লাল বলের ক্রিকেট ছাড়া এই মুহূর্তে খুব একটা বাইশ গজে দেখা মেলে না বেন স্টোকসের। মাস দুয়েক আগেই ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে নিয়েছেন অবসর। আর শেষ বার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন তা প্রায় বছর দেড়েক আগে। তবে খেলবেন এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তাইতো এর মধ্যেই একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে। ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি একাদশে জায়গা পাবেন তো স্টোকস?
বেন স্টোকস। নামের ভার, পরিসংখ্যান, ফর্ম- সব কিছু মিলিয়ে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে অটোমেটিক চয়েস তিনি। কিন্তু মাস দুয়েকের ব্যবধানে তাঁর জায়গাটা যে একেবারেই নির্ধারিত সেটা বলা যাচ্ছে না। মাস দুইয়ের ব্যবধান কেন? ইয়ন মরগান ক্রিকেট থেকে অবসর নিলে নতুন অধিনায়ক জস বাটলার যেন দলই সাজাতে পারছিলেন না।
ওপেনিংয়ে সমস্যা। সে সমস্যা আরও তীব্র হয় জনি বেয়ারস্টো ইনজুরিতে ছিটকে গেলে। এর উপর মিডল অর্ডারে স্টোকস নিয়মিত না খেলায় নতুন করে কোনো ব্যাটার পারফর্মই করতে পারছিলেন না। সব কিছু মিলিয়ে ইংল্যান্ডের নতুন টি-টোয়েন্টি দলটি ছিল নানান সমস্যায় জর্জরিত।
কিন্তু হঠাৎই ইংল্যান্ড দল ছন্দে ফেরা শুরু করল। অবশ্য সেই যাত্রাটা বাটলারের অনুপস্থিতিতেই হল। নিয়মিত অধিনায়ক ছাড়াই পাকিস্তান সফরে এসেছে ইংল্যান্ড। মইন আলীর নেতৃত্বের সে দলে ওপেনিং থেকে শুরু করে মিডল অর্ডার সব খানেই মিলল চমকপ্রদ পারফরম্যান্স। বহুদিন পর ওপেনিংয়ে অ্যালেক্স হেলস ফিরে এসে ইংলিশ শিবিরে দিলেন স্বস্তির হাওয়া। অর্থাৎ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হয়ে হেলস আর বাটলার জুটিই দেখতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্ব।
এ ছাড়া পাকিস্তান সিরিজে বেন ডাকেটের ৭০ রানের একটি ইনিংস এবং হ্যারি ব্রুকের ৩৫ বলের ৮১ রানের ইনিংসটি দুর্দান্তভাবে অলোচনায় এসেছে। শুধু ঐ দুই ইনিংসই না, পুরো সিরিজেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন এ দুই ব্যাটার। স্ট্রাইক রেট ঠিক রেখে পরিস্থিতি বিবেচনায় দারুণ সব ইনিংস খেলেছেন তাঁরা।
মিডল অর্ডারে ইংল্যান্ডের আরেক ভরসার নাম লিয়াম লিভিংস্টোন। বাটলারের মত তিনিও ছিলেন না এই সিরিজে। তবে বেন ডাকেট আর হ্যারি ব্রুকের পারফরম্যান্সে তাঁর জায়গাটাও নড়বড়ে হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
আরেকটা বিষয় হলো, তিনে ডেভিড মালান খেললে পরের দুই পজিশনের জন্য চার ক্রিকেটারের মধ্যে ইংল্যান্ডকে খেলাতে হবে দুই জনকে। কারণ মইন আলীকে ৭ নম্বরে খেলালে ইংল্যান্ডের একটি বোলিং অপশন কমে যায়। এজন্য বিশ্বকাপে ৬ নম্বরেই দেখা যাবে মইনকে। সে হিসেবে বাকি দুই স্লট চার ও পাঁচে দেখা যাবে স্টোকস, বেন ডাকেট, হ্যারি ব্রুক আর লিভিংস্টোনের মধ্যে দু’জনকে। অর্থাৎ বেন স্টোকসও নিশ্চিত নন, ইংল্যান্ড একাদশেচেঁর সুযোগ মিলবে কিনা।
তবে বেন স্টোকস অলরাউন্ডার। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়ে ভাল ব্রেক থ্রুও দিতে পারেন। কিন্তু বহুদিন ধরে ইংল্যান্ড জার্সিতে টি-টোয়েন্টি না খেলায় কিছু শঙ্কা থাকছেই। হয়তো অতীত পরিসংখ্যানের কারণে প্রথম একাদশেই তিনি সুযোগ পাবেন।
কিন্তু সেই জায়গাটা একদম স্টোকসের জন্য নির্ধারিত শেষ পর্যন্ত থাকে কিনা সেটারও শঙ্কা রয়েছে। কারণ বিকল্প হিসেবে ফর্মে থাকা ক্রিকেটার ইংল্যান্ডের সাইডবেঞ্চেই বসে থাকবে। তাই বিশ্বকাপের প্রথম কিছু ম্যাচ ভাল পারফর্ম না করতে পারলে স্টোকসের জন্য বিশ্বকাপের সমীকরণ হঠাৎ করেই পাল্টে যেতে পারে। একই কথা প্রযোজ্য লিয়াম লিভিংস্টোনের ক্ষেত্রেও। কারণ তাঁর জায়গাতেও নতুন পারফর্মার তৈরি হয়ে গিয়েছে। তিনিও থাকবেন টিম ম্যানেজমেন্টের পরীক্ষা নিরীক্ষার মাঝে।