তিনি বারবার সবুজ সংকেত দিয়ে যাচ্ছেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের এই সবুজ সংকেতের অর্থ, তাঁকে এখন চাইলেই ছুড়ে ফেলা যায়। যে অভিজ্ঞতা প্রয়োজনের সময় কোনো কাজে আসে না, সেই অভিজ্ঞতার দোহাই আর কতদিন দেবে বাংলাদেশ দল?
ব্যাটিং অর্ডারে তাঁকে লুকিয়ে রাখা যায় না। ফিল্ডিংয়ে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেও লাভ হয় না। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও তিনি ফিল্ডিংয়ে যথারীতি শিশুতোষ এক ভুল করেছেন, যার মাশুল গুণে চার হজম করতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে।
থার্ডম্যানে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিংয়ে তিনি বলের গতিবিধি বুঝতে অনেক সময় পেয়েছিলেন। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ অবধি। হাত ও পায়ের ফাঁক গলে বল বাউন্ডারির বাইরে চলে গেছে। রিয়াদ আর পারছেন না, তাকে দিয়ে আর হচ্ছে না – খুবই সহজ এই হিসাবটা বাংলাদেশ দল বুঝেও না বোঝার ভান করছে।
একালের ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর টিকতে পারছেন না। ব্যাটিংয়েও ইদানিংকালের মত ছিলেন নিষ্প্রভ। ‘ফিনিশার’ তকমা নিয়ে যখন তিনি আউট হয়ে গেছেন, তখন দলকে রেখে গেছেন খাঁদের কিনারায়। আসলে তাতে, আখেরে দলের বিপদ বেড়েছে না লাভ হয়েছে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ।
কারণ, রিয়াদ ছয় নম্বর ব্যাটার হিসেবে ৪১ তম ওভারে আউট হয়ে ফিরে না গেলে হয়তো নাসুম আহমেদের পক্ষে ২৪ বলে ২৫ রানের ইনিংসটা খেলা সম্ভবই হত না। হ্যাঁ, একাদশে এতটাই ‘ভালনারেবল’ অবস্থানে আছেন তিনি। ব্যাটিংয়ে নিয়মিত নন, এমন বোলাররা ব্যাটিংয়ে নামলেও রিয়াদের চেয়ে বেশি ভরসা যোগাতে পারেন।
মানে, বিষয়টা এমন যে রিয়াদ ওই সময় টিকে গেলে বাংলাদেশ দল ২৫২ অবধি যেতে পারত না। এই যদি হয় ফিনিশারের হাল, তাহলে তাঁকে অকারণে টেনে বেড়ানোর কারণ কি? অভিজ্ঞতার জোর অবশ্যই জরুরী, সেটা হওয়া দরকার কার্যকর, ইমপ্যাক্টফুল। সেটা না হলে রিয়াদকে এই মুহূর্তে দল থেকে বাদ দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
শেষ চার ওয়ানডেতে তিনি রান করেছেন মাত্র যথাক্রমে ০, ১, ২ ও ৩। এভাবে অপেক্ষা করতে করতে হয়তো কোনো একদিন তিনি একটা ফিফটি করবেন, কোনোদিন হয়তো বিশ্বকাপের সেই ম্যাচের মত অর্থহীন একটা সেঞ্চুরিও পেয়ে যেতে পারেন। কিন্তু, সেটা ইমপ্যাক্টফুল হচ্ছে কি না, দলের কাজে আসছে কি না সেটা খতিয়ে দেখাটা জরুরী। দলের কাজে লাগে না, এমন খেলোয়াড়কে দলে রাখার কোনো অর্থই হয় না।