আগুনে সময়

লড়াইটা ছিলো ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিন আর পাকিস্তানের শাহীন শাহ আফ্রিদির মধ্যে। বর্ষসেরা বোলার হওয়ার জন্য পরস্পরের কাঁধে নিশ্বাস ফেলছিলেন দু জন। কিন্তু এর মাঝখান থেকেই আজ ৫ উইকেট নিয়ে লড়াইয়ে ঢুকে গেলেন হাসান আলী।

চলতে থাকা চট্টগ্রাম ও কানপুর টেস্টের দ্বিতীয় সেশন শেষ হওয়া পর্যন্ত অশ্বিন ও শাহীন আফ্রিদির উইকেট ৩৯টি করে। এই ম্যাচের আগেও হাসান আলী দু জনের চেয়ে বেশ পিছিয়ে ছিলেন; তার এই বছরে ছিলো ৩২ উইকেট। কিন্তু বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে এখন তার বছরে মোট উইকেট ৩৭টি। ফলে বাকী দু জনকে টপকে যাওয়া এখন তার পক্ষে খুব সম্ভব।

এ বছরটাকে টেস্ট বোলার হাসান আলীর দ্বিতীয় জীবন বলা যায়।

২০১৭ সালে আমরা টেস্টে যে হাসান আলীকে দেখেছিলেন, তিনি অনেকটাই অপরিণত ও অসফল ছিলেন। দু বছর চেষ্টা করার পরও সেভাবে টেস্টে দাগ কাটতে পারেননি। পরে দল থেকে বাদই পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালে নতুন করে ফিরে এসেছেন।

জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করাচি টেস্টে আবার মাঠে নামেন হাসান। দুই ইনিংসে একটা করে উইকেট পেয়েছিলেন। কিন্তু জমিয়ে রেখেছিলেন নিজেকে পরের টেস্টের জন্য। রাওয়ালপিন্ডিতে ওই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা দুই ইনিংসে ৫ উইকেট করে নিলেন।

এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা তিন ইনিংসে ৪, ৫ ও ৫ উইকেট! মানে, ফেরার পর এই তিন টেস্টের ৫ ইনিংসেই হাসান আলীর ২৪ উইকেট।

বুঝতেই পারেন, কেমন ভয়ঙ্কর ফর্মে আছেন এই বছরটায়।

সবমিলিয়ে ৫ বছরের ক্যারিয়ারে তার ৬ বার ৫ উইকেট আছে। এর মধ্যে ৫ বারই এই এক বছরে। সর্বশেষ কাজটা করলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। তাও আবার প্রতিকূল অবস্থা থেকে ফিরে এসে।

চট্টগ্রামে প্রথম দিনে বল হাতে তেমন কিছুই করতে পারছিলেন না। না পাচ্ছিলেন সুইং, না পাচ্ছিলেন গতি। একেবারে ম্যাড়মেড়ে বোলিং করে প্রথম দিনে একটি মাত্র উইকেট পেয়েছিলেন। সেই হাসান আজ সকাল থেকে ত্রাস হয়ে উঠলেন।

চিরচেনা গতি তো ছিলোই। সেই সাথে দু দিকে দারুন সুইং। সবচেয়ে ভয়ানক ছিলো একটা ওভারে ৫টা আউট সুইং বা সোজা বল করে হুট করে একটা ইনসুইং করা। আর এতেই আউট হয়েছেন বাংলাদেশের ৩ ব্যাটসম্যান।

এইরকম সুইং বৈচিত্র ধরে রাখতে পারলে অশ্বিন ও সতীর্থ আফ্রিদিকে টপকে যাওয়া খুব অসম্ভব হবে বলে মনে হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link