ফুটবল বিশ্বে যা তোলপাড় হওয়ার তা ইতোমধ্যে হয়ে গিয়েছে। ১২ ক্লাব মিলে নিজেরা নিজেরা একটা বিদ্রোহী লিগ খেলার ঘোষণা দিয়েছি, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্য সুপার কাপ’ ফরমেটে ভিন্নতা, খেলার ধরণে ভিন্নতা আর সবচেয়ে বড় বড় ভিন্নতা তাদের অভিবাবকত্বে। ফুটবলের অভিভাবক হিসেবে কাজ করা ফিফা, উয়েফাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ক্লাব সভাপতিরা মিলেই তৈরি করেছে লিগ ফরম্যাটের নতুন কাপ। আগস্টে সবকিছু ছেড়ে লিগের ঘোষণাও দেওয়া শেষ, এখন অপেক্ষা শুধু বল মাঠে গড়ানোর।
অভিভাবকদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমন সিদ্ধান্তের উত্তরও জানিয়ে দিয়েছে ফিফা আর উয়েফা, বলেছে এই লিগে অংশ নেওয়া সকল দলকে নিষিদ্ধ করা হবে তাদের নিজস্ব লিগ থেকে। এমনকি সেই দলে খেলা খেলোয়াড়দের নিষিদ্ধ করা হবে জাতীয় দল থেকে। একেবারে হ-য-ব-র-ল একটা অবস্থা। হয় ক্লাব, নইলে জাতীয় দল; এমন এক দোটানায় ফেলে দেওয়া হয়েছে খেলোয়াড়দের।
কিন্তু ফুটবল খেলাটা যাদের জন্য, সেই সমর্থকরা কোনোভাবেই ভালো চোখে দেখছেন না নতুন লিগকে। ১২ এলিট দলের সমর্থক গ্রুপ থেকেও স্টেটমেন্ট চলে এসেছে, এমন লিগের পক্ষপাতী নয় তারা। অনেকে আখ্যা দিচ্ছেন এটাকে ফুটবলের মৃত্যু হিসেবে। কিন্তু আসলেই কি ‘দ্য সুপার লিগ’ ফুটবলের মৃত্যু, ফুটবল ধ্বংসের পাঁয়তারা? নাকি নতুন কিছুর সূচনা? নতুন করে জেগে উঠবে ফুটবল?
- পক্ষে
শুরুতেই সুপার কাপের পক্ষে কথা বলা যাক। সত্যি বলতে আজকে যে দিনের মুখোমুখি হয়েছে ফুটবল, তার পেছনের কালপ্রিট মূলত এখন যারা বিরোধিতা করছে তারাই। বহু আগে ফুটবল ব্র্যান্ডিংয়ের নাম করে ফুটবলে টাকার খেলা শুরু করেছিলেন এই ‘ফুটবলের অভিবাবক’ বলে খ্যাত ফিফা আর উয়েফাই। শুনে অদ্ভুত লাগছে? শক্ত করে চেপে বসুন গল্পটা অদ্ভুতই ঠেকবে।
ইউয়েফার সূচনা ১৯৫৪ সালে ফ্রান্স থেকে। প্রথমে অনেকেই অনেক কথা বলেছে, কিন্তু ধীরে ধীরে সকলে এর পতাকাতলে ঠিকই ভিড়েছে। ১৯৫৬ সালে থেকে শুরু হয় ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ট্রফি ইউরোপিয়ান কাপ। প্রথম প্রথম ইউরোপিয়ান কাপ নিয়েও এমন দ্বন্দ্ব ছিল, যেমনটা এখন দেখা গিয়েছে। কেন বিভিন্ন দেশের দল একসাথে খেলবে, চেতনা পরিপন্থী ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু যে পরিবর্তনের কথা বলছি, তার সূচনা নব্বইয়ের দশকে।
