উদ্বোধনী জুটি ও ডট-সংকট

পাওয়ার প্লেতে ৩৭ বলের মাঝে ১৯ বল মোকাবিলা করা সৌম্য ডট দিয়েছে ১২ টি! অপরদিকে নাঈম ১৮ বলের মোকাবিলায় ডট দিয়েছে ৬ টি। টার্গেট কম হলেও এমন বিষয়গুলো বেশ হতাশার। আপনি বড় দলগুলোর দিকে তাকালে দেখবেন তারা কম রানের লক্ষ্যে নামলেও স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে যায়। তাদের ব্যাটসম্যানরা ডটের সংখ্যা কমিয়ে স্ট্রাইক রোটেশনে রান বাড়িয়ে নিয়ে থাকে।

সৌম্য ৪৫ বলে ২০!

রান নয়, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সৌম্যর ডটের সংখ্যা। সবমিলিয়ে ৪৫ বলে ঠিক ৫০ রানে রান আউটে কাঁটা পড়ে মাঠ ছাড়ার মূহুর্তে ৪ বাউন্ডারির সাথে হাঁকিয়েছিলেন ২ ওভার বাউন্ডারি। বিষয়টি দাঁড়ালো ৬ বলে ২৮ রান করা সৌম্য বাকি ২২ রান করতে খরচ করেছে ৩৯ বল।

নতুন বলে কনফিডেন্সে ব্যাটিং করেছেন বলে মনে হয়নি খুব একটা। প্রতিপক্ষ কম রানের টার্গেট দিছে বলেই এমন ধীরগতির ব্যাটিং করেছে সেটাও মানতে নারাজ। কেননা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেও ধীরগতির ব্যাটিং করতে দেখা গিয়েছিল সৌম্যকে। আজ স্পিনে আগের তুলনায় কিছুটা সাবলীল ব্যাটিং করলেও স্লোয়ারে ভুগেছেন বেশ। আবার কিছু বলে চার্জ করতে গিয়ে মিস করেছেন।

এখানে ব্যাটিংয়ে আরেকটু মনোযোগী হলে বেশকিছু সিঙ্গেল বা ডাবলস বের করতে পারতেন। সেক্ষেত্রে ডটের সংখ্যা কমার পাশাপাশি স্ট্রাইক রোটেশনে রান বাড়িয়ে নিতে পারতো। আজ কম রানের কারণে ডটের বিষয়টি চাপা দিতে চাইলে সেটা অনেকটা বোকামি হবে।

মোহাম্মদ নাইম শেখ ৫১ বলে ১১!

নাইম শেখের ব্যাটিংয়ে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে বলে মনে হয়েছে। আগে ডট দিতেন বেশি, প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেখানে ডটের সংখ্যা তুলনামূলক কম। পাওয়ার প্লেতেও বেশকিছু সিঙ্গেল নিতে দেখা গিয়েছে তাকে। পাওয়ার প্লেতে ১৮ বলের মোকাবিলায় ডট দিয়েছেন ৬ টি!

এরপর বেশ সাবলীল ভঙ্গিতে স্ট্রাইক রোটেশন করতে দেখা গেলেও ক্যারিয়ার বাঁচানো ইনিংস খেলেছেন সেটা বলতেই হয়। নাঈম শেখকেও স্পিনে সাবলীল মনে হয়নি খুব একটা। পেসে পরাস্ত হতেও দেখা গিয়েছে তাকে। যদিও শেষ পর্যন্ত ৫১ বলে ৬৩ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন তিনি।

নাঈমের এমন ব্যাটিং ওয়ানডে ক্রিকেটে বেশ কার্যকরী মনে হবে বলেই মনে হচ্ছে। মিডল অর্ডারে তথা চার/পাঁচ নাম্বারে নাঈমকে চেষ্টা করলে মন্দ হয়না। বিশেষ করে তার স্ট্রাইক রোটেশনের বিষয়টি নজর কেড়েছে। এখানে বিসিবি তাকে নিয়ে একটা পরীক্ষা চালাতেই পারে মিঠুন/মোসাদ্দেকের জায়গায়।

সৌম্য-নাঈমের ক্যারিয়ার বাঁচানো ইনিংসের চেয়ে সোহানের কয়েক মিনিটের ব্যাটিং আমাকে তৃপ্তি দিয়েছে বেশি। শেষ ১৮ বলে ২৭ রানের লক্ষ্যে ১৮ তম ওভারের প্রথম বলে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে হাঁকানো চারটি যতোটা তৃপ্তি দিয়েছে তার চেয়ে বেশি তৃপ্তি দিয়েছে মুজারাবানির ফুলটস বলে ছক্কা হাঁকানোর দৃশ্যটি।

বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান যে এমন ছক্কা হাঁকাতে পারে সেটা ভাবতেই কেমন যেনো শান্তি লাগতেছে। সত্যি বলতে সোহানের এমন ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ না হয়ে উপায়ও নেই। টি-টোয়েন্টি তো এভাবেই খেলতে হয়।

পাওয়ার প্লেতে ৩৭ বলের মাঝে ১৯ বল মোকাবিলা করা সৌম্য ডট দিয়েছে ১২ টি! অপরদিকে নাঈম ১৮ বলের মোকাবিলায় ডট দিয়েছে ৬ টি। টার্গেট কম হলেও এমন বিষয়গুলো বেশ হতাশার। আপনি বড় দলগুলোর দিকে তাকালে দেখবেন তারা কম রানের লক্ষ্যে নামলেও স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে যায়। তাদের ব্যাটসম্যানরা ডটের সংখ্যা কমিয়ে স্ট্রাইক রোটেশনে রান বাড়িয়ে নিয়ে থাকে।

আমাদের ব্যাটসম্যানরা এখানে ব্যতিক্রম। ক্যারিয়ার বাঁচানো এমন ধীরগতির ইনিংসের চেয়ে টি-টোয়েন্টি মেজাজে কিছুটা সময় ব্যাটিং করলেও দল এগিয়ে যাবে অনেকদূর। এর থেকেও বড় কথা স্ট্রাইক রোটেশনে নজর দিলে রান বাড়িয়ে নেওয়া সম্ভব। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে খেললেও প্রতি ওভরে ৭/৮ নেওয়া সম্ভব। এখানে আমাদের ব্যাটসম্যানরা পিছিয়ে বেশ। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে ভালো কিছু উপহার দিবে সৌম্য-নাঈমরা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...