বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল। ধুকছে বেশ। লড়াই করছে ভাল কিছু করবার। লড়াই অবশ্য আরেকজন করছেন। তিনি এবাদত হোসেন। তার লড়াইটা অবশ্য ভিন্ন। তিনি নিজের পায়ে দাড়ানোর লড়াই করছেন। আবারও মাঠে ফিরে আসার লড়াই।
বিশ্বকাপ দল যখন দেশ ছেড়েছে তার ঠিক আগ মুহূর্তে সাকিব আল হাসান এবাদতকে নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। তার মতে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় ক্ষতিটাই হয়েছে এবাদতের ইনজুরিতে। এবাদত হোসেন যে ছিলেন বর্তমান পেস আক্রমণের অন্যতম সেনানী।
এখন অবধি বাংলাদেশের পেসাররা বিশ্বকাপে আশানরুপ পারফরমেন্স করতে পারেনি। ধারাবাহিক হতে পারেননি তাসকিন, মুস্তাফিজ কিংবা শরিফুল। তখনই হয়ত সাকিব আল হাসানের মনে উঁকি দিয়েছে এবাদত হোসেনের নাম। তবে উপায় নেই। এবাদত এখনও হাঁটছেন ক্র্যাচে ভর দিয়ে।
বিশ্বকাপ চলছে ভারতে। তবে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে জাতীয় ক্রিকেট লিগ চলমান। ম্যাচ হচ্ছে মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে। একটু হয়ত ভাল বোধ করছিলেন এবাদত। তাইতো আর বাসায় বন্দী থাকতে পারেননি তিনি। ছুটে এসেছেন শেরে বাংলার বুকে। সেখানে তিনি বাউন্ডারি লাইন ধরে হেটেছেন বহু কষ্টে।
হোম অব ক্রিকেটের ঘাস মাড়িয়ে যেন নিজের ভেতরে থাকা হতাশাকে একটু প্রশমিত করবার চেষ্টা করলেন। তার পাশে ছিলেন কাইরন থমাস। বিসিবি রিহ্যাব সেন্টারের প্রধান থমাস যেন এবাদতকে ফিরে আসার পথই দেখিয়ে দিচ্ছেন।
গেল জুলাইয়ের আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ইনজুরিতে পড়েছিলেন এবাদত হোসেন। এরপর একটানা তিনি নিজের মত করে ফেরার লড়াইটা চালিয়েছেন। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়াই ছিল তার মূল লক্ষ্য। গোটা দল যখন বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিয়েছে তখনও এবাদত নিজের ইনজুরি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছেন।
তবে ভাগ্য তার সহায় হলো না। তাকে যেতেই হলো অস্ত্রপচার টেবিলে। ল্যান্ডিং ফুট, অর্থাৎ বা-পায়ের হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন এবাদত। কোনভাবেই সেই জায়গার টিস্যুগুলো রিকভার করতে পারছিল না বলেই তাকে করাতে হয় অপারেশন।
বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাবেন জেনেও সেই কঠিন সিদ্ধান্তই নিতে হয়েছে তাকে। আর সেই দুঃখের আগুনে তিনি যেমন পুড়ছেন, তেমনি ভীষণ তাপে যায় যায় অবস্থা বাংলাদেশ দলের। নতুন বলে বাংলাদেশের পেসাররা উইকেট এনে দিতে পারছে না বিশ্বকাপে। পুরান বলেও কার্য্যকর কোন কিছু করে দেখাতে পারেনি মুস্তাফিজরা।
সেসব কারণেই আসলে এবাদতের অভাবটা টের পেতে যেন শুরু করেছে বাংলাদেশ। তবে যা চলে যায়, যা আমাদের হাতে নেই তা নিয়ে আফসোস করবার তো কোন মানে নেই। এবাদত তাই আফসোস ঝেড়ে ফেলে দিয়ে ফেরার মিশনেই নেমেছেন। তিনি দ্রুতই আবার ফিরতে চান বাইশ গজে। লাল-সবুজ জার্সি গায়ে উড়ন্ত সব স্যালুট দিতেই ফিরবেন তিনি।