‘ইউরোপিয়ান কাপ’ শিরোপার অস্তিত্ব এখন আর ক্লাব ফুটবলে নেই। মানুষের মুখে মুখে এটার পরিচিতি ‘ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ’ হিসেবে। এখন শুনে স্বাভাবিক লাগলেও নামের মধ্যেই নিজেদের ব্র্যান্ড প্রবেশ করানোটা স্বভাবিক ছিল না নব্বইয়ের দশকে। বলতে গেলে আলোচনা শুরুই হয়েছে নব্বই দশকে এসে। ইউয়েফা, ইংলিশ এফএ ও বিভিন্ন লিগ এক পতাকার নিচে এসে আলোচনা শুরু করে ফুটবল ব্র্যান্ডিংয়ের। এখন যে প্রিমিয়ার লিগ দেখছেন, কিংবা চ্যাম্পিয়নস লিগ, কোনটাই এমন ছিল না। সম্পূর্ণটাই ব্যবসায়ী মস্তিষ্কের আবিষ্কার! ১৯৯২ সালে এসে ‘ফুটবল রিব্র্যান্ডিং’ এর নামে নরুন নিয়ম আরোপ করে ইউয়েফা। আর সেখান থেকেই বদলে যায় ফুটবলের চিত্র! এক মৌসুমে বদলে যাওয়া ফুটবলের সিদ্ধান্ত ছিল অনেকটা এরকম।
প্রতি বছর লিগ থেকে যে পরিমাণ অর্থ আসবে তা ভাগাভাগি করা হবে দলদের পজিশন অনুযায়ী। এবং সেখান থেকে বড় পরিমাণ একটা অংশ নিয়ে যাবে ইউয়েফা ও স্ব-স্ব লিগগুলোর পকেটে।
অর্থাৎ ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত ইংলিশ ফার্স্ট ডিভিশন লিগের প্রতিটি দল তাদের টিভি রাইটস ও স্পন্সর থেকে সমান পরিমাণ অর্থ পেত। যে অর্থটা প্রতি বছর লিগ বরাবর দেওয়া হতো। সেখান থেকে ইউয়েফা এবং লিগ কর্তৃপক্ষ যৎ সামান্য টাকা পেত যা অত্যন্ত গৌণ। কিন্তু পরের মৌসুম অর্থাৎ ১৯৯২ সালে থেকে প্রিমিয়ার লিগ আর ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ব্র্যান্ডিং শুরু হওয়ার পর থেকে খোলনচালে বদলে গেল সবকিছু। টিভি রাইটসের ক্ষেত্রে দেখা গেল বিশাল অংক নিয়ে যাচ্ছে এফএ আর ইউয়েফা। স্পন্সর মানিও পাচ্ছে তাঁরা। একই লিগে সমান ম্যাচ খেলেও দুই দল সমান অর্থ পাচ্ছে না। শুরুটা হয়েছিল সেখান থেকেই।
ফুটবল খেলা আরো ছড়িয়েছে, টিভি রাইটস আর স্পন্সর বেড়েছে; কিন্তু কমেনি বৈষম্য। লিগ টেবিলের নিচের দিকের ক্লাবগুলো কম পয়সা পেয়েই গিয়েছে, আর উপরের দিকের ক্লাবগুলো হতে চলেছে ধনী। আর পকেট ভরতে শুরু করেছে ইউয়েফা আর ফিফার। প্লাতিনি আর সেপ ব্লাটারকে নিশ্চয় ভুলে যাননি? ইউয়েফা আর ফিফার দুর্নীতির দায় মাথায় নিয়ে দুইজনকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল। জেলের ঘানিও টানতে হয়েছে তাদের। ফিফা আর ইউয়েফার দুর্নীতির ইতিহাস কম বড় নয়। বরং দিনে দিনে পর্দায় আড়ালে আরো বাড়ছে তা। নইলে পরপর চারটি বিশ্বকাপ (২০১০, ২০১৪, ২০১৮, ২০২২) নিয়ে কথা উঠে? প্রায় এক দশকের কাছাকাছি সময় ধরে চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপা লিগের প্রাইজমানি প্রায় একই। টিভি রাইটস থেকেও দলগুলোর অর্থ বাড়েনি খুব একটা। আর এর মাঝেই আঘাত হেনেছে করোনা ভাইরাস প্যানডেমিক।
