বুলেট গতিতে আসা এক বাউন্সার সামলাতে গিয়ে ধরা দিয়েছেন ফাইন লেগে থাকা ফিল্ডার গৌতমের কাছে।

৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন রীতিমত ব্যাকফুটে চলে যায় দিল্লী ক্যাপিটালস। এরপর রাইলি রুশো উইকেটে এসে সে বিপর্যয় কিছুটা সামলানোর চেষ্টা করলেও তিনিও কিছুক্ষণ বাদে ফিরে যান। দারুণ সব স্ট্রোকে সম্ভাবনা জাগিয়েও রবি বিষ্ণয়ের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে আউট হন ব্যক্তিগত ৩০ রানে।

রুশোর মতো একই পথে হেঁটেছেন রভমান পাওয়েলও। ক্যারিবিয়ান এ ব্যাটার ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই তাঁকে ফেরান রবি বিষ্ণয়। দিল্লী ক্যাপিটালস মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছে তখনই। যদিও উইকেটে তখনও টিকে ছিলেন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার।

কিন্তু আস্কিং রেটের চাপ সামলে লখনৌর দেওয়া লক্ষ্যের পথে আর হাঁটা হয়নি। ওয়ার্নার ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করলেও তা ম্যাচ জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে দিল্লীর ইনিংস শেষ হয় লক্ষ্য থেকে ৫১ রান দূরে থেকে। লক্ষ্ণৌর হয়ে এ দিন একাই পাঁচ উইকেট নেন ইংলিশ পেসার মার্ক উড।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link