চান্দিকা হাতুরুসিংহে, যত গর্জে তত বর্ষে না

সর্বপ্রথম ২০১৪ সালে বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্ব পান শ্রীলঙ্কান চান্ডিকা হাতুরুসিংহে। সেসময় বাংলাদেশের কোচের ভূমিকায় বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন চান্ডিকা। নিজের কঠোরতার জন্য বেশ পরিচিতি পান এই কোচ। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্ব থেকে সড়ে দাঁড়ানোর পর ২০২৩ সালে আবারও দলের দায়িত্ব পান তিনি।

দ্বিতীয় মেয়াদে কোচের পদে ফিরেই টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যাবধানে হারায় হাতুরুর অধীনে থাকা বাংলাদেশ। যদিও ঘরের মাঠে ইংলিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারতে হয় বাংলাদেশকে। একই রকম ফলাফল আসে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজেও। টি-টোয়েন্টিতে ২-০ ব্যবধানে জিতলেও ওয়ানডে সিরিজ হারতে হয় তাঁদের।

দ্বিতীয় মেয়াদে হাতুরুসিংহের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের আগে দল গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিল তাঁর। তবে ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তানের সাথে ওয়ানডে সিরিজই হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। অবশ্য ২০২৩ সালের এশিয়া কাপে ভারতকে হারালেও দলকে ফাইনালে তুলতে ব্যর্থ হন হাতুরুসিংহে।

বিশ্বকাপের আগে নিজেদের শেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে হারতে হয় বাংলাদেশকে। এমনকি মেগা ইভেন্টের আগেই উদ্বোধনী ব্যাটার তামিম ইকবালের হঠাৎ অবসরেও হাতুরুর সংশ্লিষ্টতা আছে বলে গুঞ্জন উঠেছিল।

নানা ধরণের সমালোচনার মধ্যেই গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে যায় হাতুরুর অধীনে থাকা বাংলাদেশ দল। যদিও রাউন্ড রবিন ফরম্যাটে খেলা বিশ্বকাপে কেবল ২ টি ম্যাচই জিততে পারে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জয় দিয়ে শুরু করলেও বাকি ৮ ম্যাচে মাত্র একটি জয় পায় বাংলাদেশ।

হাতুরুর দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ ওয়ানডে ফরম্যাটে খারাপ খেললেও টি-টোয়েন্টিতে ভাল করতে থাকে। তাই আশা ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরে ভাল কিছু করার। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে উঠলেও দলের এপ্রোচ নিয়ে নানা ধরণের প্রশ্ন উঠেছিল। বিশেষ করে সুপার এইটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ  ম্যাচটি নিয়ে। সুপার এইটে তিনটি ম্যাচই হারতে হয়েছিল তাঁদের।

হাতুরুর অধীনে প্রথম মেয়াদে দারুণ সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে শুরু করে ২০১৭ চাম্পিয়ান্স লিগের সেমিফাইনাল খেলা, তাঁর অধীনেই সম্ভব হয়েছে।

এছাড়াও ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয় তো আছেই। তবে নিজের দ্বিতীয় মেয়াদে দলকে বিশেষ প্রভাবিত করতে পারেননি শ্রীলঙ্কান এই কোচ। তাই, এবেলায় আর মেয়াদ না বাড়লে তাঁকে খালি হাতেই ছাড়তে হবে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link