এই মহামারী কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ফুটবল, আবার তা চালু করার জন্য কম তোড়জোড় করেনি ‘ফুটবলের অভিভাবকেরা’। কারণটা স্পষ্ট, টাকা। মাঠে দর্শক নেই, তা নিয়ে ইউয়েফার মাথাব্যথা নেই। বরং তাদের নিয়ম খেলা চালাতে হবে। টানা দুই মৌসুম ধরে চলছে ফুটবল, ফুটবলারদের নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই, ক্লাবের বাজে অবস্থা, খেলোয়াড় সংকটেও খেলা থেমে নেই। প্রিমিয়ার লিগের ৩৮ সপ্তাহের ফুটবল নেমে এসেছে ৩৪ এ; কোনো হেল-দোল নেই। কারণ, ইউয়েফার টাকা দরকার। মহামারীর পর মানুষজন যত ঘরে বসে থেকেছে, তত বেড়েছে টিভি রাইটসের দাম। তাতে করে কি ক্লাবদের পকেটে পয়সা ঢুকেছে? না। সেই আগের অবস্থাতেই আছে সকলে। একই পরিমাণ পয়সা পকেটে পুরে যাচ্ছে ইউয়েফা আর ফিফা। প্রতি ম্যাচ নামাতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হচ্ছে একেক দলের তা সামাল দিয়ে উঠতে পারছে না ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
এখানেই শুধু নয়। বারবার অনুরোধের পরও ইউয়েফা ন্যাশনস লিগ বন্ধ করেনি তারা। আগে ইন্টারন্যাশনাল ফ্রেন্ডলি ছিল দেশগুলোর নিজেদের আয়োজন। সেই সব ইন্টারন্যাশনাল ফ্রেন্ডলি নিয়ে নতুন টুর্নামেন্টের আয়োজন করে তারা। কারণ নতুন টুর্নামেন্ট মানেই নতুন আয়ের সুযোগ। মহামারির মধ্যে যখন খেলোয়াড়েরা ট্রাভেল করে চোটে পড়ছে, কোভিড পজিটিভ হচ্ছে, তখনও তা বন্ধের উদ্দৌগ দেয়নি তারা। ফলে নতুন কিছু ভাবতেই হতো।
দ্বিতীয়ত আসে ফুটবলে মানি ইনফ্লেশনের ব্যাপার। ১০-১২ বছর আগে ১০০ মিলিয়ন হাঁকানো খেলোয়াড় কে ছিলেন বলতে পারবেন? মনে না করতে পারলে মনে করিয়ে দেই। কাকা আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন তারা। ব্যালন ডি’অর, চ্যাম্পিয়নস লিগ, বিশ্বকাপ জিতে নিজের নাম কামিয়ে ১০০ মিলিয়ন ট্যাগ অর্জন করেছিলেন তারা। আর বর্তমান সময়ে? আর্লিং হল্যান্ডের জন্যও ১৮০ মিলিয়ন হাকাচ্ছে তাদের ক্লাব। অদ্ভুর না? ফুটবলে এই মানি ইনফ্লেশন শুরুই হয়েছে আরবমানি বা পেট্রো ডলারের আগমণের পর থেকে।
