ফখর জামান রীতিমত নির্দয় এক নির্ভীক। ভয় অন্তত তিনি পাননা নিজের ব্যক্তিগত পরিসংখ্যানের। তাইতো ফিফটির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ছক্কা হাকাতে দ্বিধাবোধ করেন না। বহুদিন বাদে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে নিজস্ব স্টাইলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ফখর জামান।
ইনজুরি আক্রান্ত ছিলেন তিনি। মাঝে অবশ্য খেলেছেন পাকিস্তান সুপার লিগ। তবে ছন্দ ফিরে তিনি যেন সেখানেও পাননি। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি চতুর্থ টি-টোয়েন্টি-তে সুযোগ পান একাদশে। মোহাম্মদ রিজওয়ানের ইনজুরিতেই বরং সেই সুযোগটি পান তিনি।
ফখর যেন রীতিমত মুখিয়ে ছিলেন। তিনি পাকিস্তানের জার্সি গায়ে পারফরম করতেও যেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তেমনটিই করলেন লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। দারুণ এক অর্ধশতক হাকিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি তার দশম অর্ধশতক।
সায়িম আইয়ুবের বিদায়ের পর ফখর আসেন ক্রিজে। তিনি আসার কিছুক্ষণ বাদেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন উসমান খান। তাইতো একটু রয়েসয়ে ইনিংসটি বিল্ডআপ করতে হয়েছে তাকে। সে যাত্রায় নিয়ম করে রানও আদায় করে গেছেন তিনি। কখনো শাদাব খান, কখনো ইফতেখার আহমেদের সাথে জুটি গড়ে তোলেন।
তবে যোগ্য সঙ্গ তিনি পাননি এদিন। একাই তাই তিনি ম্যাচের যতটা সম্ভব গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। যদিও শেষ অবধি কাজের কাজটি হয়নি কিছু। ৬১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১৩৫ এর একটু বেশি স্ট্রাইকরেটের এই ইনিংসটিতে ছিল ৩টি ছক্কা ও ৪টি চার।
কিন্তু ৪৩ বল খরচ করা ফখর যখন আউট হয়েছেন তখনও জয় থেকে বেশ দূরেই ছিল পাকিস্তান। সেট ব্যাটার হিসেবে ফখরের দায়িত্ব ছিল ম্যাচ শেষ করে আসার। অভিজ্ঞ ব্যাটারের ব্যাটে ভর করেই জয়ের প্রত্যাশা করেছে পাকিস্তান দল। তবে হয়নি তেমনটি।
স্বীকৃত শেষ ব্যাটার হিসেবে তিনি আউট হন। তাতে করে জয়ের খুব কাছে গিয়েও হারতে হয়েছে পাকিস্তানকে। সিরিজে ২-১ এ ব্যবধানে পিছিয়ে যায় স্বাগতিকরা। যদিও এই পরাজয়ের পুরো দায় স্রেফ ফখরের উপর বর্তায় না। পাকিস্তানের ব্যাটিং অর্ডার যথারীতি পরাজয়ের দায় এড়াতে পারেনা।
বাবর আজম, সায়িম আইয়ুবরা নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি। শাদাব খানের আগের দিনের মারকাটারি ব্যাটিং এদিন ছিল অনুপস্থিত। ফখর তবুও চেষ্টা করে গেছেন নিজের রান বাড়ানোর পাশাপাশি দলকে জয়ে এনে দিতে। শেষ অবধি সফলতার দেখা পাননি ফখর।
তবে এখন সম্ভবত হতাশ হওয়ার কিছু নেই। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের এই সিরিজ প্রস্তুতির অংশ। বিশ্বকাপের জন্যে খেলোয়াড় বাছাইয়ের মঞ্চও বলা যেতে পারে। একাদশে একাধিক পরিবর্তন অন্তত আভাস দেয়। সেদিক বিবেচনায় ফখর জামানের ইনিংসটি তাকে ও পাকিস্তান দলকে নির্ভারই করবে। তিনি যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্য বর্তমান এই পাকিস্তান দলের।