রৌদ্রময় একটা দিন ছিল, এরপর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আকাশ বদলে শুরু হলো তুমুল ঝড় – কেমন লাগবে তখন। উত্তরটা বোধহয় চেন্নাই সুপার কিংসের সমর্থকেরাই সবচেয়ে ভাল দিতে পারবেন। কেননা কোন পূর্বাভাস ছাড়া, ছোটখাটো কোন ইঙ্গিত ছাড়াই চেন্নাইয়ের অধিনায়কত্ব ছেড়ে ক্রিকেটাঙ্গনকে চমকে দিয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
ক্যারিয়ার জুড়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে ইঁদুর বিড়াল খেলেছেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত কখনোই আগে আগে জানতে দেননি সাংবাদিকদের, সরাসরি ভক্ত-সমর্থকদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন। ব্যতিক্রম হয়নি এবারও; হুট করেই একটা ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন চেন্নাইয়ের নেতৃত্বভার এখন থেকে তাঁর হাতে নয়, থাকবে তরুণ রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের হাতে।
চেন্নাইয়ের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রয়েছে, চেন্নাইকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেন এমন সাংবাদিকরাও কিছু জানতেন না। সবাইকে অন্ধকারে রেখে, ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নীরবে নিভৃতে বিদায়ের পথ ধরেছেন।
এই যে নিজের ব্যাপারে বাকিদের অন্ধকারে রাখতে পারা এটাই তাঁর কাছে জয়ের মত; আর এমন জয়ের পর হাসি নিশ্চয়ই এক কান থেকে ও কান অবধি পৌঁছে গিয়েছে সদ্য সাবেক সিএসকে কাপ্তানের।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে যখন বিদায় বলেন তখনো প্রায় একই দৃশ্যায়ন ঘটেছিল। পুরো দেশ যখন অধীর আগ্রহ নিয়ে বসেছিল এই উইকেটরক্ষকের ভবিষ্যৎ জানতে তখন সামাজিক মাধ্যমে ছোট্ট একটা পোস্ট দিয়েই ভারতের আকাশী-নীল জার্সিকে বিদায় বলে দেন তিনি। কোন ফেয়ারওয়েল ম্যাচ নেই, কোন সংবাদ সম্মেলনে বা নাটকীয়তা নেই; কি নির্দ্বিধায় বর্ণাঢ্য একটা ক্যারিয়ারে ফুলস্টপ এঁকে দিয়েছেন।
আইপিএলের হলুদ শিবিরেও হয়তো খুব বেশিদিন থাকা হবে না এই কিংবদন্তির। এমন করেই কোন একদিন হয়তো সবাইকে জানিয়ে দিবেন চলে যাওয়ার কথা; স্ট্যাম্পের পিছন থেকে যেভাবে হাত নেড়ে ফিল্ডিংয়ে পরিবর্তন আনতেন তিনি, ক্ষণিকের জন্য এভাবেই হাত নাড়বেন সমর্থকদের দিকে। এরপরই একটা উজ্জ্বল উপন্যাসের সমাপ্তি ঘটবে।