ফুটবলে প্রথম বিগ মানি সাইনিং চলছেই, এমন দেখিয়েছিলেন ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। গ্যালাক্টিকো তৈরি করতে গিয়ে একের পর এক ট্রান্সফার করিয়েছিলেন। কিন্তু দিনশেষে তিনি এমন কোনো ট্রান্সফার করেননি যাতে অযোগ্য খেলোয়াড় নিজের দামের চেয়েও বহুগুণ দাম পেয়েছে, কিংবা বেতন পেয়েছে। কিন্তু চেলসির রোমান আব্রামোভিচ, ম্যানচেস্টার সিটির মনসুর বিন জায়েদ কিংবা পিএসজির নাসের আল খেলাইফির মতন লোকেরাই অস্থির করেছে অবস্থাটা। ২২২ মিলিয়ন দিয়ে নেইমারকে কিনেই পুরো মার্কেটের অবস্থা হ-য-ব-র-ল করে ফেলেছে তারা।
দেখুন না, প্যান্ডেমিকের মধ্যে যখন সোশিও ক্লাবগুলো নিজেদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে তখন ব্যক্তি মালিকানাধীন ক্লাবগুলো ইচ্ছেমতো খরচ করে যাচ্ছে। তাদের যেন আটকানোর উপায়ই নেই। ওহ না, আছে তো। তাদের আটকাতেই তো হাতে নেওয়া হয়েছিল ‘ফাইনাসিয়াল ফেয়ার প্লে’ বা এফএফপি রুলস। ফলাফল? যেই লাউ, সেই কদু। তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে তাদের অবাধ কেনাকাটা। না করবার কেউ নেই। ফলে সোশিওভিত্তিক ক্লাব, রিয়াল-বার্সাকে আরো বেশি খরচ করতে হচ্ছে মাঠে নেমে। তাদের টেক্কা দিতে নতুন কিছু ভাবতে তো হতো? সেই ভাবনার ফসল হলো ‘দ্যা সুপার লিগ’
মিনাস টিরিথ যখন ভেঙ্গে ঢুকে পরেছে ওর্কসরা, তখনই যেন গ্যান্ডালফের মতন আগমণ দ্যা সুপার লিগের। প্রতিটা সমস্যার সমাধান নিয়েই এসে দাঁড়িয়েছে তারা। প্রথমত টিভি রাইটস আর স্পন্সর। যে ২০ দল যোগ দিবে, সকলের মাঝেই সমান পরিমাণ ভাগ বাটোয়ারা হবে এই অর্থ। ফলে প্রতিটি দলই নিজেদের পকেট ভরতে পারবে। আরব মানির সাথে টেক্কা দেওয়ার জন্য অন্তত।
আর উয়েফা-ফিফাকেও কোনো বাড়তি অর্থ দিতে হচ্ছে না, কারণ নিজেরা নিজেরা আয়োজন করছে। ফলে লাভ-ক্ষতি দু’টোই তাদের। তাছাড়াও আমেরিকান কোম্পানি জেপি মরগানের প্রজেক্ট, সাইন করলেই ৪২৫ মিলিয়ন ডলার বোনাস। ফলে নিজেদের যে পরিমাণ দেন-পাওয়া ছিল তা সহজেই চুকিয়ে ফেলা সম্ভব এখান থেকে।
৩৬ দলের চ্যাম্পিয়ন লিগে রেভিনিউ প্রায় ৩ বিলিয়ন ইউরো। সেখান থেকে শিরোপা জয়ী ক্লাব পায় সর্বোচ্চ ৮২.৭ মিলিয়ন ইউরো আর রানার্স-আপ দল ৭০ মিলিয়নের কাছাকাছি। সবকিছু হিসান করে দেখলে পুরো ৩৬ দল মিলেও রেভিনিউর ৫% ও পাচ্ছে না ইউয়েফার কাছ থেকে। বর্তমানে চ্যাম্পিয়নস লিগ গ্রুপ পর্ব খেলে বাদ হয়ে গেলে দলগুলো পায় মাত্র ১৫ মিলিয়ন ইউরো।
অথচ এখানে অংশগ্রহণ করলেও প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ মিলিয়ন নিশ্চিত। সেই সাথে নিজেদের মাঠে সব দলের খেলোয়াড়দের পাওয়ার আলাদা সুবিধা, টিকিট বিক্রি তো আছেই। যে সুবিধা দিতে পারছে না ইউয়েফা। কারণটা সোজা। তাদের নিজের পকেট ভরতে হবে তাই।
