পঞ্চম আকাশে উড়ছে সিলেট

সিলেট স্ট্রাইকার্সের জয়-রথ যেন থামছেই না। ঢাকা পর্বে খেলা চার ম্যাচের চারটিতেই জিতেছিল মাশরাফির নেতৃত্বাধীন দলটা। এবার সেই ধারা অব্যাহত রেখে চট্টগ্রামের মাটিতেও জয় তুলে নিল তারা। ঢাকা ডমিনেটর্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এখন পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে অপরাজিত হয়ে রইল সিলেট।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এ দিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক নাসির হোসেন। কিন্তু ইনিংসের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ঢাকা। গোল্ডেন ডাকের শিকার হয়ে প্রথম ওভারেই ফিরে যান ওপেনার সৌম্য সরকার। একই পথে হাঁটেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ ক্রিকেটার রবিন দাস। বিপিএলে প্রথম বারের মত মাঠে নামার দিনে তিনিও ফিরেছেন শূন্য রানে।

ঢাকার ব্যাটিং লাইন আপের এমন বিপর্যয় আর পরেও কাটিয়ে ওঠা যায়নি। বরং মিডল অর্ডারে নেমে ২৩ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলে উল্টো দলের উপর চাপ বাড়িয়েছেন মোহাম্মদ মিথুন। ঢাকার ইনিংসে যা একটু মান বাঁচিয়েছে তা হল অধিনায়ক নাসিরের ইনিংস। ৩১ বলে খেলেছেন ৩৯ রানের ইনিংস। সাথে আরিফুল হকও ২০ রানের ছোট্ট একটি ইনিংস খেলেছেন। তাতে কোনোমতে ১২৮ রানের একটি সংগ্রহের দেখা পায় ঢাকা। বল হাতে এ দিন একাই ঢাকাকে চেপে ধরেছিলেন ইমাদ ওয়াসিম। ২০ রান খরচায় নেন ৩টি উইকেট।

১২৯ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বেশ ভালই শুরু করেছিল সিলেটের দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত আর মোহাম্মদ হারিস। শুরু থেকেই বোলারদের উপর চড়াও হয়েছিলেন হারিস। ৩২ বলে ৪৪ রানের ইনিংস সাজিয়েছেন  ৫ চার ও ২ ছক্কায়।  অপর প্রান্তে রয়েসয়ে খেলে উইকেট আগলে রাখছিলেন শান্ত। দু’জনের এ জুটি থেকে আসে ৫২ রান।

শান্ত আর হারিস যখন ক্রিজে ছিলেন তখন সিলেটের জন্য জয়ের পথটা সহজই মনে হচ্ছিল। কিন্তু তাদের জন্য হিসেব কিছুটা জটিল করে দেন নাসির। ব্যাট হাতে ৩৯ রানের ইনিংস খেলার পর বল হাতে নিয়ে প্রথম ওভারেই তুলে নেন হারিস আর শান্তর উইকেট। এ দিন তিনে নেমে ইনফর্ম জাকির হোসেনও তেমন ব্যাটে সুবিধা করতে পারেননি। আরাফাত সানির বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন শূন্য রানে। ৭ বলের মাঝে ৩ উইকেট হারিয়ে তাই কিছুটা চাপেই পড়ে যায় সিলেট।

তবে উইকেটে টিকে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। ইমাদ ওয়াসিমকে নিয়ে ৩২ রানের জুটি গড়ে চাপ কমান। তবে রান আউটের কবলে পড়ে ইমাদ ওয়াসিম ফিরে গেলে আবারও কিছুটা চাপে পড়ে যায় সিলেট। সেই চাপ আরও বেড়ে যায় যখন মুশফিক  তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। শেষ দুই ওভারে ২০ রানের সমীকরণে ম্যাচটা প্রায় হাত থেকে তখন ফসকেই যাচ্ছিল সিলেটের।

তবে তেমনটা আর হয়নি। সিলেটকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন থিসারা পেরেরা। উনিশতম ওভারে তাঁর দুই চার আর আকবর আলীর স্কুপ করে মারা দুর্দান্ত এক ছক্কায় ম্যাচ জয়ের একদম কাছে পৌঁছে যায় সিলেট। থিসারা পেরেরা ম্যাচটি শেষ করেন দুর্দান্ত এক ছক্কা দিয়ে। আর তাতে ৪ বল হাতে রেখে ম্যাচটি জিতে নেয় মাশরাফির দল।

এ জয়ে ৫ ম্যাচের ৫ জয়ে যথারীতি পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই থাকল সিলেট স্ট্রাইকার্স। আর জয় দিয়ে এবারের বিপিএল শুরু করলেও টানা তিন হারের মুখ দেখলো ঢাকা ডমিনেটর্স।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link