দুবাই শহরের এক সাধারণ সেলসম্যান। ছেলেবেলা থেকেই মনের ভেতরে লুকিয়ে ছিল একটাই স্বপ্ন—ক্রিকেটার হওয়ার। সেই স্বপ্ন একসময় হারিয়ে গিয়েছিল জীবনের বাস্তবতার ভিড়ে। কিন্তু এক সিনেমা বদলে দিল সবকিছু! ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ দেখেই আবার ক্রিকেটের প্রতি নিজের আগ্রহ ও ভালোবাসা খুঁজে পান পাকিস্তানের রহস্য স্পিনার উসমান তারিক।
২৭ বছর বয়সী এই লেগ-স্পিনার সম্প্রতি ডাক পেয়েছেন পাকিস্তানের টি–টোয়েন্টি দলে। কিন্তু এই অবস্থানে পৌঁছানো তার জন্য মোটেও সহজ ছিল না। জীবনের এক পর্যায়ে যখন ক্রিকেটটা তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল, তখন মনে হয়েছিল সব শেষ। দেশ ছাড়তে হয়, পাড়ি জমান দুবাইয়ে। সেখানেই শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়—একজন সেলসম্যান হিসেবে।
তবে ভাগ্যের গল্প বদলে গেল ধোনিকে নিয়ে বানানো ওই সিনেমার হাত ধরে। উসমান বলেন, ‘আমি দলে জায়গা না পেয়ে ক্রিকেট ছেড়ে দিই। এরপর দুবাইয়ে কাজ করছিলাম। সেখানে ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ সিনেমাটা দেখি, আর ওটাই আমাকে অনুপ্রাণিত করে। চাকরি ছেড়ে পাকিস্তানে ফিরে আসি—শেষবারের মতো চেষ্টা করার জন্য।’

তার এই সাহসিক সিদ্ধান্তই বদলে দেয় জীবন। ২০২৫ সালের ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে অসাধারণ পারফরম্যান্সে আলোচনায় আসেন তিনি। ২০ উইকেট নিয়ে ছিলেন আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। সেই পারফরম্যান্সই তাকে এনে দেয় জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার সুযোগ।
তবে তারিককে ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু শুধু তার পারফরম্যান্স নয়, তার অদ্ভুত বোলিং অ্যাকশনও। এই অ্যাকশন নিয়েই বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের পাকিস্তান সুপার লিগে তার অ্যাকশন অবৈধ ঘোষিত হয়েছিল। তবে লাহোরে বায়োমেকানিক্যাল টেস্টে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি পুরোপুরি মুক্ত হন অভিযোগ থেকে।
যে ভাগ্য তাঁকে একটাসময় ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল সেই ভাগ্যই এখন তাঁকে ফিরিয়ে এনেছে জাতীয় দলের দরজায়। এখন তিনি দলের ‘মিস্ট্রি স্পিনার’। একটি সিনেমা যে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে—উসমান তারিক তারই জীবন্ত প্রমাণ।












