দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০২০ এর বিশ্বকাপ পিছিয়ে গেলেও ঠেকলেও ২০২১ এর শেষেই আরেকটি বিশ্বকাপ। তাতে কি হচ্ছে তো, তাতেই যেন স্বস্তি খেলোয়াড় থেকে শুরু করে দর্শক সমর্থকদের। সবচেয়ে বেশি খুশি হয়ত আইসিসির সহযোগী দলগুলো। আরো একটি মেগা ইভেন্ট পাওয়া গেলো, নিজেদেরকে প্রমাণের আরো একটি সুযোগ পাওয়া গেলো, আর পাওয়া গেলো বড় বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলার সুযোগ।
ইতোমধ্যে অংশগ্রহনকারী সবগুলো দেশ তাদের ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করে ফেলেছে। বেশ কিছু চমকের দেখা মিলেছে ভারত সহ নানা দেশের স্কোয়াডে। তবে একটা তথ্য হয়ত অনেকেরই অজানা। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এমন ছয়জন খেলোয়াড় খেলতে চলেছেন যাদের ক্রিকেটের ক্ষুদ্রে সংস্করণের মহাযজ্ঞে এ নিয়ে অংশগ্রহণ সংখা দাঁড়াবে সাতে। চলুন আজ তাদের সম্পর্কেই জেনে নেওয়া যাক।
- সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)
বাংলাদেশের অত্যন্ত ভরসার প্রতীক সাকিব। দলে যেকোনো খারাপ পরিস্থিতিতে তিনি নিজের একক নৈপুণ্যে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেছেন বহুবার। এবারেও সাকিবের উপর ব্যাটে-বলে গুরু দায়িত্ব থাকবে। এক ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞ সাকিবেই হয়ত ভরসা করবে ১৬ কোটি মানুষ।
বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের স্ট্যাটস তার উপর ভরসা করতেই উদ্ধুদ্ধ করে। এখন পর্যন্ত খেলা ২৫ টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ম্যাচে প্রায় ৩০ গড়ে তিনি রান করেছেন ৫৬৭। অন্যদিকে বল হাতেও বেশ কার্যকরী সাকিব ৬.৬৪ ইকোনমি রেটে উইকেট নিয়েছেন ৩০ টি।
- রোহিত শর্মা (ভারত)
ভারতে আস্থার সবচেয়ে বড় জায়গা এই মারকুটে ওপেনার৷ অভিজ্ঞতার ঝুলি খুলে বসবেন এবারের আসরে। ২০০৭ থেকে এখন অবদি সবগুলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের অংশ ছিলেন তিনি।
একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে চারটি শতক হাকানোর রেকর্ড তার ঝুলিতেই রয়েছে৷ এখন পর্যন্ত খেলা সাত বিশ্বকাপে তাঁর গড় প্রায় ৪০, রান করেছেন ৬৭৩ ২৮ ম্যাচে। তাঁর দিনে তাঁর ব্যাটিং তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যেতে পারে প্রতিপক্ষ দল।
- মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)
বাংলাদেশ দলের অন্যতম স্কিলফুল ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। অভিজ্ঞ এই খেলোয়াড়ও সপ্তম বারের জন্য খেলতে চলেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। পরিসংখ্যান বেমানান ২৫ বিশ্বকাপে ম্যাচে রান মোটে ২৫৮।
তবে বাংলাদেশ টিম তার কাছে থেকে এর থেকেও বেশি কিছু আশা করতে চাইবে৷ উইকেট কিপিং এর ভার তাঁর কাধ থেকে নেমে যাওয়ায় তিনি হয়ত এ বিশ্বকাপে ভাল কিছুই করবেন বলে প্রত্যাশা সকলের। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে মুশফিকের টি-টোয়েন্টি ফর্ম যাচ্ছেতাই।
- ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
বিশাল দেহী এই ব্যাটসম্যান গেইল টি-টোয়েন্টির যেন এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ক্রিকেটের এর এই ছোট্ট সংস্করণের সব মিলিয়ে তার রান সংখ্যা ১৪০০০। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিরাট এক দানব তিনি। ২৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ম্যাচে ১৪০ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন ৯২০, গড় ৪০ এর কাছাকাছি।
মাত্র ৯০ রান দূরে রয়েছেন লঙ্কান কিংবদন্তি মাহেলা জয়াবর্ধনের বিশ্বকাপ রানের রেকর্ড ছুয়ে ফেলতে। সম্ভবত তাঁর শেষ বিশ্বকাপে চাইবেন আরো একটি রেকর্ডের বুকে নিজের নাম লিখে রেখে যেতে। তার ব্যাটিং ঝড় দেখতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় দর্শকেরা৷
- মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (বাংলাদেশ)
বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাম্প্রতিক ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সিরিজে তাঁর অধিনায়কত্ব আশা জাগানিয়া।
তাঁর উপর দায়িত্ব থাকবে দলকে সঠিক পথে পরিচালনার৷ তিনি হয়ত তার অভিজ্ঞতার সম্পূর্ণটা নিংড়ে দেবেন এবারের বিশ্বকাপে৷ ২২ ম্যাচে ১৯৪ রানের পাশাপাশি তার ঝুলিতে রয়েছে ৮ টি উইকেট।
- ডোয়াইন ব্রাভো (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
দু’বার বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে সপ্তমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাচ্ছেন ডোয়াইন ব্রাভো৷ তার বিশ্বকাপ জেতার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হয়ত চাইবে আরো একটি বিশ্বকাপ নিজেদের করে নিতে।
অভিজ্ঞ এই খেলোয়াড় ২৯ বিশ্বকাপ ম্যাচে রান করেছেন ৫০৪। ১২৯.২৩ স্ট্রাইকরেটে রান তুলতে পারার ক্ষমতাই হয়ত বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে চলেছে আসন্ন বিশ্বকাপে। এছাড়াও তার অভিজ্ঞতা ঝুলিতে রয়েছে ২৫ উইকেট।