লিটন দাসের ইস্যুতে সংখ্যালঘু তত্ত্বের টাম্পকার্ডটাই খেলল ভারতের এবিপি গ্রুপ। আসন্ন আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে লিটন দাসের ডাক না পাওয়ার পেছনে পারফরম্যান্স নয়, বরং দায়ী লিটন দাসের ধর্মীয় পরিচয় – এমনটাই মনে করছে ভারতের এই গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান।
এবিপি আনন্দে প্রচারিত খবরের শিরোনামটা এমন – ‘সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারে উত্তাল দেশ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য বাংলাদেশের দল থেকে বাদ লিটন’। বোঝাই যাচ্ছে এখানে আসলে কি বলতে চাওয়া হয়েছে। তাঁদের ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখানেই খবরটা প্রচার করা হয়েছে।
সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারকে কেন্দ্র করে অনেকদিন ধরেই ভারত, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যমগুলো খবর প্রচার করে আসছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খবরগুলোতে কোনো সত্য মিথ্যা যাচাই করার বালাই নেই। বাংলাদেশের রাজনীতির সাথে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মিলিয়ে এবার অযাচিত মিথ্যাচার করেছে এবিপি আনন্দ।
বাড়তি কিছু কাটতি বাড়ানোর জন্য এতটা নিচে নামার কি দরকার ছিল? বাস্তবতা বলছে, সংখ্যালঘৃুদের ওপর অত্যাচারে বাংলাদেশ উত্তাল হয়নি। আর এর জের ধরে তো লিটন দাসের জাতীয় দল থেকে জায়গা হারানোর প্রশ্নই ওঠে না।
লিটন দাস নেহায়েৎই পারফরম্যান্স জনিত ইস্যুতে বাদ পড়েছেন। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের পর তিনি ১৩ টি ওয়ানডে খেললেও একটাও হাফ সেঞ্চুরি পাননি। ২০২৪ সালে খেলা পাঁচ ওয়ানডেতে তাঁর রান ছয়। গড় মাত্র ১.২০! এমন একজনকে বাদ দিতে আসলে বাড়তি কিছু ভাবার দরকার পড়ে না। বরং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচক প্যানেল মিডল অর্ডারে লিটনের জায়গা খুঁজে ছিল। সেটাও ব্যাটে-বলে হয়নি।
তবে, লিটনের এখনও ফেরার সুযোগ আছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএলে) ৫৫ বলে ১২৫ রানের অপরাজিত এক সেঞ্চুরি করে নিজের সক্ষমতার প্রমাণ রেখেছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আসছে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোনো কারণ না দেখিয়েই খেলোয়াড় পরিবর্তন করার সুযোগ আছে।
বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টও লিটনের পারফরম্যান্স এই সময় পর্যন্ত আতশী কাচের নিচে রাখবে। এই সময়ে আনন্দবাজার গ্রুপের ‘ক্লিক-বেইট’ খবরে বাড়তি কিছু ভিউয়ার আর দুই দেশের বৈরিতা বাড়ানো ছাড়া প্রাপ্তির খাতা একেবারেই শূন্য। একই সাথে বৈশ্বিক মহলে বাংলাদেশের ইমেজ নষ্ট করার অপচেষ্টাও বলা যেতে পারে এই খবরকে।