বল টেম্পারিং, না?

লর্ডস টেস্টে ভারত জিতেছে নাটকীয় ভাবে – সেই রেশ যেমন আছে, তেমনি একটা বিতর্কও বেশ আলোচিত হচ্ছে।

ঘটনা লর্ডস টেস্টের চতুর্থ দিনের। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ব্যাট করছিলো ভারত। দুই ব্যাটসম্যান চেতেশ্বর পুজারা ও আজিঙ্কা রাহানে তখন উইকেটে সেট। এর মাঝেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও ভাইরাল! সেই ভিডিওতে ভেসে উঠলো ‘বল টেম্পারিং’ কাণ্ড!

প্রশ্ন হল – ঘটনাটা কি ইচ্ছাকৃত?

ইনিংসের ৩৫ তম ওভারে মার্ক উড ও ররি বার্নস বল নিয়ে ফুটবলের মতো পাস দেওয়ার ভঙ্গিতে বলের উপর বুটের স্পাইক দিয়ে পাড়া দিতে দেখা যায়। ৩৫ তম ওভারে তখন বোলিংয়ে ছিলেন পেসার ওলি রবিনসন। সে সময় বল পাস দেওয়ার ভঙ্গিমায় মার্ক উড ও ররি বার্নস এমন কাণ্ড ঘটান।

এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হবার পর থেকেই বেশ ক্ষুব্ধ ভারতীয় মিডিয়া এবং সমর্থকরা। মার্ক উডের এই কাণ্ড ‘বল টেম্পারিং’ আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) কাছে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান সমর্থকরা। অবশ্য শুধু সমর্থকরাই নন; বিষয়টি ভার‍তের সাবেক ক্রিকেটারদের নজরে এলে তারাও এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট ইন্ডিয়ার (পিটিআই) ভাষ্যমতে এ ব্যাপারে ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রডের কাছে কোনো প্রকার অভিযোগ জানাননি ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। এবং ওই বল দিয়েই পরবর্তীতে বাকি সময় খেলা হয়। তবে ভারতের ব্যাটিং কোচ ভিক্রম রাথোড় জানিয়েছেন, তাঁরা এই ব্যাপারটি বেশ পরে লক্ষ্য করেছেন। এবং এটা দেখার পর তাদেরও মনে হয়েছে এটা ইচ্ছাকৃত একটি ঘটনা।

এদিকে এই ভিডিও ভাইরাল হবার পর এ নিয়ে টুইটারে সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার বীরেন্দ্র শেবাগ ও আকাশ চোপড়া এ নিয়ে কথা বলেছেন। শেবাগ একটু খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘এটা কি হচ্ছে? এটা কি ইংলিশরা বল টেম্পারিং করছে নাকি করোনা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে?’।

অপরদিকে আকাশ চোপড়া তাঁর টুইটে স্রেফ একটা প্রশ্ন ছুড়েছেন, ‘বল টেম্পারিং, না?’

তবে এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছেন ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। ইনজুরির কারণে পুরো সিরিজ থেকে ছিটকে যান এই ইংলিস পেসার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয়দের ক্ষোভের বিপরীতে ব্রড এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘উড পা দিয়ে বল ট্যাপ করে বার্নসকে দিচ্ছিলো। আমার কাছে মনে হয় এটা একটা সাধারণ ঘটনা। তবে পরবর্তীতে সেটি মিস করে এবং বলে অনিচ্ছাকৃত ভাবে লাথি লাগে। এই ছবি স্ক্রিনশট করার বদলে ভিডিওটি ভালো করে দেখুন। এটা বেশ সোজাসাপটা একটা ব্যাপার।’

২০১৮ সালের মার্চে ক্যাপটাউনে স্যান্ডপেপারে বল ঘষার কারণে বল টেম্পারিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত হন অজি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার এবং ক্যামেরন ব্যানক্রফট। সেই সাথে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট (সিএ) তাদেরকে বেশ কিছু সময়ের নিষেধাজ্ঞাও প্রদান করে। এরপর বল টেম্পারিং নিয়ে সোচ্চার পুরো ক্রিকেট বিশ্বই।

সম্প্রতি লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ডের দুই ফিল্ডারের এমন কাণ্ডে আবারো অভিযোগ উঠেছে বল টেম্পারিংয়ের। সেই টেস্টে যতই ভারত জিতে যাক, যতই অভিযোগ অস্বীকার করুক ইংল্যান্ড দল – ভারতীয় সমর্থকরা এখনও বেশ উত্তেজিত। দেখা যাক এই বিতর্কের জল কতদূর গড়ায়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link