আগের ম্যাচের থেকে আজ লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় ছিল না। তবে আগের ম্যাচে শতরানের উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশ পেয়েছিল জয়ের ভিত। আজ ব্যর্থ ছিলেন দুই ওপেনার। দায়িত্ব নিতে পারেননি বাকি ব্যাটসম্যানরাও। ব্যাটিং ব্যর্থতায় সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের কাছে ২৩ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।
অথচ ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে দারুণ বল করে বাংলাদেশের বোলাররা লক্ষ্যটা নাগালেই রেখেছিল। দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকারের সাথে ব্যর্থ ছিলেন সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসানরা। শেষের দিকে প্রত্যাশিত ঝড় তুলেও পারেননি শামিম হোসেন পাটোয়ারি।
১৬৭ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটাই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ব্লেসিং মুজারাবানি জোড়া আঘাতে ইনিংসের শুরুতেই ফিরে যান দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও মোহম্মদ নাইম শেখ। এই পেসারের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান নাইম শেখ। ৮ বলে ৫ রান করে নাইম ফিরে যাওয়ার দুই বল পরেই ৭ বলে ৮ রান করে ফিরে যান সৌম্য সরকার।
১৭ রানে দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর ওয়েলিংটন মাসাকাদজার তান্ডবে ম্যাচ থেকেই ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এই পেসারের ধাক্কায় একে একে ফিরে যান সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১০ বলে ১২ রান করেন সাকিব। মেহেদীর ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ১৫ রান ও মাহমুদউল্লাহ ফিরে যান ৬ বলে ৪ রান করে।
৫৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর আর ঘুঁড়ে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষের দিকে শামিম হোসেন পাটোয়ারি ও আফিফ হোসেন চেষ্টা করলেও জয়ের জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত এক বল বাকি থাকতেই ১৪৩ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
শামিম করেন ১৩ বলে ২৯ রান ও আফিফ করেন ২৫ বলে ২৪ রান এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন করেন ১৫ বলে ১৯ রান। জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে মাসাকাদজা ও লুক জঙ্গে তিনটি ও ব্লেসিং মুজারবানি এবং টেন্ডাই চাতারা দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের শুরুটাই ভালো হয়নি। নতুন বলে সুযোগ পেয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন মেহেদী হাসান। এই স্পিনারের একটু অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকা বল খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান তাদিওয়ানাশে মারুমানি। ৫ বলে ৩ রান করে মারুমানি আউট হয়ে যাওয়ার পর উইকেটে এসেই ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান রেগিস চাকাভা।
তাসকিন আহমেদের বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। শর্ট ফাইন লেগ থেকে শরিফুল ইসলাম এবং ডিপ স্কয়ার লেগ থেকে ছুটে আসেন মেহেদী হাসান। কিন্ত কল না করার কারণে চেষ্টাই করেননি কেউই। তবে শূন্য রানে জীবন পেয়েও বেশি সুবিধা করতে পারেননি আগের ম্যাচ গুলোতে দারুণ ব্যাট করা চাকাভা।
সাকিব আল হাসানের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল টেনে খেলার চেষ্টা করে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ৯ বলে ১৪ রান করে ফিরে যান তিনি। ৪২ বলে ২ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন ওয়েসলি মাধেভেরে ও ডিয়ন মেয়ার্স। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৭ রান যোগ করেন দুজন। বিপজ্জনক হওয়া এই জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ পয়েন্টে মেহেদী হাসানের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
২১ বলে ২৬ রান করে মেয়ার্স ফিরে যাওয়ার পর রান আউটের ফাঁদে পড়েন সিকান্দার রাজা। ৪ রান করে রাজা ফিরে যাওয়ার পর পথের কাটা হয়ে থাকা ওয়েসলি মাধেভেরেকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল ইসলাম। ৫৭ বলে ৭৩ রান করে ফিরে যান এই ওপেনার। ১৩৯ রানে মাধাভারে ফিরে যাওয়ার পর শেষের দিকে রায়ান বার্লের ১৯ বলে ৩৯ রানে ভর করে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের বোলারদের ভিতর সবচেয়ে সফল ছিলেন শরিফুল ইসলাম। ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন এই পেসার। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে: ১৬৬/৬ (ওভার: ২০; মাধেভেরে- ৭৩, চাকাভা- ১৪, বার্ল- ৩৪) (শরিফুল- ৪-০-৩৩-৩, সাকিব- ৪-০-৩২-১)
বাংলাদেশ: ১৪৩/১০ (ওভার: ১৯.৫; নাঈম- ৩, সৌম্য- ৮, সাকিব- ১২, মাহমুদউল্লাহ- ৪, আফিফ- ২৪, শামিম- ২৯, সাইফউদ্দিন- ১৫ ) (মাসাকাদজা- ৪-০-২০-৩, মুজারবানি- ৪-০-২১-২, জঙ্গে- ৩.৫-০-৩১-৩)
ফলাফল: জিম্বাবুয়ে ২৩ রানে জয়ী।