ম্যাচের আগের দিন উইকেটের ছবি দেখে অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট যে কোনটা তা যেন বোঝারই উপায় নেই। পুরো মাঠটাই এক সবুজ গালিচা, ঘাসে ঢাকা। ফলে ভাবা হচ্ছিল সাগরিকায় বড় থ্রেট হতে পারেন পেসাররা। যদিও ইতিহাস বলে চট্টগ্রাম মানেই স্পোর্টিং উইকেট।
স্বাভাবিক ভাবেই উইকেটের ঘাস অনেকটা কেটে ফেলা হয়েছে ম্যাচের আগে। তারপরও সাগরিকায় যে এতটা ভয়ংকর হয়ে উঠবেন ঈশান কিষান – তা কে জানতো। ভারত আগে ব্যাট করতে নেমে রীতিমত ঝড় তুললো। রেকর্ড বইয়ের পাতা এলোমেলো করে দিলেন ঈশান।
ওয়ানডে ইতিহাসের দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরি আসলো তাঁর ব্যাট থেকে। ১৩১ বল খেলে করেছেন ২১০ রান। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই এই কীর্তি করে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ ডাবল সেঞ্চুরিয়ানও তিনি। অথচ আজকের আগে দুটি রেকর্ডই ছিল তারই অধিনায়ক রোহিত শর্মার দখলে।
একদিক থেকে তাণ্ডব চালিয়েছেন ইশান। আরেকদিক থেকে তাঁকে সঙ্গ দিয়ে গিয়েছেন বিরাট কোহলি। এই ব্যাটারও দেখা পেয়েছেন আরেকটা সেঞ্চুরির, ওয়ানডেতে প্রায় সাড়ে তিন বছর পর তিন অংকের ম্যাজিকাল ফিগারে পৌঁছালেন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার।
৯১ বল খেলা কোহলির ব্যাট থেকে এসেছে ১১৩ রান। সবমিলিয়ে এই দুজন বাংলাদেশের বোলারদের কঠিন পরীক্ষাই নিয়েছেন। সবশেষে ভারতের স্কোর দাঁড়িয়েছে ৪০৯ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটে এই প্রথম বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪০০ রান করলো কোন দল।
এমন টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে জয়ের দেখা পাওয়া কঠিন। বলা যায় প্রায় অসম্ভবই। তবুও ওপেন করতে নেমে অধিনায়ক লিটন দাস যতক্ষণ খেলেছেন জয়ের জন্যই খেলেছেন। ধীরে সুস্থে খেললে হয়তো নিজের ইনিংসটা বড় করতে পারতেন। তবে তিনি মাঠে নেমেছিলেন জিততে চাওয়ার মানসিকতা নিয়ে। একই মেজাজে ব্যাটিং করেছেন সাকিব আল হাসানও। তবে ৪১০ রানের টার্গেট বাংলাদেশের জন্য অসম্ভবই ছিল বলা যায়।
ফলে, অসম্ভব লক্ষ্যে একটা সময় তাসের ঘরের মতই ভেঙে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। অল আউট হওয়ার আগে বাংলাদেশ করে ১৮২ রান। হারে ২২৭ রানের বিশাল ব্যবধানে। শেষ উইকেটে মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের ৩৩ রানের জুটি ক্ষণিকের উত্তেজনা বাড়িয়েছে কেবল।