ক্রিকেট বিশ্বের দলগুলো এখন ব্যস্ত তাঁদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেয়ায়। মোটামুটি সব দলই বিভিন্ন সিরিজ খেলে নিজেদের বিশ্বকাপের জন্য তৈরি করছেন। বড় বড় দলগুলো তাঁদের পাইপলাইনের ক্রিকেটারদের শেষবারের মত বাজিয়ে দেখছেন। দলগুলো তাঁদের মূল খেলোয়াড়দের আবার সাবধানে রাখছেন যাতে কোন ইনজুরির কবলে না পড়েন। তবে সেই দুর্ভাগ্যেরই স্বীকার হয়েছেন জোফরা আর্চার, স্বীকার হয়েছে ইংল্যান্ডও।
ইংল্যান্ডের সামনে এখন দুটো বড় ইভেন্ট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পাশাপাশি আছে অ্যাশেজ সিরিজ। তবে এর কোনটাতেই তাঁদের সেরা পেসারকে পাচ্ছেনা ইংল্যান্ড। কনুইয়ের ইনজুরির কারণে এই দুই আসর থেকেই নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন জোফরা আর্চার। ফলে ইংল্যান্ড দলের কপালে চিন্তার ভাজ। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বোলিং আক্রমণের নেতৃত্বে থাকার কথা ছিল এই পেসারের।
আর্চার না থাকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পুরো পরিকল্পনাই যেনো ভেস্তে গেল দলটির। পুরো বোলিং আক্রমণ আবার সাজাতে হবে নতুন করে। রাতারাতি তো আর জোফরা আর্চারের মত বোলারের বদলি বের করা সম্ভব না। ফলে পুরো দলকেই নিতে হবে বাড়তি দায়িত্ব। শুধু বোলার না, ব্যাটসম্যানদেরও হয়তো সামনে এগিয়ে আসতে হবে।
জোফরা আর্চারের মত পেসারকে রাতারাতি বদলি করা সম্ভব না সেটা ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) বেশ ভালো করেই জানে। ফলে তাঁরা নিশ্চই মনোযোগ দিবে কি করে আর্চারের ঘাটতি পূরণ করা যায় সেদিকেই। ইংল্যান্ড অবশ্য ক্রিকেটে তাঁদের মধুর সময় পার করছে। তাঁদের পাইপলাইনে এখন প্রচুর ক্রিকেটার। তাঁদের নানারকম স্কিলও আছে। তবে আর্চারের মত করেই কাজ টা করে দিবেন এমন কেউ নিশ্চই নেই।
গত কয়েক বছরে আর্চার ক্রিকেট বিশ্বে ব্যাটসম্যানদের জন্য এক আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছেন। ইংল্যান্ড তো বটেই পুরো বিশ্বেই সাদা বলের ক্রিকেটে নিজেকে সেরাদের কাতারে নিয়ে গিয়েছেন। বিশেষ করে নতুন বলে তিনি যেনো অপ্রতিরোদ্ধ। এছাড়া আর্চারের মত বোলারকে অধিনায়ক ম্যাচের যেকোন সময়ই ভরসা করতে পারেন। দলের প্রয়োজনের মুহুর্তে উইকেট এনে দেয়াতেও তাঁর জুরি নেই।
জোফরা আর্চারকে কেউ যেহেতু বদলি করতে পারছেনা ফলে ইংল্যান্ডকে মনোযোগ দিতে হবে সৃজনশীল পরিকল্পনায়। তাঁদেরকে হয়তো কিছু কমফোর্ট জোন থেকেও বেড়িয়ে আসতে হবে। নিজের রোল প্লে করতে পারবে এমন কয়েকজন বোলারকে প্রয়োজন ইংল্যান্ড এর। তাঁদের সমৃদ্ধ পাইপলাইনে অবশ্য এমন অনেক ক্রিকেটারই আছেন যারা নিজেদের রোলটা ঠিক করে প্লে করতে পারবেন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন বলে ডেভিড উইলি ইংল্যান্ডের বড় ভরসার নাম। এছাড়া ব্যাট হাতেও যথেষ্ট কার্যকর তিনি। এছাড়া ডেথ ওভারে টাইমাল মিলসও বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বড় ভরসার নাম হতে পারেন। ওদিকে ইংল্যান্ড ক্রিকেটের তারকা ক্রিস ওকস ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটে নিয়মিত হলেও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁকে খুব একটা দেখা যায় না ইংল্যান্ডের হয়ে।
তবে, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) গিয়ে বোলিং এ অনেক বৈচিত্র্য এনেছেন তিনি। এছাড়া স্বাভাবিক ভাবেই ক্রিস ওয়োকসের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের সেরাটা দেয়ার সুযোগ আছে। এছাড়া সাকিব মাহমুদের মত বোলাররাও আছে ইংল্যান্ডের পাইপলাইনে। এশিয়ার উইকেটে যারা যথেষ্ট কার্যকর হতে পারেন।
এছাড়া মঈন আলীদেরও জোফরা আর্চারের অভাব পূরণের জন্য বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। ইংল্যান্ডের পার্ট টাইম বোলাররা তাঁদের সেরাটা দিলে অধিনায়কের জন্য কাজটা আরো সহজ হয়ে যাবে। এছাড়া ইংল্যান্ডের মরগ্যানের মত অধিনায়ক তো আছেনই তাঁর ক্রিকেটারদের সেরাটা বের করে আনার জন্য। মোদ্দাকথা কোন নির্দিষ্ট একজন যেহেতু আর্চারের অভাব পূরণ করতে পারবেন না ফলে পুরো দল মিলেই কাজটা করতে হবে।