টাইব্রেকার নামক ভাগ্য পরীক্ষায় পর্তুগালের ত্রাণকর্তা ডিয়গো কস্তা। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোদের এ যাত্রা বাচিয়ে দিলেন তাদের গোলরক্ষক। নতুবা লেখা হয়ে যেত স্লোভেনিয়ার রুপকথা। সে পথটা তৈরি করে ফেলেছিল ইয়ান ওবলাকের দল। কিন্তু শেষ অবধি কস্তার বীরত্বে ভেস্তে গেছে সবকিছু।
রাউন্ড অব সিক্সটিনে অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষই পেয়েছিল পর্তুগাল। তবে তাদের বিপক্ষেও গোলের জন্যে হাপিত্যেশ করতে হয়েছে বার্নাডো সিলভাদের। একের পর এক আক্রমণ থমকে গেছে স্লোভেনিয়ার রক্ষণ দূর্গে। একটি গোলের জন্যে রোনালদোদের কি যে প্রয়াশ! তবুও উন্মুক্ত করা যায় না গোলবার।
একটা গোলের জন্যে রোনালদো ছোটাছুটি করেছেন। ব্যর্থ হওয়ায় নিজের উপর রাগ ঝেড়েছেন। একেরপর এক ফ্রি-কিক গোল বারে রেখেও গোল না পাওয়ায় হতাশায় ডুবেছেন। পুরো ম্যাচ জুড়েই চলেছে সে চিত্র। পর্তুগালের দাপট ছাপিয়ে হেডলাইন হয়ে যেত রোনালদোর পেনাল্টি মিস।
ম্যাচের ভাগ্য তখন টাইব্রেকারের দিকেই এগুচ্ছো। ১০৫ মিনিটের মাথায় স্লোভেনিয়ার ডি-বক্সে ফাউল করে বসেন ওয়ানহা ড্রুকোসিচ। তাতে করে পেনাল্টি পেয়ে যায় পর্তুগাল। ম্যাচটা সেখানেই শেষ করতে পারতেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সবাই হয়ত ধরেই নিয়েছিল ম্যাচের সমাপ্তিরেখা সেখানেই টেনে দেওয়া হবে।
কিন্তু রোমাঞ্চ ছড়াতে কোন কার্পণ্য করেনি ম্যাচটি। নিজের বা-দিকে দারুণ এক ডাইভ দিয়ে রোনালদোর শট ইয়ান ওবলাক। হতাশা যেন একেবারে জাপ্টে ধরে পর্তুগালের পোস্টার বয়কে। অন্যদিকে স্লোভেনিয়ার রক্ষণ জুড়েই তখন আনন্দের বন্যা। পরাজয় যে ঠেকিয়ে রাখা গেছে।
অবশ্য ওবলাকের সেই পেনাল্টি সেভ সম্ভবত আরেকপ্রান্তে থাকা ডিয়েগো কস্তাকে অনুপ্রাণিত করল। পেনাল্টি শ্যুটআউটে তিনি স্লোভেনিয়াকে একটি শটও জালে জড়াতে দেননি। অন্যদিকে রোনালদোর পর ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও বার্নাডো সিলভা বল জালে জড়িয়ে ফেলেন। তাতে করে শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ২০১৬ আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
যার পুরো কৃতীত্বই ডিয়েগো কস্তার প্রাপ্য। তার বলিষ্ঠ হাত স্লোভেনিয়ার শটকে গোললাইন অতিক্রম করতে দেয়নি। দলকে টাইব্রেকারে রেখেছিলেন স্বস্তিতে। নিজের উপরও চাপকে চেপে বসতে দেননি। তার কল্যাণে শাপমোচনের আরেকটি সুযোগ পেয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো।
টাইব্রেকারে গোল করে তিনি হাতজোর করে এবারের মত ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন বটে। কিন্তু তাকে সমর্থকরা ক্ষমা করবেন কি-না তা হয়ত নির্ধারিত হবে ফ্রান্স ম্যাচের মধ্য দিয়ে। কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স।