- বিপক্ষে
বিপক্ষে বলতে গেলে একটাই কথা উঠে আসে, ট্রেডিশন ও সিস্টেম। চ্য্যাম্পিয়নস লিগ চলছে প্রায় ৭০ বছরের কাছাকাছি। অনেক ইতিহাস, গর্ব জড়িয়ে আছে ক্লাবগুলোর সাথে। নটিংহ্যাম ফরেস্টের ব্যাক-টু-ব্যাক ইউরোপিয়ান কাপ জয়, পোর্তোর বিশ্বজয়, বেনফিকার বেলা গুটম্যান অভিশাপ; কত-শত স্মৃতি জড়িয়ে আছে এখানে।
সুপার লিগ হলে সেই নস্টালজিয়ায় মাতা সম্ভব হবে না। আন্ডারডগ আতালান্তা এসে সকলকে হারিয়ে কোয়ার্টারে খেলার সুযোগ পায়, এমনটা দেখা এখন প্রায় অসম্ভবই। লিগে কম্পিট করে ‘সেরা চার’ নিশ্চিত করে আন্ডারডগ দলদের সুযোগ পাওয়া খালি চোখে সম্ভবই মনে হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত চ্যাম্পিয়নস লিগে সুযোগ পাওয়ার যে সিস্টেম ছিল, সেটি ছিল খুবই সাধারণ এবং কার্যকরী। দিনশেষে সকলেই এই পদ্ধতির সাথে সম্মত ছিল। বড় বড় ক্লাবের লিগে মনোযোগ দিতে হতো চ্যাম্পিয়নস লিগে নাম লেখানোর জন্য। আন্ডারডগ দলগুলোর খেলতে আসার সুযোগ নির্ভর করছে উপরমহলের মর্জি উপর। তারা চাইলে খেলতে পারবে, নইলে না। এতে করে লিগে খেলার প্রতি মনোভাবও কমে যাবে অনেকাংশে।
তৃতীয়ত যেহেতু ক্লাবেরা নিজেরাই এর স্বত্বাধিকারী, সেহেতু কোনো ক্লাবের প্রতি পক্ষপাতিত্বও হতে পারে। সেখানে একটা স্বাধীন অরগানাইজিং বোর্ড থাকলে প্রশ্ন উঠার অবকাশ কম থাকতো।
- শেষ কথা
সবমিলিয়ে দ্য সুপার কাপ আইডিয়া শুধু ক্লাবেদের নিজেদের অবস্থান ভালো করার জন্য নয়, বরং ইউয়েফা ও ফিফা যে ব্র্যান্ডিং শুরু করে নিজেদের পকেট পুরছিল, তার বিপক্ষে একটা শক্ত স্ট্যান্ড। বলা বাহুল্য তাদের স্ট্যান্ডের পেছনে যথেষ্ট যুক্তি ও বুদ্ধিমত্তাও আছে। গত এক দশক ধরে বানানো এই পরিকল্পনার ফল হচ্ছে সুপার লিগ। উয়েফা বা ফিফা, যতই হম্বিতম্বি করুক না কেন, দিনশেষে খেলোয়াড়দের ব্যান করা হিতে বিপরীত হবে।
মেসি-রোনালদো-রামোস ছাড়া বিশ্বকাপ কিংবা টপ দিক্স ছাড়া প্রিমিয়ার লিগ দেখতে বিশ্বের মানুষ তো আগ্রহী হবেই না, সাথে সাথে টিভি রাইটসও কমে যাবে বহুলাংশে। যতই বলুক না কেন, বড় বড় খেলোয়াড় ছাড়া বিশ্বকাপ দেখার মজা, অর্থনৈতিক আর সামাজিক দুই দিক দিয়েই শেষ হয়ে যাবে।
দিনশেষে বিজনেস মাস্টারমাইন্ড ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের আইডিয়া এত সহজে তার আইডিয়া নষ্ট হতে দিবেন না, এই বিদ্রোহী লিগ আইসিএলের মতন কুরিতেই নষ্ট হবে না সে ব্যাপারে নিশ্চিয়তা দেওয়াই যায়।