নির্জীব ব্যাটিং আর নির্বিষ বোলিং- এই দুইয়ের মিশেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট যেন চোখের বালি, অন্তরের বিষ। ঢাল নেই তলোয়ার নেই চলমান যুদ্ধে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যেন তেমনই এক বাহিনী। লজ্জার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েও একেবারে ভাবলেশহীন থাকার ঐশ্বরিক শক্তিতে বলীয়ান গোটা দল, ডাকনাম যে টাইগার! বিড়াল-সুলভ পারফরম্যান্সের সাথে কি বেমানান এক তকমা! দেখতে এক হলেই কি টাইগার হওয়া যায়!
আরব আমিরাতের কাছে ২-১ এ সিরিজ পরাজয়। তারপর পাকিস্তানের মাটিতে ধবলধোলাই। সমর্থকদের মনে তিক্ততা ছড়াতে নেই কোন কার্পণ্য। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এ যেন পুরনো দিনের সেই ‘ক্যাসেট’- একই গান বাজে সারাদিন।
তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন অবশ্য ভাল শুরুই দিয়েছিলেন। ১১০ রানের জুটি। মন্দ নয় মোটেও। কিন্তু এরপর আর কেউ যেন সাহস করে হালই ধরতে চাইল না, কিংবা দলের ভার বয়ে বেড়ানোর মত বলিষ্ঠ কাঁধই নেই। ১৫ ওভার শেষে ১৫০ রান করা দলটা শেষ পাঁচ ওভারে তুলেছে মাত্র ৪৬ রান।
আধুনিক টি-টোয়েন্টিতে এমন ঘটনাকে রীতিমত অন্যায়ের সাথে তুলনা করা হয়। ভক্তদের সাথে অবশ্য এমন অন্যায় করে অভ্যস্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। তবে এবার যেন নিজেদের সাথেও অন্যায় করা শুরু করেছেন। বিবেক বিসর্জন দিয়ে, যাচ্ছে দিন, চলছে ঘর- তাতেই বরং খুশি সকলে।
ব্যাটারদের বেহাল দশার মাঝেও এক রত্তি স্বস্তি বয়ে যেত বোলারদের কল্যাণে। কিন্তু তারাও যেন ধর্মঘটের ডাক দিলেন। তারাও বাড়তি কষ্ট করতে নারাজ। তাইতো ১৯৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা পাকিস্তান টপকে যায় ১৬ বল আর সাত উইকেট হাতে রেখে। ঠিক কতটা অসাড় বোলিং হলে এমনটা হয়! বোলিংটা এমন যে, সেই সেখানে ২০০-এর কম স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করাটাও অন্যায়!
বিকল্পের অভাব, ব্যাটিং সহায়ক উইকেট মস্তিষ্কের ব্যবহারেও অপরাগতা। সবমিলিয়ে বিষাদের ঘনঘটা। বাংলাদেশ দল যেন বড্ড ক্লান্ত। সহস্র ক্রোশ হেঁটে হেঁটে মরু পাড়ি দেওয়া এক যাযাবর দল। কোথায় যাবে, কি তাদের উদ্দেশ্য-সে বিষয়েও তাদের ধারণা অস্পষ্ট। মরীচিকার পানে স্রেফ হেঁটে যাওয়াই কাজ, বিনিময়ে পয়সা কড়ি মিলছে তো!